বড়লেখা :: নয় বছরের শিশু চন্দনা বুনার্জি। এখনও সবকিছু বুঝে উঠার বয়স হয়নি তার। এই অবুঝ বয়সে নৃশংস এক হত্যাযজ্ঞের স্বাক্ষী হয়েছে চন্দনা। ঘাতক সৎ বাবার দায়ের কোপে চোখের সামনে মরতে হয়েছে মা আর নানিসহ দুই প্রতিবেশীকে। তবে ভাগ্য ভালো থাকায় পালিয়ে বেঁচে গেছে সে। এখন মা আর নানিকে হারিয়ে অনেকটাই নি:শ্ব চন্দনা।
চন্দনা বুনার্জি মৌলভীবাজারের বড়লেখায় পারিবারিক কলহের জের ধরে ঘাতক স্বামীর হাতে নিমর্মভাবে খুন হওয়া জলি বুনার্জির মেয়ে। ঘাতক নির্মলের সাথে বিয়ে হওয়ার আগে জলি বুনার্জির আরেক বিয়ে হয়েছিল। জলি বুনার্জির প্রথম পক্ষের সন্তান চন্দনা বুনার্জি। আগের স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ায় চন্দনাও মায়ের সঙ্গে নানা বাড়িতেই থাকতো।
ঘটনার দিন রবিবার ভোররাতে পারিবারিক কলহ নিয়ে নির্মল কর্মকারের সঙ্গে তার স্ত্রী জলি বুনার্জির ঝগড়া হয়। এরই জের ধরে সে জলিকে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। এসময় জলিকে বাঁচাতে তাঁর মা লক্ষ্মী বুনার্জি ও পাশের ঘরের বসন্ত ভৌমিক এবং বসন্তের মেয়ে শিউলী ভৌমিক এগিয়ে এলে নির্মল তাদেরও কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার সময় ঘাতক সৎ বাবার দায়ের কোপ থেকে কোনো মতে বেঁচে যায় চন্দনা। সে দৌঁড়ে পালিয়ে গিয়ে চিৎকার দিলে আশাপাশের শ্রমিকরা বাড়ি ঘেরাও করেন। এসময় ঘরের দরজা লাগিয়ে নির্মল গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
ঘটনার খবর পেয়ে সকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। দুপুরে লাশগুলো উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমদ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া সুলতানা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পিবিআই) নজরুল ইসলাম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) কাওছার দস্তগীর, থানার অফিসার ইনচার্জ কর্মকর্তা ইয়াছিনুল হক, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জসীম প্রমুখ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইয়াছিনুল হক বলেন, ঘটনার সময় মেয়েটি পালিয়ে প্রতিবেশিদের ঘরে আশ্রয় নেওয়ায় বেঁচে গেছে। ওর বয়স কম। ছোট্ট মেয়ে। এই বয়সে অনেকটা মানসিকভাবে আঘাত পেয়েছে। তাকে প্রথমে থানায় আনা হয়েছিল। পরে আমরা বাগানের চা শ্রমিকদের আশ্রয়ে দিয়েছি।