সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক::করোনা ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে। এই মারণ ভাইরাস ঠেকানোর একমাত্র উপায় হলো সচেতন হওয়া। করোনা রুখতে সর্বত্র চলছে লকডাউন। কিন্তু তার মধ্যেও আমাদের দোকান, বাজার করতে বাড়ি থেকে বের হতেই হচ্ছে। প্রয়োজনে যেতে হচ্ছে ডাক্তারের চেম্বারে বা ওষুধের দোকানেও। বের হলেই হাতে ঘড়ি পড়া আর পকেটে মোবাইল ফোন সঙ্গে রাখাটা আমাদের বহু দিনের অভ্যাস হয়ে গেছে। হাতে আংটি না পরলেও আমাদের চলে না! আর যাদের চশমা না পড়লে এক মুহূর্তও চলে না, তাদের তো চশমা বাড়িতে খুলে রেখে বাড়ির বাইরে পা ফেলার উপায়ই নেই। ভয় জাগছে তাতেই। এগুলোর মাধ্যমেও ছড়াতে পারে করোনা।
ভাইরোলজিস্টদের মতে, মোবাইল হলো ‘হাই টাচ সারফেস’র অন্যতম উদাহরণ। ঠিকভাবে পরিষ্কার করা না হলে মোবাইল থেকেও করোনাভাইরাসের কমিউনিটি ট্র্যান্সমিশনের ঝুঁকি খুব বেশি। এই ব্যাপারে সকলের সচেতন হওয়া উচিত। বাজার দোকান অথবা কাজের শেষে বাড়ি ফিরে সোজা বাথরুমে গিয়ে পোশাক পরিবর্তন করে হাত-মুখ সাবান দিয়ে পরিষ্কার তো করতে হবেই। তা ছাড়া ফোন বন্ধ করে নরম কাপড়ে হাতশুদ্ধি বা কীটনাশক লোশন ভিজিয়ে তা দিয়ে ফোন পরিষ্কার করে নিতে হবে। স্যানিটাইজার দিয়ে মোবাইল মুছে নিয়ে অল্প সময় রোদে রেখে আসতে পারেন।
ভারতের অন্যতম চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস জানাচ্ছেন, বাইরে থেকে বাড়িতে ফিরে দু’টি হাত খুব ভালোভাবে ধুয়ে নেওয়ার পাশাপাশি চশমা, মোবাইল ফোনও খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। পানি ও লোশন দিয়ে। একইভাবে স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে চশমার খাপ, মানিব্যাগ, বেল্টও। ভালো স্যানিটাইজারে বা হাতশুদ্ধিতে থাকে ইথাইল অ্যালকোহল। শুকনো কাপড়ে স্যানিটাইজার লাগিয়ে সেই কাপড় দিয়ে চশমার ডাঁটি, ফ্রেম, চশমার খাপ, মোবাইল ফোন, তার কভার, মানিব্যাগ, বেল্ট খুব ভালোভাবে মুছে নিতে হবে। না হলে, এদের মাধ্যমে নিজেদের তো বটেই, বাড়ির লোকজনেরও সংক্রমণ ঘটতে পারে।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, যেগুলো ধাতব অলঙ্কার সেগুলোকে খুব ভালোভাবে ধুয়া ও মুছে নেওয়ার পর কিছুক্ষণ সেগুলোকে রোদে রেখে দিলে আরো ভালো হয়। সোনা ও রুপোর মতো ধাতুতে কোভিড-১৯ বেশি ক্ষণ বেঁচে থাকতে না পারলেও অন্য ব্যাক্টিরিয়া বা ভাইরাস থাকতে পারে। তাই ধুয়া ও মোছার পর অলঙ্কারগুলোকে কিছুক্ষণ রোদে রাখলে উত্তাপে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসগুলো মরে যাবে।
অরিন্দম জানান, চশমা হলে প্রথমে বেসিনের কল থেকে বেরনো পানি দিয়ে তার দু’টি কাচ ও ফ্রেম ভালো ভাবে ধুয়ে নিয়ে হবে। তারপর চশমা পরিষ্কার করার জন্য যে বিশেষ লোশন আছে, তা দিয়ে খুব ভালোভাবে মুছে নিতে হবে চশমার দু’টি কাচ ও ফ্রেম। আর সেটা যে কোনো কাপড় দিয়ে মুছলে হবে না। চশমার খাপে যে কাপড় দেওয়া থাকে, তা দিয়েই মুছতে হবে।
এই লকডাউনের সময় যখন বাড়ি ও নিজেদের সব সময় পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে আমরা সতর্ক হচ্ছি, তখন হাতের আংটি, কানের দুল, বালা, গলার হার বা চেন, নাকছাবি, নথ, এই সবের ব্যবহার নিয়েও আমাদের খুব সাবধান হতে হবে। এমনটাই বলছেন চিকিৎসকেরা।
চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাসের কথায়, এই সময় অলঙ্কার না পরাই সবচেয়ে ভালো। তবে যদি পরতেই হয়, বাইরে থেকে এলে দু’টি হাত খুব ভালোভাবে ধৌত করার সঙ্গে সঙ্গে হাতের আংটি, কানের দুল, গলার হার বা চেন, নাকছাবি, নথও খুব ভালোভাবে ধুয়ে ও মুছে নিতে হবে। তার আগে ব্রাশ দিয়ে অলঙ্কারের খাঁজগুলো পরিষ্কার করে নিতে হবে। কারণ, ধাতব অলঙ্কারের খাঁজে খাঁজে, বিভিন্ন কোণায় নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস আটকে থাকতে পারে।
সূত্র: আনন্দবাজার।