ডেস্ক : দেড় হাজার শ্রমিক নিয়ে গায়ে হলুদের আয়োজন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা সেই গার্মেন্টস মালিকের কন্যা সাইকা তাফাননুম প্রীতির বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। রোববার (৫ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম নগরের নেভি কনভেনশন সেন্টারে ছিল বিয়ের রাজকীয় আয়োজন।
এ বিয়েতে অংশ নেন চিত্রনায়ক ও ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খলিলুর রহমান, চট্টগ্রাম চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি ওমর হাজ্জাজসহ দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও আমলারা।
প্রীতির বাবা খ্যাতনামা গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ও ব্যবসায়ী নেতা এবং নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব। প্রীতির স্বামী শফিউল ইসলাম মোল্লা (নিলয়) ঢাকার বারিধারার আসলাম মোল্লা ও রুবিনা মোল্লার ছেলে।
একমাত্র মেয়ের বিয়েতে কোনো কমতি রাখেননি গার্মেন্টস ব্যবসায়ী এস এম আবু তৈয়ব। পুরো কনভেনশন সেন্টারকে সাঁজানো হয় রাজমহলের আদলে। প্রায় দুই হাজার মানুষের আয়োজন ছিল বিয়েতে। বিয়েতে যেমন সমাজের উঁচু তলার মানুষরা এসেছিলেন, তেমনি এসেছিলেন তার কারখানার কর্মকর্তা ও বেশ কিছু কর্মচারীও।
আর চট্টগ্রাম ক্লাবে বিয়ের অনুষ্ঠানে যে বাবুর্চি রান্না করেন, তাকে দিয়েই একই মেন্যুর রান্না পরিবেশিত হয় কারখানায় গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারীদের মাঝে।
খাবারের মেন্যুতে ছিল পোলাও, কোপ্তা, গরু ও মুররির রেজালা আর পুডিং। খাবারের পর চট্টগ্রামের ঐতিহ্য অনুযায়ী আয়োজন রাখা হয় বাহারি পানের। ৫২ ধরনের মসলাসমৃদ্ধ এই পানের প্রতি বিশেষ আকর্ষণ ছিল বিয়েতে আগত অতিথিদের।
বিয়েতে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় গার্মেন্টস ব্যবসায়ী এস এম আবু তৈয়বের। তিনি বিষয়টিকে পারিবারিকভাবে নিয়ে কোনো ধরনের প্রচারে না যাওয়ার অনুরোধ জানান বারবার।
তিনি বলেন, শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে গায়ে হলুদের বিষয়টিও প্রচার হোক তা আমি কখনোই চাইনি। আমি প্রচার চাই না। আজকের বিয়ে একান্তই আমার পারিবারিক বিষয়। এখানে আমাদের ব্যবসায়ী বন্ধুরা ছাড়াও সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ অংশ নিয়েছেন। সবার কাছে একটাই প্রার্থনা, তারা যেন আমার মেয়ে ও মেয়ের জামাইয়ের জন্য দোয়া করেন। তাদের দাম্পত্য জীবন যেন সুখি হয়।
চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ শিল্প এলাকার ইন্ডিপেনপেন্ট গার্মেন্টসের মালিক এস এম আবু তৈয়ব ও তার পরিবার বরাবরই শ্রমিকবান্ধব বলেই জানেন চট্টগ্রামের মানুষ। রোববার বিয়ের অনুষ্ঠানের আগে শুক্রবার দেড় হাজার গার্মেন্টস কন্যাকে নিয়ে মেয়ে প্রীতির গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান করা হয়। এতে গার্মেন্টস কন্যাদের সরব অংশগ্রহণ পুরো অনুষ্ঠানটিকে দেয় আলাদা সৌন্দর্য।
গায়ে হলুদের পুরো অনুষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা করেন গার্মেন্টস কর্মীরাই। কারখানার সব নারী শ্রমিককেই তিনি দেন হলুদ শাড়ি। যে শাড়িটি তিনি নিজের স্ত্রী ও স্বজনদের জন্য কেনেন, ঠিক একই শাড়ি কেনেন কারখানার দেড় হাজার শ্রমিকের জন্য। পুত্রসহ নিজে গায়েহলুদের অনুষ্ঠানে যে পাঞ্জাবি পরেন, ঠিক একই পাঞ্জাবি দেন গার্মেন্টসের পুরুষ শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের।