অতিথি প্রতিবেদক: মাওলানা সুলাইমান হোসেন- ৭নং জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। দক্ষিণ সুরমা উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের তিনবারের নির্বাচিত একজন জনপ্রিয় চেয়ারম্যান। ইউনিয়নবাসীর সূখ দুখের অংশীদার সুলাইমান চেয়ারম্যান এবার গোটা ইউনিয়নের কৃষকদের কাছে এক অনুপ্রেরণা। তিনি প্রমাণ করলেন একজন জননন্দিত চেয়ারম্যান হিসেবে শুধু সফল নন, জনপ্রতিনিধির পাশাপাশি নিজেকে একজন সফল কৃষক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। যার অনুপ্রেরণায় আজ শুধু জালালপুর ইউনিয়ন নয়, বরং উপজেলার অনেক জনপ্রতিনিধি এবং কৃষক আজ কৃষি কাজে উদ্দ্যোগী হয়েছেন।
সরেজমিনে উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মিরার গাও গ্রামের মাওলানা সুলাইমান হোসেন এর সূর্যমুখী বাগান ঘুরে দেখা যায়, অপরূপ সৌন্দর্যে সেজেছে গোটা মিরারগাও এলাকা। ভুট্টা, সরিষা, মুগ ডাইল, গম এবং সূর্যমুখী’র গাছ গোটা এলাকার মধ্যে এক আলাদা সৌন্দ্যেয্যের সৃষ্টি করেছে। পথচারীদের পাশাপাশি ভ্রমণ পিপাসুদেরও মন আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে ওঠে। ছায়া ডাকা পাখি ডাকা কালো পিছ ঢালা সড়কের পাশে এযেন এক নতুন রূপের সৃষ্টি। এখানে প্রতিদিন অগণিত দর্শনার্থীদের পদচারণা বেড়েছে বলে স্থানীয়রা জানায়।
মাওলানা সুলাইমান হোসেন জানান, প্রতি বছর তিনি নিজ উদ্যোগে ধান এবং কিছু পরিমাণ রবি শষ্যের চাষ করেন। কিন্তু এবারই প্রথম বারের মত মিরার গাও এলাকায় এক বিঘা গম, দেড় বিঘা ভুট্টা, পাচ বিঘা সরিষা, তিন বিঘা মুগ ডাইল, তিন বিঘা সূর্যমূখী ও পাচ বিঘা বুরো ধান চাষ করেছেন। কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে বীজ, সার সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আমার প্রতিটি শস্যে ইতিমধ্যে ফুল ধরেছে। ভাল ফলন পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। ব্যক্তি উদ্যোগে তার চাষাবাদ অত্র এলাকার কৃষকদের কৃষি কাজে উৎসাহ যুগিয়েছে।
তিনি জানান, সূর্যমুখী ফুল সারা বছর চাষ করা যায়। তবে অগ্রহায়ন মাসের মধ্য থেকে চাষ করলে এর ভাল ফলন পাওয়া যায়।সূর্যমুখীর বীজ যন্ত্রে মাড়াই করে তেল বের করা হয়। তেলের উৎস হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সূর্যমুখীর ব্যাপক চাষ হয়। সূর্যমুখীর তেল ঘিয়ের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই তেল অন্যান্য ভোজ্য তেল থেকে ভাল এবং হৃদরোগীদের জন্য বেশ উপকারী। এতে কোলেস্টরলের মাত্রা অত্যন্ত কম। এছাড়া এতে ভিটামিন এ, ডি ও ই রয়েছে। এর বীজ হাস মুরগির খাদ্যরূপে ও তেলের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
তিনি বলেন, বেকার যুবকরা পরিত্যাক্ত জমিকে কাজে লাগিয়ে কৃষি কাজে এগিয়ে আসলে নিজেদের প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি দেশের খাদ্য ঘাটতিও পূরণ সম্ভব হবে। তিনি এলাকার সকলকে কৃষি কাজে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
জালালপুর ইউনিয়নের উপ সহকারী কৃষি অফিসার ফারুক আহমদ বলেন, উপজেলার জালালপুর এলাকায় প্রথমবারের মতো জমিতে বৃহৎ পরিসরে রবিশস্যে চাষ করেছেন চেয়ারম্যান সুলাইমান। সূর্যমুখী চাষ করছেন কৃষক সুজাম। সূর্যমুখী চাষের ফলে অনেকের আয় ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমবারের মতো চাষাবাদ করে ফসল উৎপাদনে সফল হতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি জানান, সূর্যমুখী ফুল থেকে পাখির খাবারের পাশাপাশি কোলেস্টেরল মুক্ত তেল উৎপাদন করে ক্ষতিকর পাম অয়েল ও সয়াবিনের স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে রক্ষা পাবে মানুষ।
সূর্যমূখী বাগান পরিদর্শন করে আসা দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোঃ ইমাদ উদ্দিন নাসিরী বলেছেন, মাওলানা সুলাইমান হোসেন জনবান্ধব এক প্রতিনিধি। আপামর জনসাধারণের সাথে রয়েছে তার হৃদ্বতার সম্পর্ক। ইউনিয়নের প্রতিটি কাজক্রমে তিনি যচেষ্ট সময় ব্যয় করেন। ইউনিয়নের রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন সহ শিক্ষা খাতে রয়েছে তার ব্যাপক অবদান। এবার কৃষি কাজ করে তিনি প্রমাণ করলেন জনপ্রতিনিধিও চাইলে একজন সফল কৃষক হতে পারেন। তার রবিশস্যের চাষ অত্র এলাকার কৃষকদের মধ্যে নব উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছে।