নিজস্ব প্রতিবেদকঃ একটি সফল সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়েছে সিলেট আওয়ামী লীগের। সেই সাথে সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের আনন্দ, উল্লাস শেষ হলেও তার রেশ চলছে এখনও। চলছে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসেব-নিকেশ। জেলা এবং মহানগরের সভাপতি ও সম্পাদক পদে প্রার্থী ছিলেন প্রায় দুই ডজনখানেক নেতা। কেন্দ্র ঘোষিত নাম ঘোষণার পর পরই অনেকের মুখে সেই চাপ লক্ষ করা গেছে। এ নিয়ে ভিতরে ভিতরে ক্ষোভ থাকলেও কেন্দ্রের প্রতি আনুগত্য প্রকাশে কার্পণ্য করেননি কেউই। ফলে জেলা ও মহানগরের নতুন নেতৃত্বেও প্রতি অভিনন্দন ও শুভকামনা জানিয়েছেন সকলেই। তাছাড়া, নব নির্বাচিত কমিটির প্রতি বিগত দিনের মতো এক সাথে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন প্রত্যেকেই।
গত ৫ ডিসেম্বর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন সিলেটে অনুষ্ঠিত হয় । এই সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি থেকে সভাপতি নির্বাচিত হন সিলেট জেলা পরিষদের সদস্য ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ এডভোকেট লুৎফুর রহমান। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে শফিকুর রহমানের স্থলে সাবেক তুখোর ছাত্রনেতা এডভোকেট নাসির উদ্দিন খানের নাম ঘোষণা করা হয়। ফলে দীর্ঘদিন থেকে দলের ত্যাগী নেতা হিসেবে পরিচিত শফিকুর রহমান চৌধুরী আচমকাই বাদ পড়ে যান সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে।
এদিকে, শফিকুর রহমান চৌধুরী বাদ পড়ায় অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েন শফিক চৌধুরীর অনুসারীরা। তাছাড়া দলের কর্মীবান্ধব এই নেতা এবারের সম্মেলনে সভাপতি পদে নির্বাচিত হতে পারেন-এমনটাই প্রত্যাশা করেছিলেন দলের অধিকাংশ নেত্কার্মী। কিন্তু সম্মেলনে কেন্দ্র ঘোষিত কমিটিতে শফিকুর রহমান চৌধুরীর নাম না থাকলেও নেতাকর্মীরা আরো কিছু ভালো খবরের প্রত্যাশায় আছেন বুক বেঁধে।তাছাড়া খোদ দলের সাধারণ সম্পাদকও নবনির্বাচিত সভাপতি ও সম্পাদকের কাছে বলে গেছেন শফিকুর রহমান চৌধুরীর বিষয়ে ।
সবাইকে অবাক করে দিয়ে দলের মহানগর শাখার নেতা বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে বাদ দেওয়া হয় সভাপতি পদ থেকে। সেই স্থানে সভাপতি হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাশুক উদ্দিন আহমদকে যুক্ত করা হয় সভাপতি পদে। এই সম্মেলন থেকেই সাধারণ সম্পাদক হিসেবে স্বনাম খ্যাত আসাদ উদ্দিন আহমদও বাদ পড়ে যান। বর্তমানে সাধারণ সম্পাদকের স্থানে নাম ঘোষণা করা হয় সাবেক ছাত্রনেতা অধ্যাপক জাকির হোসেনের নাম।
মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্থীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিলেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)-র পরিচালক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। সম্মেলনের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত নেতাকর্মীরা আশাবাদী ছিল ক্লিন ইমেজের এই রাজনীতিবিদ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবেন। কিন্তু নেত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটি অনুমোদন দেওয়ার পর হতাশ হয়ে পড়েন শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের অনুসারীরা।
কিন্তু নেতাকর্মীদের ভাবনা যে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে চমক আসতে যাচ্ছে। আর সিলেটের সকল নেতাকর্মীরা এখন সেই চমকের অপেক্ষায়।
হয়তোবা আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের মতো ত্যাগী নেতাকে মূল্যায়ন করা হবে। নেত্রী এরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করেন তার অনুসারীরা।
এ সম্পর্কে শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান যে, নেত্রী তৃণমূলের সকল খোঁজ-খবর রাখেন। তিনি নতুন নেতৃত্বকে স্বাগত জানিয়ে বলেন সবাইকে এক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মীদের নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।