নিজস্ব প্রতিবেদক::
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে ২০ বোতল বিদেশি মদ সহ গ্রেফতার করেছে সিলেট শাহপরান থানা পুলিশ।
গত বুধবার রাতে সিলেটের শাহপরান থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে নিশ্চিত করেন শাহপরান থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল কাইয়ুম।
শাহপরান থানার ওসি কাইয়ুম বলেন, গতরাতে এদের কে জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড স্কুল এন্ড কলেজের এলাকা মাদক পাচার কালে বিদেশী বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ২০ বোতল মদ সহ গ্রেফতার করা হয়।
আটককৃতরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী রতন রয়, রাশা শাহরিয়ার (২০১৫-১৬), রাকিবুল হাসান (২০১৭-১৮) ও জুবাইদুল অর্নব (২০১৫-১৬) সহ গাড়ী চালক সবুজ এবং কামরুল। এদের মধ্যে অর্নব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্কিত সংগঠন সাস্ট স্কুল অফ ডিবেটের কর্মী ছিলেন বলে জানা যায়।
ওসি আব্দুল কাইয়ুম বলেন, মাদক সহ এদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদ কে ফোনে না পেয়ে সহকারী প্রোক্টর ড. অধ্যাপক আলমগির কবীর এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমাদের ছাত্ররা বাহিরে কোনো বিপদে পড়লে আমরা তাদের সর্বাত্মক সাহায্য করার চেষ্টা করি। তবে কেউ যদি অনৈতিক কিছু করে কিংবা মাদক বহন ও সেবন অবস্থায় গ্রেফতার হয় সে অবস্থায় আমাদের কিছু করার নেই। এটা থানা পুলিশ দেখবে। তবে আমরক চাই আমাদের ছাত্ররা অনৈতিক এমন কিছুতে না জড়ায় যাতে তার সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয় ও সে বড় ধরণের বিপদে পড়ে।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ড. অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মাদক নির্মূলে আমরা জিরু টলারেন্স নীতির অধীনে আছি। আমাদের কোনো শিক্ষার্থী মাদক নিয়ে জীবন শেষ করে দিবে সেটা আমরা কখনোই চাই না। আমরা চাই, আমাদের সব শিক্ষার্থী যেন সর্বোপরি মাদক কে এড়িয়ে চলে। আর মাদক পরিহারে সচেতনতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার একান্ত সহযোগিতা কামনা করছি।
উল্লেখ্য, এর আগেও গত ৪ঠা আগস্ট দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে গাঁজাসহ সিলেট সদরের লাক্কাতুরা মন্দিরের কাছ থেকে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের দুই নেতাসহ আটক ৩জন কে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছে প্রায় ১০০ গ্রাম গাঁজা পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি।
উক্ত ঘটনায় আটকরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন, সমাজকর্ম বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইফফাত আহমেদ ও পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী ফজলে ইফাদ অনিক।
এ ঘটনার পর শাবি উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সহ বিভিন্ন সংগঠনের তাদের অভ্যন্তরীণ শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে মাদকাসক্ত শিক্ষার্থীদের তালিকা চেয়েছেন। যেনো এদেরকে কনসাল্টিং এর আওতায় নিয়ে আসা যায়।
এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মনে নানান ধরণের প্রশ্ন জাগে, বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধুই কি ছাত্রলীগ কর্মীরাই মাদকাসক্ত? নাকি সাধারণ শিক্ষার্থী ও সাংগঠনিক কর্মীরাও মাদক সেবনে পিছিয়ে নেই?
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল বডি, সাধারণ শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সূত্রের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায়, অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ই-বিল্ডিংস্থ কবীরের টঙ, মাসুকের টং সহ বেশ কিছু স্থানে গাঁজা সেবন করে দীর্ঘদিন থেকে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয় নিয়ে তৎফর থাকলেও সংস্কৃতি কর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সেবনকার্য চালিয়ে যাচ্ছে।