বাংলাদেশ টেলিভিশনের পর এবার ভারতে বাংলাদেশ বেতারের সম্প্রচার শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও ভারতের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী প্রকাশ জাভাদকার বাংলাদেশ বেতার ও ভারতের আকাশবাণী বেতারের মধ্যে অনুষ্ঠান বিনিময় কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এরপরই ভারতে বাংলাদেশ বেতারের প্রচার শুরু হয়। তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এখন থেকে বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান আকাশবাণী চ্যানেলে কলকাতায় এফএম ১০০.১ মেগাহার্টজ, আগরতলায় এফএম ১০১.৬ মেগাহার্টজ এবং আকাশবাণী অ্যাপ ও ডিটিএইচের মাধ্যমে পুরো ভারতে ভারতীয় সময় সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৯টা ও সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা থেকে সাড়ে ৭টায় একযোগে সম্প্রচার শুরু হলো। একই সময়ে আকাশবাণীর অনুষ্ঠান বাংলাদেশ বেতারের এফএম ১০৪ মেগাহার্টজে সম্প্রচার শুরু হলো।
২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল প্রসার ভারতী ও বাংলাদেশ বেতারের মধ্যে সম্পাদিত সমঝোতা স্মারকের ভিত্তিতে এ কার্যক্রম দুই দেশের গণমাধ্যম খাতে সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করল বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এই প্রচার শুরুর পরপরই বঙ্গবন্ধুর জীবনীভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণে দুই দেশের চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
সংক্ষিপ্ত ভাষণে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ২০২০ সালে, বেতার ও চলচ্চিত্র খাতে এই সহযোগিতা দুই দেশের জনগণ ও সরকারের বন্ধুত্বের এক অনন্য মাইলফলক। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে পারস্পরিক সহযোগিতার অঙ্গীকার করেছেন, এ বিনিময় ও চুক্তি তারই প্রতিফলন।’
মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতার কথা স্মরণ করে মন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের প্রত্যক্ষ সহায়তা ছাড়া নয় মাসে মুক্তিযুদ্ধ শেষ হতো না।’
ভারতের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী প্রকাশ জাভাদকারকে ফের বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান হাছান মাহমুদ। পরিবেশমন্ত্রীরও দায়িত্বে থাকা প্রকাশ জাভাদকার গত নভেম্বরে ঢাকায় পরিবেশ সম্মেলনে এসে তথ্যমন্ত্রী হাছানের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন।
জাভাদকার হাছান মাহমুদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন ও শিগগিরই বাংলাদেশ সফরের কথা জানান। তিনি হাছান মাহমুদকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ভৌগোলিক নৈকট্য, ইতিহাস ও ঐতিহ্যগত। গণমাধ্যম ক্ষেত্রের এই সহযোগিতা দু দেশের অন্যান্য খাতে সহযোগিতাকেও প্রসারিত করবে।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্বে নিয়োজিত নুজহাত ইয়াসমিন ও ভারতের এনএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিসিএ কল্যাণী বঙ্গবন্ধুর জীবনীভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণে দু দেশের চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের মধ্যে যৌথ চলচ্চিত্র প্রযোজনা চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনারের দায়িত্বে থাকা ডেপুটি হাইকমিশনার এ টি এম রকিবুল হক, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক নারায়ণ চন্দ্র শীল, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাহানারা পারভীন, নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত প্রেস মিনিস্টার ফরিদ হোসেন, উপসচিব মো. সাইফুল ইসলামসহ তথ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব রাভি মিত্তাল, প্রসার ভারতীর প্রধান নির্বাহী শশী শেখর ভেম্পতি, অতিরিক্ত সচিব অতুল কুমার তিওয়ারিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার হায়দ্রাবাদে রামুজী ফিল্ম সিটি পরিদর্শন শেষে ১৭ জানুয়ারি দেশে ফেরার কথা রয়েছে তথ্যমন্ত্রীর।