মুহাম্মদ আরাফাত:: ৩৬০ আউলিয়ার স্মৃতি বিজড়িত দুটি পাতা একটি কুড়ির দেশ সিলেট। প্রাকৃতিক সৌন্দের্য্যের লীলাভূমি সিলেটের অন্যতম স্থান ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা। বলতে গেলে উক্ত উপজেলাটি শিল্পনগরীও বটে। সৌন্দের্য্যের লীলা নিকেতন ও পর্যটকদের আর্কষক চা বাগান, বিদুৎ কেন্দ্র, সার কারখানাসহ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। তারই সুবাদে জ্ঞানের আলো ছড়াতে চা বাগান বেষ্টিত, বৃক্ষরাজি শোভিত পাহাড়ি টিলায় অতি মনোরম পরিবেশে অবস্থিত প্রাচীন বিদ্যাপীঠ ফেঞ্চুগঞ্জ সরকারি কলেজ। ১৯৭০ সালের ১লা জুলাই কোনো এক সোনাঝরা মুহুর্তে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলাধীন এলাকার জনসাধারণের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের যাত্রা শুরু হয়। স্থানীয় লোকজনের ইচ্ছা, স্বপ্ন ও উদ্দীপনাকে বিবেচনা করে এলাকার সন্তানদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৭৩সালের ১লা জুলাই হতে কলেজটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ ডিগ্রি কলেজে রূপান্তরিত হয়। তখন থেকেই ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার একমাত্র সবোর্চ্চ বিদ্যাপীঠ হিসেবে খ্যাতি লাভ করে। এলাকার স্বনামধণ্য ব্যাক্তিবর্গ ও প্রবাসীদের সহযোগীতায় কলেজটি দ্রæত এগিয়ে যায়। বেড়েছে শিক্ষার মান। দক্ষ, মেধাবী ও যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগের ফলে শিক্ষার কাঠামো আরো উন্নতি লাভ করে। এই প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শিক্ষার্থীরা সাফল্যের সাথে কৃতৃত্ব অর্জন করছে। দেশ ও আর্ত-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত আছে। এই কলেজ থেকে অনেক শিক্ষার্থীরা উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষায় উর্ত্তীণ হয়ে যুক্তরাজ্য সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছে। যা দেশের সুনাম বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে। কলেজের উন্নয়নের লক্ষ্যে অধ্যয়নরত সকল শিক্ষার্থী দল-মত নির্বিশেষে একত্রে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। ২০০৯সালে সিলেট-৩ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী কলেজের গর্ভনিং বডির সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর কলেজের উন্নয়ন আরো বেগবান হয়। তাহার প্রচেষ্টায় তৎকালিন কলেজ অধ্যক্ষ ভাস্কর রঞ্জন দাসের সহযোগিতায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চার বছর মেয়াদী ¯œাতক (সম্মান) কোর্স চালু হয়। সর্বপ্রথম হিসাব বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ¯œাতক (সম্মান) কোর্স চালু হয়। পরবর্তীতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতি বিষয়ে ¯œাতক (সম্মান) কোর্স চালু হয়। উপরি উক্ত বিষয়ে অনেক শিক্ষাথীরা অধ্যয়ন করছে। অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফেঞ্চুগঞ্জ ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলার শির্ক্ষাথী রয়েছে। কলেজটি সরকারি করণে জিও জারী হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী কলেজের গর্ভণিং বডির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন যে, সরকারি কলেজবিহীন উপজেলা সমূহে একটি করে কলেজ সরকারি করণ করবেন। সেই অনুযায়ী ২০১৬সালের ৩০ শে জুন তারিখে কলেজটি সরকারিকরণের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৮সালে ৮ই আগষ্ট তারিখে কলেজটি সরকারি করণ করে জিও প্রকাশ করা হয়। শিক্ষার্থীরা ফলাফল অর্জনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সুনাম বৃদ্ধি করছে। শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা, সাহিত্য সংস্কৃতি, ইত্যাদি সহ শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছে। নিরিবিলি মনোরম পরিবেশের কলেজটিতে শিক্ষক কর্মচারী ৪০-৫০জন এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩হাজার। মনোমূগদ্ধকর পরিবেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশে অগ্রযাত্রার নজির স্থাপন করছে।
লেখক:
মুহাম্মদ আরাফাত
প্রাক্তন শিক্ষার্থী
১৪-১৫সেশন