শরীফ আহমদ, দক্ষিণ সুরমা: সিলেট জেলা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র জেলার বিশেষ করে সিলেটের দক্ষিণ প্রান্তস্থিত দক্ষিণ সুরমা, বিশ্বনাথ, ওসমানীনগর, বালাগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলাবাসীর জন্য স্বাস্থ্য সেবায় অনন্য অবদান রাখছে। ডিজিটাল যুগে টেলিফোন সুবিধা বঞ্চিত এ স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রটি জেলা শহর থেকে দূরে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তেতলী ইউনিয়নের অতির বাড়ীতে অবস্থিত। এ কেন্দ্রটি বছরের পর বছর মা ও শিশু স্বাস্থ্য সেবায় জেলার মধ্যে ব্যাপক সুনাম অর্জন করে সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখছে।
সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অতিরবাড়ী সংলগ্ন অতিরবাড়ী-লক্ষীপুর সড়কের পশ্চিম প্রান্থে অবস্থিত জেলা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, সিলেট। এ কেন্দ্রে নরমাল ডেলিভারী, গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, শিশু স্বাস্থ্য সেবা সহ পরিবার পরিকল্পনা সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছেন তিন শিফটে ৬জন ডাক্তার সহ প্রয়োজনীয় জনবল। একমাত্র এম্বুলেন্স এর কারণে গর্ভবতী মায়েদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের কিছুটা ব্যাঘাত ঘটছে। এরপরও এখানে প্রতিদিন লালাবাজার ও তেতলী এলাকার লক্ষীপুর, নিশ্চিন্তপুর, বেটুয়ারমূখ, সিলাম ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মা ও শিশু স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণকারী জনসাধারণ সেবা গ্রহণ করেন।
মেডিকেল অফিসার (ক্লিনিক) ডা. এম এ মান্নান বলেন, এ কেন্দ্রে প্রতিদিন অগনিত রোগীদের মধ্যে নানা সেবা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে স্থানীয় সরকারের পক্ষ থেকে একটি এম্বুলেন্স প্রদান করা হয়েছে। এখানে কর্মরত চিকিৎসকরা নরমাল ডেলিভারী, গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, শিশু স্বাস্থ্য সেবা সহ পরিবার পরিকল্পনা সেবা দিতে সবর্দা প্রস্তুত রয়েছেন। এখানকার স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে এম্বুলেন্সের চালক অতিব জরুরী। এ ব্যাপারে তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছেন বলে জানান।
মা ও শিশু কল্যাণ সুত্রে জানা গেছে, অত্র স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে প্রতিদিন গড়ে অর্ধশত রোগী চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেন। বিশেষ করে গর্ভবতী মা ও শিশুরা এ কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা পেয়ে থাকেন। এখানে বিনা মূল্যে রক্ত পরীক্ষাসহ সাধারণ রোগীদের ওষুধ প্রদান করা হয়।
স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি এখানে কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য সচেতনাতায় বিভিন্ন কর্মশালার আয়োজন করা হয়
এবং প্রতিমাসে কমিউনিটি গ্রæপ নিয়ে স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হয়।
নিশ্চিন্তপুর থেকে আসা নিলুফা বেগম (২০) বলেন, এখানকার পরিবেশ অত্যন্ত সুন্দর। সেবা গ্রহণ করতে আসা রোগীদের ব্যাপারে চিকিৎসা প্রদানকারী ডাক্তাররা অত্যন্ত আন্তরিক। এ ধারা অব্যাহত থাকলে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং চিকিৎসা সেবার মানও বৃদ্ধি পাবে। তাহার সাথে সুর মিলিয়ে একি কথা বললেন লালাবাজার থেকে আসা সাধারণ রোগী রুবি বেগম (১৮)। তিনি জানান, অত্র এলাকার চিকিৎসা সেবার এ কেন্দ্রটি একটি মাইলফলক। যারা দূরবর্তী সিলেট শহরে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করতে অপারগ তাদের জন্য এ কেন্দ্রটি সহায়ক। প্রতিদিন এখানে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সিলেটবাসীর ভরসার কেন্দ্র বিন্দু বিশেষ করে মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সেবায় অনন্য অবদান পালনকারী জেলা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটির উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন এলাকার সেবাগ্রহণকারী জনসাধারণ।