November 23, 2024, 11:28 pm

সংবাদ শিরোনাম :
সেইলরের নতুন পূজা কালেকশন সেজে উঠুন আপনিও রুদ্র নিহতের ঘটনায় সিলেটে মামলা, আসামি ৩ শতাধিক বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের পরিচয় আসাদুজ্জামান ও ওবায়দুল কাদেরর নিষেধাজ্ঞা দিতে আহ্বান মার্কিন কংগ্রেসের ৬ সদস্যের নোবেলজয়ী থেকে সরকার প্রধান কে এই ড. ইউনূসের বড়লেখাবাসীকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানালেন সমাজসেবক সাইদুল ইসলাম নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইক্রবাস খাঁদে”পুলিশেরে সাহসী ভূমিকায় বেঁচে গেল ১১ টি প্রান” সিলেটে কমছে বন্যার পানি, বর্ষায় বাড়ছে রোগবালাই আগামীকাল সিলেট ফিরছেন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান বাজেটে বাড়ছে বিড়ি-সিগারেটের দাম প্রধানমন্ত্রী পদে মোদীকে সমর্থন নাইডু ও নীতিশের হুয়াওয়ের ‘উইমেন ইন টেক’ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা সিলেটে অবৈধভাবে আসা ২ কোটি টাকার ভারতীয় চিনি জব্দ সিলেট মহানগর যুবলীগের ৪ নং ওয়ার্ড কমিটি গঠন”সভাপতি পদে শাকিল নির্বাচিত চোরাচালান লাইনম্যান রুবেল আহমদ বেপরোয়া জমির ধান নষ্ট করে দিলো প্রতিপক্ষ: দিশেহারা কৃষক সিলেটে ইট ভাটা নিয়ে নজিরবিহীন কেঙ্ককারী বিশ্ব গাজায় হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করছে, বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না : প্রধানমন্ত্রী সুজানগর ইসলামী সমাজকল্যাণ পরিষদের কমিটি গঠন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে উন্মুক্ত সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত মাওলানা লুৎফুর রহমানের মৃত্যু ”গুজব সংবাদ ফেসবুকে” বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত বিজিবির নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) পদে নিয়োগ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে জোরালো ভূমিকা নিতে হবে সচিবদের :প্রধানমন্ত্রীর সিলেটে বিজয় দিবসে গানের অনুষ্ঠানে সংঘর্ষ:নিহত-১ বইমেলা বাঙালি জাতিসত্তা দাঁড় করাতে সহায়ক : কবি নুরুল হুদা বন্ধুকে বিদেশ পাঠানোর সহযোগীতায় বন্ধু খুন দুর্নীতি-অনিয়ম র অভিযোগে ডৌবাড়ী প্রবাসী কল্যাণ ট্রাস্টের ৪ সদস্য বহিষ্কারের অভিযোগ ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী গোয়াইনঘাটের শীর্ষ কুখ্যাত চোরাকারবারী কালা মিয়া
পশ্চিম রেলের ভুতুড়ে বিল, কোটি কোটি টাকা লোপাট!

পশ্চিম রেলের ভুতুড়ে বিল, কোটি কোটি টাকা লোপাট!

Please Share This Post in Your Social Media

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভিন্ন স্টেশন পরিষ্কার করতেই ৯৫ লাখ টাকার ভিম পাউডার লেগেছে। এখানকার একটি ছোট্ট টয়লেট মেরামতে খরচ হয়েছে ২৮ লাখ টাকা। আরেকটি টয়লেটসহ বারান্দার টিন বদলে খরচ ৭৩ লাখ টাকা।

