এরপরই হিসেবে-নিকেশ মেলাতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। কে কোন পদে আসীন হলেন আর কোন জেলায় কতজন নেতা নতুন কমিটিতে স্থান পেলেন সেই আলোচনাও চলেছে দিনভর। তবে সিলেটে অন্যান্যবার উৎসবের আমেজ থাকলেও এবার ভিন্ন আবহ। কারণ গত তিন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মিছবাহ উদ্দিন সিরাজকে এবার সাংগঠনিক পদ থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তাকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদেও থাকে রাখা হয়নি।
অন্যদিকে পুনরায় দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হয়েছেন, সাবেক অর্থমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল মাল আবদুল মুহিত, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ আবু নছর এডভোকেট এবং বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদানকারী ইনাম আহমদ চৌধুরী।
এদিকে আবুল মাল আবদুল মুহিত আগেও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন। অপরদিকে তৃতীয়বারের মতো উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হলেন সৈয়দ আবু নছর এডভোকেট এবং বিএনপি থেকে আগত ইনাম আহমদ চৌধুরী আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মনোনীত হয়েছেন। আর দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে রয়েছেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও সিলেট-৬ আসনের সাংসদ নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি এর আগের কমিটিতেও এ পদে ছিলেন।
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। তিনি এর আগের কমিটিকে সদস্য হিসেবে ছিলেন। এবার মহানগরের সভাপতি পদ থেকে থাকে সরিয়ে নেওয়ার পরপরই সিলেটে গুঞ্জন শুরু হয়। নেতাকর্মীরা বলছিলেন, তাকে হয়তো সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে কমিটিতে রাখতে পারেন নেত্রী। তবে নতুন কমিটিতে থাকে কোথাও রাখা হয়নি।
অপরদিকে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীও সিলেটের রাজনীতিতে ছিলেন আলোচনায়। বিশেষ করে কমিটি ঘোষণার পরপরই তাদেরকে নতুন কমিটিতে না রাখায় অনেকেই মনে করেছিলেন এবার হয়তো তারা কেন্দ্রে যাচ্ছেন। তবে সেই আশায়ও গুড়েবালি। কারণ ঘোষিত নতুন কমিটিতে তাদের কাউকেই কোথাও রাখা হয়নি।
তবে আশার আলো এখনও পুরোপুরি ভাবে শেষ হয়ে যায়নি তাদের। কারণ কমিটি ঘোষণা করা হলেও গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি পদ এখনও ফাঁকা রয়েছে। এরমধ্যে কোষাধ্যক্ষ, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক, তিনটা সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ, উপ-প্রচার এবং উপ-দফতর সম্পাদকের পদ ফাঁকা রয়েছে। সিলেটের নেতাকর্মীরা এখনও আশায় আছেন যে; উপরোক্ত পদগুলোতে দলীয় সভানেত্রী তাদেরকে মূল্যায়ন করবেন।
এদিকে সদ্য বিদায়ী কমিটিতে আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন এইচ এন আশিকুর রহমান, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ছিলেন বর্তমান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী। ধর্মবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ।
সদ্য বিদায়ী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম পদোন্নতি পেয়ে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। সদ্য সাবেক কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের নাম ঘোষিত কমিটিতে আসেনি। সদ্য সাবেক কমিটির শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন আব্দুস সাত্তার, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন হাবিবুর রহমান সিরাজ।
উপ-প্রচার সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন আমিনুল ইসলাম আমিন এবং উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়াকে পদোন্নতি দিয়ে দফতর সম্পাদক করা হয়েছে। এছাড়া তথ্য ও গবেষণা সম্পাদকের পদও ফাঁকা রয়েছে