বেসরকারি ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের (আইএসপি) জন্য শেষ সময় ছিল কাল শনিবার (৭ মার্চ) পর্যন্ত। সেই সময় পেরিয়ে গেছে। ফলে আজ রবিবার থেকে সিলেটের কয়েকটি এলাকায় ইন্টারনেট বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, সিলেট মহানগরীর প্রায় ৭ কিলোমিটার এলাকায় বৈদ্যুতিক তার আন্ডারগ্রাউন্ডে (মাটির নিচে) নেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ‘বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প’ শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) এ প্রকল্পে সহযোগিতা করছে। প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৫৫ কোটি টাকা। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের প্রথম ‘তারবিহীন’ নগরী হচ্ছে সিলেট। সম্প্রতি প্রকল্পের আওতায় হযরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ এলাকার একটি সড়কে বৈদ্যুতিক তার মাটির নিচে নিয়ে উপরস্থ সকল তার ও খুঁটি অপসারণ করা হয়।
বিপিডিবি সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে নগরীর আম্বরখানা ইলেকট্রিক সাপ্লাই থেকে চৌহাট্টা, জিন্দাবাজার ও সিটি পয়েন্ট হয়ে সিলেট সার্কিট হাউজ পর্যন্ত, চৌহাট্টা পয়েন্ট থেকে রিকাবীবাজার হয়ে নবাব রোডস্থ বিপিডিবি’র বাগবাড়ি কার্যালয় পর্যন্ত এবং জিন্দাবাজার পয়েন্ট থেকে পূর্ব জিন্দাবাজার হয়ে জেলরোড পয়েন্ট পর্যন্ত এলাকায় বৈদ্যুতিক তার মাটির নিচে নেওয়া হয়েছে। মাটির নিচস্থ এসব তারে সংযোগ দেওয়াটাই কেবল বাকি। সংযোগ দিতে উপরস্থ সকল (বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট ও ডিশের) তার ও খুঁটি অপসারণ করতে চায় বিপিডিবি।
জানা গেছে, বিদ্যুতের আন্ডারগ্রাউন্ড প্রকল্প বাস্তবায়নে বৈদ্যুতিক তার এবং সরকারি ইন্টারনেট সেবা সংস্থা বিটিসিএলের তারসমূহ মাটির নিচে নেওয়া হচ্ছে। বেসরকারি ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের (আইএসপি) ইন্টারনেট সংযোগের তার মাটির নিচে নেওয়ার আইনত সুযোগ নেই। আবার সংযোগ চালু রাখতে অন্যপন্থায়ও কোনো সমাধানে আসা যাচ্ছে না।
আইএসপি-কে তাদের ইন্টারনেট সেবা অব্যাহত রাখতে তারের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। সেই সময় শেষ হয় গত ২ মার্চ। তবে ৩ মার্চ থেকে তার অপসারণ শুরু করেনি বিপিডিবি। বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের ওয়ানডে সিরিজ সিলেটে হওয়ায় ৭ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয় অপসারণ কার্যক্রম।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিতরণ অঞ্চল সিলেটের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) প্রবীর কুমার দে এবং সিসিকের বিদ্যুৎ শাখার প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রুহুল আলম। তাঁরা জানান, ৭ মার্চ পর্যন্ত অপসারণ কার্যক্রম স্থগিত রাখা হবে।
অপসারণ কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় নগরীর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বেসরকারি ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের (আইএসপি) তারও টিকে আছে। ফলে আপাতত ইন্টারনেট সংযোগ বহালই রয়েছে। কিন্তু বিপিডিবি’র বেঁধে দেওয়া সময় কাল শেষ হওয়ায় আজ রবিবার থেকে অপসারণ কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা।
যদি উপরোক্ত এলাকায় সব ধরনের তার অপসারণ কার্যক্রম আজ শুরু হয়, তবে বিপর্যয় দেখা দেবে ইন্টারনেট সংযোগে। কেননা, ইন্টারনেটের তার বিকল্প ব্যবস্থায় চালু রাখার বিষয়ে কাল শনিবার রাত পর্যন্ত কোনো সমাধান হয়নি।
এমন তথ্য জানিয়েছেন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) অ্যাসোসিয়েশন, সিলেটের যুগ্ম আহবায়ক বাহার হোসেন।
তিনি জানান, শনিবার পর্যন্ত বিকল্প ব্যবস্থায় ইন্টারনেট সংযোগের তার নেওয়ার বিষয়ে কোনো সমাধান হয়নি। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।
বিকল্প ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত ইন্টারনেট তারসমূহ অপসারণ না করার দাবি জানিয়েছে আইএসপি।