ভৌতিক খরচ দেখানো হয়েছে বিভিন্ন স্টেশন রঙ করা, লাইন সংস্কার, রেলসেতু রঙ করা, ছাউনি-প্ল্যাটফর্মের টিন বদল এমনকি স্যানিটারি উপকরণের মতো ছোট ছোট কাজে। কোথাও ছিটেফোটা কাজ হয়েছে। কোথাও কাজের কোনো অস্তিত্বই নেই। কিন্তু গায়েবি এসব কাজ দেখিয়ে তুলে নেয়া হয়েছে কোটি কোটি টাকার বিল। রেলের এমন শত শত কাজ টেন্ডার ছাড়াই ক্ষমতাসীন দলের তৃতীয় শ্রেণির ঠিকাদারদের দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো নিয়মই মানা হয়নি। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে পশ্চিম রেলের ফাঁস হওয়া দুর্নীতির নথিপত্রে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

জানা গেছে, দুর্নীতির এ সিরিজ প্যাকেজের মোট মূল্য ৭০০ কোটি টাকা। পশ্চিম রেলের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. রমজান আলী ও তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন কর্মকর্তার সিন্ডিকেট এই মহাদুর্নীতিতে জড়িয়ে রয়েছেন।

ফাঁস হওয়া নথিপত্র পর্যালোচনা করে জানা গেছে, পশ্চিম রেলের দুই থেকে আড়াই শতাধিক গায়েবি খাতে ৭০০ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। বিভিন্ন স্টেশন রঙ করা, লাইন সংস্কার, রেলসেতু রঙ করা, টয়লেট মেরামত, ছাউনি-প্ল্যাটফর্মের টিন বদল, স্টেশন প্রাঙ্গণ সংস্কার, ওভার ব্রিজ সংস্কার, মাটি ভরাট, জেটি সংস্কার, হাঁটার পথ সংস্কার, দরজা মেরামত, শীত আর গরমের পোশাক কেনা, স্যানিটারি উপকরণ ও ভিম পাউডার কেনা, বন্যার সময় ইট-খোলা কেনা, সেতু মেরামত, বাউন্ডারি ওয়াল মেরামতের মতো ছোট ছোট কাজে বিপুল অংকের অর্থ ব্যয় দেখানো হয়েছে।

রাজশাহীতে পশ্চিমাঞ্চল রেল ভবনে এসএসএই দফতরের বারান্দার টিন পরিবর্তন ও একটি টয়লেট সংস্কারে ৭২ লাখ ৩১ হাজার ৫০২ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, রাজশাহীতে রেলের এ দপ্তরটি একটি ছোট্ট টিনশেড অফিস। ২০১৭ সালের ৭ জুলাই এ কাজটির কার্যাদেশ দেয়া হয় মোমিন ট্রেডার্স নামে একটি তৃতীয় শ্রেণির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। বিধিবদ্ধ দরপত্র আহ্বান ছাড়াই লোকাল টেন্ডার মেথড (এলটিএম) বা স্থানীয় টেন্ডার পদ্ধতিতে কোনো প্রতিযোগিতা ছাড়াই মোমিন ট্রেডার্স কাজটি পায়। কাজ সম্পাদন দেখিয়ে ওই বছরের ১ অক্টোবর ঠিকাদারকে পুরো বিল পরিশোধ করা হয়।

নথিপত্র বিশ্লেষণ করে আরও দেখা যায়, পশ্চিম রেলের প্রধান টেলিযোগাযোগ ও সংকেত বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরের একটি টয়লেট মেরামতে ব্যয় দেখানো হয়েছে ২৮ লাখ টাকা। এ কাজটি করেছে তৃতীয় শ্রেণির ঠিকাদার তোফা কন্সট্রাকশন। রাজশাহীতে রেল অফিসার্স মেসের একটি কক্ষের (ইসি-৪) মেরামত ও মেসের ভেতরে হাঁটার পথ সংস্কারে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৮৯ লাখ ৪৮ হাজার ৭৮০ টাকা। এই কাজটি করেছে সরকার অ্যান্ড ব্রাদার্স।

