সিলেট :: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় আমফান আরও শক্তিশালী হয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। আগামী ছয় ঘণ্টায় এই ঘূর্ণিঝড়টি আরও শক্তিশালী ঝড়ে পরিণত হবে। এদিকে, ভয়ঙ্কর এই ঘূর্ণিঝড়টি সিলেটে খুব প্রভাব ফেলবে না বলে সিলেট আবহাওয়া অফিস সূত্র জানিয়েছে। তবে ‘আমফান’র কারণে সিলেটে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত ও হালকা ঝড়োহাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এ বিষয়ে সিলেটের আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী আজ সোমবার দুপুরে বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’র এখন পর্যন্ত যে গতিবিধি আছে সেটা পর্যবেক্ষণ করে বলা যায়- সিলেটে খুব একটা প্রভাব ফেলবে না সেটি। তবে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হালকা ঝড়োহাওয়া বয়ে যেতে পারে সিলেট অঞ্চলের উপর দিয়ে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া দফতর বলছে, ‘আমফান’র কারণে সিলেটসহ দেশের ২০ জেলার ওপর দিয়ে ঝড়-বৃষ্টি বয়ে যেতে পারে। এসব অঞ্চলের নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সিলেট, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্রগ্রাম, কক্সবাজার অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সর্তকতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, এ সিলেটসহ এ অঞ্চলগুলোর আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে অস্থায়ীভাবে মেঘলা থাকতে পারে। হালকা বৃষ্টি হতে পারে। দক্ষিণ-পশ্চিম বা দক্ষিণ দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে দিনের তাপমাত্রা।
উল্লেখ্য, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ (১৮ মে) সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে ১৯ মে (মঙ্গলবার) শেষরাত থেকে ২০ মে (বুধবার) বিকেল অথবা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।