ডেস্ক : নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় পরকীয়ার জেরে আল কাইয়ুম নিপুণ (৩৩) নামে এক যুবককে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে প্রেমিকা। পরে প্রেমিক আল কাইয়ূম লিপুণের লাশ বস্তাবন্দি করে বাড়ির সেফটি ট্যাংকে লুকিয়ে রাখা হয়। এ ঘটনার ৫ দিন পর প্রেমিকার বাড়ির সেফটি ট্যাংক থেকে কাইয়ূমের বস্তাবন্দি মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার পৌর এলাকার ভাগ্যের পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রেমিকা জেসমিন আক্তার সুমিকে গ্রেফতার করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে লোমহর্ষক বর্ণনা দেয় সুমি। এ ঘটনায় নিহতের ভাই জাহিদুল ইসলাম অপু বাদী হয়ে সোমবার রাতে প্রেমিকা জেসমিন আক্তার সুমির নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত নামা ৫/৬ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পলাশ থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়ূন কবির জানান, নিহত কাইয়ুম নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার গোতাশিয়া গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে। তার বাবা বিদেশ থাকায় সে পরিবার নিয়ে নরসিংদীর ভেলানগর এলাকায় তার মা,ভাই.স্ত্রী ও তার ১১ বছরের মেয়েকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতো। নিহত কাইয়ূমের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ঘোড়াশাল পৌর এলাকার ভাগ্যের পাড়া গ্রামের মোকারমের স্ত্রী জেসমিন আক্তার সুমির সাথে ২০১২ সালে পরিচয় হয়।
এরপর তারা পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তুলেন। পরকীয়া সম্পর্ক চলাকালীন নিহত কাইয়ূম তার মোবাইলে তাদের শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করে রাখে। সেই ভিডিও পরিবারকে দেখানো ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে গত ৬ মাস ধরে জেসমিন আক্তার সুমির কাছ থেকে টাকা-পয়সা নেওয়া শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৩ মার্চ রাতে নিহত কাইয়ূম সুমির বাড়িতে আসে শারীরিক সম্পর্ক ও টাকা নিতে। এ সময় প্রেমিকা জেসমিন আক্তার সুমি পানির সাথে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে কাইয়ূমকে অচেতন করে বিছনার চাদর দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহটি বস্তাবন্দি করে বাড়ির সেফটি ট্যাংকে লুকিয়ে রাখে।
এ ঘটনায় নিহত কাইয়ূমের ছোট ভাই ৪ মার্চ নরসিংদী মডেল থানায় একটি নিখোঁজের জিডি করলে মোবাইলের কল লিস্ট বের করে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রেমিকা সুমির মোবাইলের একাধিক যোগসূত্র পায়। পরে সুমিকে গ্রেফতার করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তার দেওয়া তথ্যমতে সোমবার সন্ধ্যায় নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শাহেদ আহমেদের নেতৃত্বে পলাশ থানার ওসি শেখ মো. নাসির উদ্দিন ও নরসিংদী মডেল থানার ওসি সৈয়দুজ্জামানসহ পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে সুমির স্বামী মোকারমের বাড়ির সেফটি ট্যাংকের ভেতর থেকে নিহত কাইয়ূমের বস্তাবন্দি মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।