রাজশাহীতে ভদ্রা ব্যারাকের পুকুরপাড় উন্নয়ন ও ওয়াশপিট (ট্রেন ধোয়া-মোছার শেড) সম্প্রসারণে ব্যয় দেখানো হয়েছে ২ কোটি ৪ লাখ ৯ হাজার টাকা। আশরাফুল কবির নামে একজন ঠিকাদার কাজ করেছেন বলে নথিতে উল্লেখ রয়েছে। তবে সরেজমিনে পুকুরপাড় উন্নয়নের কোনো চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এদিকে উল্লাপাড়া স্টেশনের ইয়ার্ডে বালু ভরাট দেখিয়ে মোল্লাহ কন্সট্রাকশনকে ৭৩ লাখ ৪৮ হাজার ৯৩৯ টাকা বিল পরিশোধ করা হয়েছে। রাজশাহী রেল স্টেশনটি কয়েক বছর আগে রি-মডেলিংয়ের মাধ্যমে নতুন করে নির্মাণ করা হলেও জরুরি কাজ উল্লেখ করে এই স্টেশনের বুকিং কাউন্টার, ওয়েটিং রুম ও কার পার্কিং এরিয়া মেরামত দেখিয়ে আনোয়ারুল ইসলাম বাবু নামে একজন ঠিকাদারকে ৫৭ লাখ ৭৪ হাজার ৪৬৪ টাকা বিল দেয়া হয়েছে।

সিরাজগঞ্জের রায়পুর নামক স্টেশনে মালামাল ওঠা-নামার সুবিধা সম্প্রসারণের নামে ঠিকাদার আরটিসিকে ৯৭ লাখ ১৮ হাজার টাকা বিল পরিশোধ করা হয়েছে। তবে নথিপত্রে ওই কাজের ধরন উল্লেখ নেই।

রেলের সাবেক ডিজি আমজাদ হোসেনের শ্যালক পরিচয়দানকারী বদরুল আলমকে নাটোর, মাধনগর, আত্রাই ও সান্তাহার স্টেশনে রেললাইনের প্লাস্টিকের ওয়াসার সরবরাহে মোট ৯ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার টাকার ৫টি প্যাকেজের কাজ একসঙ্গে কোনো টেন্ডার ছাড়াই দেয়া হয়।

বদরুল গত আড়াই বছরে এভাবে বিনা টেন্ডারে প্রায় ১০০ কোটি টাকার কাজ করেছেন বলে রেলওয়ের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। নিয়ম ভেঙে কাজ শুরুর আগেই বদরুলকে সমস্ত বিল পরিশোধ করা হয়।

যদিও রেলের সাবেক ডিজি আমজাদ হোসেন বলেন, বদরুল তার শ্যালক নয়, এলাকায় বাড়ি। তার প্রভাব খাটিয়ে কাজ নেয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরুর পর থেকে বদরুল আত্মগোপনে রয়েছেন।

এদিকে একই সময়ে কোনো টেন্ডার ছাড়াই ঢাকার আরটিসি নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন রেললাইন সংস্কারের নামে মোট ১৯টি কাজ দেয়া হয়। এসব কাজের জন্য ওই প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ২৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকার বিল পরিশোধ করা হয়েছে। কোথায়, কীভাবে কাজগুলো হয়েছে বিল-ভাউচারে তার কোনো বিবরণ নেই।

২০১৮ সালের ১৮ মার্চ ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ রেলস্টেশন প্ল্যাটফর্মের ২০০ ফিট সিআই সিট পরিবর্তনসহ আনুষাঙ্গিক কাজের জন্য ৩৮ লাখ ৩৬ হাজার ৫০০ টাকার বিল পরিশোধ করা হয়। ফরমাল টেন্ডার ছাড়াই উল্লাপাড়া স্টেশনের ৩০০ ফুট সিআই সিট পরিবর্তনের জন্য ৪৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে।

