করোনা ভাইরাস মহামারি বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি করেছে। ইতোমধ্যে মন্দায় পড়েছে জাপান। ২০২০ সালের প্রথম তিন মাসে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম এ অর্থনীতি ৩ দশমিক ৪ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছে। ২০১৫ সালের পর প্রথম মন্দায় পড়লো জাপান।
সোমবার (১৮ মে) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানায়।
এর আগে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) জানিয়েছিল, করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৮ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত।
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে অধিকাংশ দেশের অর্থনীতি সঙ্কোচনের শিকার হয়েছে। লকডাউনের প্রভাবে গত সপ্তাহে মন্দায় পড়েছে জার্মানি।
পূর্ণ লকডাউনে না গেলেও এপ্রিলে জরুরি অবস্থা জারি করে জাপান। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য, পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা ইত্যাদির ওপর খুব খারাপ প্রভাব পড়ে।
২০২০ সালের প্রথম তিন মাসে জাপানের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কমেছে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০১৯ সালের শেষ তিন মাসে জিডিপি কমেছিল ৬ দশমিক ৪ শতাংশ।
করোনা ভাইরাসের প্রভাব তো আছেই। এছাড়া, অক্টোবর মাসে বিক্রয় কর ৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ১০ শতাংশ হয়েছে। দুয়ে মিলে গত বছরের শেষেই মন্দা শুরু হয় জাপানে।
সংক্রমণ কমে আসায় ইতোমধ্যে দেশটির ৪৭টি প্রশাসনিক এলাকার ৩৯টি থেকে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তারপরও চলতি প্রান্তিকে অর্থনীতির আরও অবনতি হতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে জাপানের অর্থনীতি আরও ২২ শতাংশ সঙ্কুচিত হতে পারে, যা রেকর্ড সর্বাধিক সঙ্কোচন হতে যাচ্ছে।
ইতোমধ্যে জাপান সরকার এক ট্রিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজের ঘোষণা দিয়েছে।
কয়েক দশক ধরেই কিছুটা থমকে আছে জাপানের অর্থনীতি। ফলে মন্দা কাটিয়ে ওঠা একটু কঠিন হবে দেশটির জন্য। রপ্তানি আয়ের ওপর প্রবলভাবে নির্ভরশীল জাপান কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে পণ্যের চাহিদা কমে গেছে। টয়োটা, হোন্ডার মতো গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানসহ বড় বড় অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিক্রি কমে গেছে। মহামারি দেশটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত পর্যটনেও ধস নামিয়েছে।
শুধু জাপান নয়, চলতি প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সঙ্কুচিত হতে পারে ২৫ শতাংশেরও বেশি। প্রথম তিন মাসেই দেশটি ৪ দশমিক ৮ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছে। ১৯৩০ সালের মহামন্দার পর প্রথম এতটা কমলো বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি।
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের জিডিপি কমেছে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। তবে এখনো মন্দার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি দেশ দু’টি। পর পর দুই প্রান্তিকে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হলে একটি দেশ মন্দায় পড়েছে বলা যায়।