ডেস্ক :: সিলেটের অপরাধসাম্রাজ্য এখন আতঙ্কিত। গেল বেশ কিছুদিন ধরেই আচমকা মৃত্যু আতঙ্ক তাদেরকে ঘিরে রেখেছে। আতঙ্কে অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন। কেউ কেউ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার মতলব আঁটছেন।
জানা গেছে, কয়েক মাস ধরে সিলেটে একের পর এক ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাষ্যমতে, এসব বন্দুকযুদ্ধে নিহত হচ্ছেন ‘ডাকাত’ ও ‘সন্ত্রাসী’।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, গত আগস্ট থেকে চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত সিলেটে অন্তত ৫টি ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটেছে। এসব বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন ৫ জন। তন্মধ্যে ‘ডাকাত’ তিনজন, ‘মাদক ব্যবসায়ী’ একজন এবং ’শীর্ষ সন্ত্রাসী’ একজন।
জানা গেছে, গত ২৩ আগস্ট সিলেটের জকিগঞ্জের মরিচা এলাকায় আব্দুল শহীদ ফুলু (৩২) নামের এক ‘ডাকাত’ পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। তিনি মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার ধর্মদেহী গ্রামের নানু মিয়ার ছেলে। ওই সময় পুলিশ জানিয়েছিল, ফুলু একজন চিহ্নিত ডাকাত, তার বিরুদ্ধে ডাকাতি ও অস্ত্র ৬টি একাধিক মামলা ছিল।
গত ৩ সেপ্টেম্বর বিয়ানীবাজারের শেওলা সেতু এলাকায় ডাকাতদলের সাথে বন্দুকযুদ্ধ হয় পুলিশের। এতে নিহত হন মিসবাহ নামের এক ‘ডাকাত’। জকিগঞ্জের শরীফাবাদ এলাকার আবদুল মালিকের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে ৮টি মামলা ছিল বলে তখন জানায় পুলিশ।
পরদিন, ৪ সেপ্টেম্বর র্যাবের সাথে গোয়াইনঘাটের মিত্রিমহল এলাকায় বন্দুকযুদ্ধ হয় মাদকব্যবসায়ীদের। বন্দুকযুদ্ধে ফজর আলী (৩২) নামের এক মাদকব্যবসায়ী নিহত হন। তিনি কোম্পানীগঞ্জের গৌখালপাড়েরর আব্দুল গফুরের ছেলে। তার বিরুদ্ধে মাদক ও চোরাচালানসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২১টি মামলা ছিল।
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে সিলেটে দুটি ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটেছে। সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার কদুপুর এলাকায় র্যাবের সাথে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের বন্দুকযুদ্ধ হয়। এতে একাধিক মামলার আসামি আলী হোসেন (৪০) নিহত হন। তার আরো ৫ সহযোগীকে আটক করে র্যাব।
এছাড়া বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর বাইপাস সড়কের মরমপুর-সুরিরখাল এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধ হয় ডাকাতদলের’। বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন তরাজ মিয়া নামের এক ‘ডাকাত’। তিনি বিশ্বনাথের পূর্বপাড়ার মৃত ইদ্রিছ আলীর ছেলে।
জানা গেছে, এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় সিলেটের অপরাধ জগতে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হার্ডলাইনে থাকায় ভয় ধরেছে অপরাধীদের মনে। তাদের অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপর্যায়ের সূত্র বলছে, অপরাধ দমনে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে কঠোর হাতে অপরাধ দমনের আদেশ এসেছে। এজন্য র্যাব, পুলিশও শক্ত হাতে অপরাধীদের মোকাবেলা করতে মাঠে নেমেছে।
তবে অব্যাহত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। তারা বিচারবহির্ভূত কোনো ধরনের হত্যাকাণ্ড সমর্থনযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করছেন।