দক্ষিণ সুরমা উপজেলার দাউদপুরে হিন্দু পরিবারের ঘর ভেঙে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘগনাটি ঘটেছে গত ৩ মে মোগলাবাজার থানাধিন দাউদপুর ইউনিয়নের পশ্চিম দাউদপুর গ্রামে।
এ ঘটনায় পশ্চিম দাউদপুর গ্রামের বীরন্দ পালের ছেলে নিরেঞ্জন পাল বাদী হয়ে মোগলাবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ৪। তাং-০৫/০৫/২০২০ ইং। মামলায় ১৬ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার আসামীরা হচ্ছেন পশ্চিম দাউদপুর গ্রামের সতেন্দ্র চন্দের ছেলে শিপুল চন্দ্র (২৮), সুজন চন্দ (২৫), মৃত গদইরাম চন্দের ছেলে সতেন্দ্র চন্দ (৬০), জিতু চন্দ (৫০), মৃত ধীরেন্দ্র চন্দের ছেলে সুভাস চন্দ (২৮) বিভাস চন্দ (২০), নেছার আলীর ছেলে গিয়াস উদ্দিন (৪০), এনাম উদ্দিন (২৫), আকু মিয়ার ছেলে হেলাল উদ্দিন (২৬), মৃত তখই আলীর ছেলে মুতুর মিয়া (৪৮), মৃত আখদ্দছ আলীর ছেলে বারী মিয়া (৪৫), মৃত কুদরত আলীর ছেলে মোবারক আলী (৫০), মৃত মনোহর আলীর ছেলে রাহিমুল ইসলাম লিহিন (২৮), বিজেন্দ্র দাসের ছেলে রাজিব দাস (২৮), রিপন দাস (৪০), দাউদপুর পূর্ব পাড়ার মৃত মনাই মিয়ার ছেলে আলী আহমদ (৩৫)। এছাড়াও মামলায় অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, নিরঞ্জন পাল ও তার শরিকগণ উত্তরাধিকার সূত্রে দাউদপুর মৌজার জিএস খতিয়ান ১৪৩৬, দাগ নং ৩৪৯০/৩৪৪৬ এর রেকর্ডকৃত যায়গা ভোগ দখল করে আসছেন। গত কয়েকদিন যাপত তার দক্ষিণের পার্শ্ববর্তী বাড়ির ১-৬ নং আসামিগণ নিরেঞ্জন পালের বাড়ির পূর্ব সিমানা দিয়ে জোর পূর্বক চলাচলের রাস্তা তৈরি করেতে তাদেরকে হুমকি দিয়ে আসছিল।এ বিষয় নিয়ে এলাকার মুরব্বিয়ানগণ বিভিন্ন সময় সালিশ করলে নিরঞ্জন বাড়ির ভিতর দিয়ে রাস্তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
গত ৫ এপ্রিল এ বিষয়ে নিরঞ্জনের ভাতিজা সুইট পাল বিবাদী শিপুল চন্দ গংদের বিরুদ্ধে জোর পূর্বক রাস্তা তৈরি করার বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগ দায়েরের পর বিবাদীরা নিরঞ্জনকে হুমকি দেয়।
গত ৩ মে আসামিগণ মামলার বাদীকে ঘর হতে বের হতে বলেন। এসময় তিনি ভয় পেয়ে প্রাণ রক্ষায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯- এ ফোন দেন। এরপর ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। তখন বিবাদীরা ও তাদের লোকজন পুলিশকে কোন জামেলা এখানে হয়নি বলে বিদায় করে দেয়।এরপর দুপুর দেড়টায় বিবাদীরা আবারও বাদীর ভূমিতে জোরপূর্বক এসে তান্ডব চালায়। এতে নিরঞ্জনের পরিবারের কয়েকজন তাদের হামলায় আহত হন। বিবাদীরা শুধু মারপিট করে ক্লান্ত হয়নি, তারা নিরঞ্জনের দু’চালা টিনের ঘর ভাংচুর করে এবং বিভিন্ন প্রজাতীর ১৫টি গাছ কেটে ফেলে। এতে নিরঞ্জনের ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়। শিপুল গংদের হামলার সময় বাদীর পরিবারের সবাই বাধা দিলে তারা নিরঞ্জনের বসত ঘরে দরজা ভেংগে ঘরে প্রবেশ করে বাদীর ভাবীদের ও নার্সিং পড়ুয়া ভাতিজীকে প্রহার করে এবং ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে। এসময় আসামিগণ বাদীর পরিবারের সদস্যদের ঘরের মধ্যে বন্দী করে আগুন দিয়ে জালিয়ে মারার হুমকি দেয়।
এসময় মামলার বাদী নিরঞ্জন পাল জাতীয় জরুরি ৯৯৯ ফোন করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
যেকোন সময় মামলার আসামীরা নিরঞ্জন পাল ও তার পরিবারের লোকদের ক্ষতি সাধন বা প্রাণে মারতে পারে। এমতাবস্থায় বিবাদীরা আসামিদের হত্যার হুমকিতে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।
আলাপকালে মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আক্তার হোসেন মামলার সত্যতা স্বীকার করে জানান তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।