২০১৭ সালের ৩ জুন দ্বিতীয় মৈত্রী ট্রেনের জন্য বেনাপোল স্টেশনে একটি টিনের শেড নির্মাণে ৮০ লাখ ৯০ হাজার ব্যয় করা হয়। একই স্টেশনের ফুটওভার ব্রিজ সংস্কার ও রঙ করা বাবদ ব্যয় দেখানো হয়েছে ৬৩ লাখ ২৯ হাজার ৫০০ টাকা।

২০১৭ সালের বন্যায় কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, টাঙ্গাইল, পার্বতীপুর, কুমারখালী ও মোবারকগঞ্জে জরুরি সেতু প্রটেকশন খাতে ৭১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হয়। ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণ খাতে ৬০ লাখ ৪৩ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে।

রেলওয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের শীতের পোশাক কেনা খাতে ৭ লাখ ৯৩ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হলেও গরমের পোশাক কেনার খাতে দেখানো হয়েছে ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বিভিন্ন স্টেশন পরিষ্কার করতে ভিম পাউডার কেনায় ৯৫ লাখ টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানাচ্ছে, পশ্চিম রেলের এসব ছোট ছোট কাজ হয়েছে প্রায় আড়াই শতাধিক প্রকল্পে। এসব কাজ ইচ্ছামতো দেয়া হয়েছে ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারদের। তবে কোথাও আংশিক ও কোথাও কাজ না করেই ঠিকাদার ও রেলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জোগসাজশ করে বিপুল অংকের বিল তুলে নিয়েছেন।

এরই মধ্যে রেল ভবন থেকে পশ্চিম রেলের দুর্নীতির এসব নথিপত্র জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এখন অনুসন্ধান চালাচ্ছেন দুদক কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. রমজান আলীর পুরো মেয়াদে এ ধরনের কাজের মাধ্যমে বিপুল অর্থ লোপাট হয়েছে। রমজান আলী বর্তমানে মোংলা রেল প্রকল্পের পরিচালক। অভিযোগের বিষয়ে জানতে দফায় দফায় কথা বলার চেষ্টা করা হলেও ব্যস্ততা দেখিয়ে এড়িয়ে গেছেন রমজান আলী।

অন্যদিকে টয়লেট মেরামত দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ বিল প্রদানকারী সাবেক সিনিয়র উপসহকারী প্রকৌশলী ও বর্তমানে সৈয়দপুর সহকারী প্রকৌশলী (সেতু) পদে কর্মরত মনিরুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও ব্যস্ততা দেখিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান।

যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি আগের কর্মকর্তার সময়ের দাবি করে এনিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সিনিয়র উপসহকারী প্রকৌশলী (এসএসইএ) বাবুল আকতার।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সাবেক প্রধান সিগন্যাল ও টেলিকমিউনিকেশন প্রকৌশলী অসীম কুমার তালুকদার বর্তমানে পাকশীর বিভাগীয় ম্যানেজার। তিনিও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে পশ্চিম রেলের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মিহির কান্তি গুহ বলেন, মাত্র কিছুদিন আগে দায়িত্ব নিয়েছি। এরই মধ্যে দুদকের কর্মকর্তারা কয়েকবার এসেছেন এবং তাদের চাহিদামতো নথিপত্র সরবরাহ করা হয়েছে। দুর্নীতি কতটুকু কী পরিমাণ হয়েছে, সেটা আমি এখন বলতে পারছি না।

জানতে চাইলে দুদকের রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক মোর্শেদ আলম বলেন, রেলে দুর্নীতির পরিসর বিস্তৃত ও মাত্রা ভয়াবহ। সীমিত জনবলে এসব অনুসন্ধানে অনেক সময়ের প্রয়োজন। অনুসন্ধান পুরোদমে চলছে। সময় হলে সব জানানো হবে।

সূত্র: জাগো নিউজ





Calendar

November 2024
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  



  1. © সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2017 sylhet71news.com
Design BY Sylhet Hosting
sylhet71newsbd