সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক::করোনা ভাইরাস এর এই মহা দুর্যোগের সময় কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য দেওয়া এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের কারণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা জাহিদ মালেক এর পদত্যাগ দাবি করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমাজসেবক ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
ব্যারিস্টার সুমনের নিজস্ব ফেসবুক পেজে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, মাননীয় নেত্রী- আপনি জানেন যে গতকালকে আপনার সামনে স্বাস্থ্য সচিব এবং মহাপরিচালক দুইজন দুই রকম কথা বলেছেন। মাননীয় নেত্রী- আমি বারবার বলে আসছি; বর্তমানে যতগুলা মন্ত্রণালয় সবচেয়ে ব্যর্থ হয়েছে এর মধ্যে প্রথম মন্ত্রণালয় হলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
কেন হবে না মাননীয় নেত্রী, এমন একজন মন্ত্রী এটার স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসবে আছেন যিনি সর্বোচ্চ ব্যার্থ। আপনি মনে হয় দেখেছেন যে তিনি ৩০ জন লোক পিছনে নিয়ে করোনা ভাইরাসের ব্যাপারে আমাদেরকে সচেতন করতে গিয়েছিলেন।
আপনি জানেন যে, তাকে করোনাভাইরাস প্রতিরক্ষায় ন্যাশনাল কমিটির প্রধান করা হয়েছে এবং তিনি জনসমক্ষে সাংবাদিকদের সামনে বলেছেন উনি ন্যাশনাল কমিটির সভাপতি ঠিকই কিন্তু তিনি ‘জানেন না কোথায় কি হচ্ছে’। এধরনের কথা বলার পর মিনিস্ট্রিয়াল রেস্পন্সিবিলিটি অনুসারে ওনার পদত্যাগ করার কথা ছিল।
মাননীয় নেত্রী আপনি জানেন যে, উনি সেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী যনি গতবছর যখন ঢাকায় ৯০ হাজার লোক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল তখন তিনি থাইল্যান্ডের কোথাযও পরিবার নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন।
উদাহরণ টেনে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আমি শুধু একটা কথা বলি নিউজিল্যান্ডে লকডাউন থাকা অবস্থায় একজন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সী-বিচে তাঁর বাচ্চাদের নিয়ে গিয়েছিলেন যে কারণে তাকে পদত্যাগ পত্র দিতে হয়েছিলো। পরবর্তিতে তাকে অন্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে দেয়া হয়েছে।
মাননীয় নেত্রী আমি একটা কথা বলতে চাই, আপনি হয়তো ফেসবুকে দেখেছেন- মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছেলে এবং মাননীয় স্বাস্থ্য সচিব ও মহাপরিচালক মিলে একটা সিন্ডিকেটের কথা বলা হয়েছে। যারা ভয়ানক দুর্নীতির সাথে জড়িত। N-90 যে মাস্কের কথা বলা হয় এবং যে মাস্ক আমদানি করতে না পারার কারণে ডাক্তাররা হুমকির সম্মুখীন এ বিষয়ে এই সিন্ডিকেটের প্রতা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, মাননীয় নেত্রী কোন কথা বলবো আপনার কাছে। অনেকগুলা কথা আছে। তবে একটা কথা বলতে চাই আপনি কখন বুঝবেন সমাজ নষ্ট হয়ে গেছে। হযরত আলী রা. এর উদ্বৃতি টেনে সুমন বলেন, যখন দেখবেন বিভিন্ন মূর্খরা মন্ত্রী হয়ে গেছে এবং ধনীরা কৃপন হয়ে গেছে। তখন বুঝবেন আমরা কিয়ামতের দিকে রওনা দিচ্ছি।
মাননীয় নেত্রী আমি আপনাকে ধন্যবাদ জানাই, আপনি যেভাবে কষ্ট করে যাচ্ছেন একজন বা দু-একটা মন্ত্রণালয়ের জন্য ব্যার্থতার জন্য আপনাকে এত ভালো ভালো কাজ গুলা নষ্ট হয়ে যেতে পারে না। মাননীয় মন্ত্রী আমি বলছি না যে তাদেরকে বদলে অন্য আরেকজনকে দিলেই যে তাড়াতাড়ি দিনের ভিতরে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু এমন একটি ক্রাইসিস মুহূর্তে এমন একজন ব্যর্থ লোককে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রাখার কোন সুযোগ নেই।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি খোঁজ নিয়ে দেখুন এবং মানুষকে জিজ্ঞেস করেন যে, মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ব্যাপারে কোন ধরনের কনফিডেন্স আছে কিনা। দেখবেন বেশিরভাগ লোকই তার ব্যাপারে কোনো কনফিডেন্স প্রকাশ করবে না। তাই আজকে আমরা সুস্থ আছি এবং করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশ থেকে যারা বিদায় নিবে তারা এমন একজন মন্ত্রী দেখতে চায় না। আপনার চাইলে আপনি পরিবর্তন করে ফেলতে পারেন।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, প্রয়োজন হলে তাকে অন্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে দিয়ে দিন। যে মন্ত্রী ঠিকমতো ক্যামেরার সামনে হিসেবে বলতে পারে না যে এই পর্যন্ত কতজন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। তাকে কেন মন্ত্রনালয়ে রাখতে হবে। একই সাথে তিনি বলেন যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ঠিকমত পিপিই বলতে পারেনা বরং বলে পিপিপি এমন স্বাস্থ্যমন্ত্রী অবশ্যই স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় থাকা উচিত না। তিনি বলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রীর মাথায় পিপিই ‘পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট’ এই বিষয়টা নেই বরং তার মাথার মধ্যে আছে বিজনেস টার্মস পিপিপি অর্থাৎ ‘প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপ’। অর্থাৎ তার মাথার মধ্যে ব্যবসার চিন্তাই শুধুমাত্র রয়েছে! এমন একজন লোক অবশ্যই স্বাস্থ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারে না।
আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবারও করজোড়ে আবেদন করছি এমন একটি ক্রাইসিস মুহূর্তে এমন একজন লোককে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় না রেখে তাকে পরিবর্তন করে অন্য মন্ত্রণালয় দিয়ে দিন। একই সাথে ব্যারিস্টার সুমন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করেন এবং বলেন গণমানুষের চাহিদা অনুসারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে পরিবর্তন করার জোর আবেদন জানান।