নিজস্ব প্রতিবেদক:: মহামারী করোনা ভাইরাস এর সংক্রমণ এড়াতে গত ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় জনজীবন বিপর্যস্ত। দেশের অধিকাংশ জেলা-উপজেলা এখন লকডাউনের আওতায়। নিম্ন আয়ের মানুষেরা রয়েছেন দুবেলা-দুমুঠো সাহায্যের অপেক্ষায়। সমাজের কম সৌভাগ্যবান নাগরিকগণ জনপ্রতিনিধিদের সাহায্যের অপেক্ষায় আশা করে আছেন। প্রায় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে এবং আত্মরক্ষার্থে নিজ ঘরে অবস্থান করছেন।
বেশির ভাগ জনপ্রতিনিধি যখন হোম কোরাইন্টাইনে নিজেদের আত্মরক্ষায় ব্যস্ত। অনেক জনপ্রতিনিধির আনাগোনা দেখা গেলেও তারা খোঁজ রাখছেন না অসহায় জনগনের। অনেকেতো জনগনের জন্য দেয়া সরকারি ত্রাণ লুটপাটেও কুন্ঠা বোধ করছেন না। যা সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সুবাধে আমরা সবাই অবগত।
এতসব হতাশার মাঝেও জনগনের আশার আলো হয়ে পাশে আছেন দক্ষিণ সুরমা উপজেলার ০৬ নং লালাবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পীর মো. ফয়জুল হক ইকবাল। এই প্রতিকূল অবস্থাতেও থেমে নেই তিনি, জনগনের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন সকাল থেকে রাত অবধি।
কেবলমাত্র সরকারি ত্রাণ সাহায্যের অপেক্ষায় না থেকে, ব্যক্তিগত ও পারিবারিকভাবে এবং প্রবাসি কমিউনিটির ব্যক্তি ও সংগঠনের আর্থিক সহযোগিতায় বিভিন্ন সামগ্রী ও নগদ টাকা ত্রাণ বা সহযোগিতা হিসেবে লালাবাজার ইউনিয়নের মানুষকে গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দিয়েছেন পীর ইকবাল।
চেয়ারম্যান পীর মো. ফয়জুল হক ইকবাল বলেন, এপর্যন্ত সরকারি সব রকমের ত্রাণ সহায়তা স্থানীয় প্রতিনিধি ও বিশিষ্ট নাগরিকদের সাথে নিয়ে সঠিকভাবে বন্টনের চেষ্টা করেছি। অন্যান্য সময়ে সরকারি সাহায্যের জন্য শুধুমাত্র অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে চিহ্নিত করা হতো। বর্তমান পরিস্থিতে গাড়িচালক, শ্রমিক-দিনমজুর, ইমাম-মুয়াজ্জিন, প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষসহ বিশেষ করে মধ্যবিত্ত শ্রেণি সংকটে আছেন। আমরা দরিদ্র জনগোষ্ঠির পাশাপাশি তাদের কথাও মাথায় রেখে ত্রাণ সহায়তা দেয়ার চেষ্টা করছি।
তিনি আরও জানান, করোনা পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দিতে হবে কৃষি খাতে। আউশ উৎপাদনের লক্ষ্যে সরকারি ভাবে ইতোমধ্যে দুইধাপে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় লালাবাজারে ২১৫ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়। আরও ১৩০ জন কৃষকের মাঝে বীজ সহায়তা হিসেবে কৃষি বিভাগ লালাবাজারে উপশী আউশ বীজ বিতরণ করবে। চলমান মৌসুমে ১০০ জন কৃষক-কৃষাণিকে শাক-সব্জির বীজ দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছি যা পরবর্তী খাদ্য ঘাটতি মোকাবেলায় অবদান রাখবে আশা করি।
লালাবাজার ইউনিয়নের বিশিষ্ট নাগরিক বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম সন্দান মিয়া বলেন, আমাদের চেয়ারম্যান দিনরাত জনগনের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। আশপাশের ইউনিয়নের সাথে তুলনা করলে বলতে হয় আমরা অনেক ভালো আছি। যেকোনো সমস্যায় উনাকে কাছে পাচ্ছি। পীর ইকবাল চেয়ারম্যান থাকতে লালাবাজারে একজন লোকও না খেয়ে থাকবে না বলে আমার বিশ্বাস।
সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার জন্যও তিনি উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। জনগনকে সচেতন করার লক্ষ্যে নিয়মিত মাইকিং, ফেসবুকিং ও উঠোন বৈঠক করে প্রচারণা করে যাচ্ছেন।
প্রাণঘাতী করোনা তাকে দমাতে পারেনি বরং তার কর্মব্যস্ততা বাড়িয়েছে। করোনায় নিজের প্রাণনাশের আতঙ্ক থাকলেও জনগনের সুরক্ষায় মানবতার ফেরিওয়ালা এই চেয়ারম্যান ছুটে চলেছেন ২০ বর্গকিলোমিটারের লালাবাজার ইউপির আনাচে-কানাচে। তাইতো লালাবাজারের মাটি ও মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন ভাষা সৈনিক পীর হবিবুর রহমানের উত্তরসূরী পীর ফয়জুল হক ইকবাল।
উল্লেখ্য, পীর ফয়জুল হক ইকবাল ২০১৬ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে লালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।