সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জের হাওর পাড়ের বন্যা কবলিত জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, ধর্মপাশা, দিরাই-শাল্লাসহ সহ সব ক’টি এলাকার প্রত্যন্ত গ্রামের বানভাসি পরিবারগুলোতে এবার ঈদের আনন্দ নেই। বিগত বছরগুলোতে ঈদ আসার সপ্তাহ দশ দিন পূর্বেই ঘরে ঘরে জানান দিতো খুশির বারতা। এবার দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কারণে অসংখ্য মানুষ ঘর-বাড়ি ছাড়ে এখনো বিভিন্ন আশ্রয় কেন্ত্রে অবস্থান করায় হাওরপাড়ের মানুষের ঈদরে আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে।
সরকারী উদ্যোগে যে পরিমান ত্রাণ বিতরন করা হচ্ছে তা তুলনামুলকভাবে একেবারেই কম বলে জানিয়েছেন বানভাসিরা। তবে বানভাসিদের বিভিন্ন এনজিও সংস্থা, সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে অনেকেই ত্রাণ বিতরণ অব্যহত রেখেছেন।
বন্যা কবলিত অনেক পরিবারের ঘর-বাড়ি ভেঙ্গে যাওয়ার কারনে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বন্যায় রোপা আমন ধানসহ, মৎস্য খামারিদের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির কারনে তারা যেন চোখে অন্ধকার দেখছেন। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের চিন্তিত হাওরবাসী। সারা বছর হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে গোলা ঘরে ধান ভর্তি করে প্রতি বছর যারা ঈদের আনন্দে মেতে উঠতেন, বন্যায় তাদের বাড়ি-ঘরে পানি উঠার কারনে অন্যান্য বছরের মতো এবার তাদের পরিবার গুলোতে ঈদের আনন্দ নেই। বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে গেল রমজানের ঈদ কোন রকম কাটালেও চলতি কুরবানীর ঈদে অনেকেই ছেলে মেয়ে ও পরিবার পরিজনকে নতুন জামা কাপড় কিনে দিতে পারছেন না।
সুনামগঞ্জে গত ১৫ জুন প্রথম দফা বন্যা এবং গত ১০ জুলাই দ্বিতীয় দফায় বন্যা দেখা দেয়। ওই দুই দফা বন্যার দুর্ভোগ কাটতে না কাটতেই তৃতীয় দফা বন্যায় কবলে পড়লো সুরামগঞ্জ জেলাবাসী।
সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় মানুষের বাড়ি-ঘর ও রাস্তা থেকে বন্যার পানি এখনো পরোপুরি নামেনি। তৃতীয় দফা বন্যায় মানুষের ঘর-বাড়ির, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগী, গাছপালা, চাষ করা কোটি কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে বানের জলে। হাজারো মানুষ তাদের ঘর-বাড়ি ছেড়ে এখনো বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। গত কয়েক দিনে সুনামগঞ্জের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও হাওর জনপদে দক্ষিণা বাতাসে ঢেউয়ের কারণে ঘরবাড়ি নিয়ে শংকিত থাকেন হাওরবাসী। জেলার সব নদ-নদীর পানি ধীরে কমলেও হাওরে পানি রয়েছে স্থিতিশীল।