০৯ ডিসেম্বর ২০১৯ইং, সোমবার বিকাল ৩:৩০ ঘটিকায় চেম্বার কনফারেন্স হলে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার জনাব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ এর সাথে দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র নেতৃবৃন্দের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের সভাপতি জনাব আবু তাহের মোঃ শোয়েব। সভায় বিভাগীয় কমিশনার বলেন, জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যবসায়ীদের অবদান অনস্বীকার্য। ব্যবসায়ীদের প্রদানকৃত রাজস্বের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালিত হয়। তাই ব্যবসায়ীদের সুবিধা-অসুবিধার প্রতি লক্ষ্য রাখা প্রশাসনের নৈতিক দায়িত্ব। তিনি জানান, গোয়াইনঘাটে নতুন স্টোন ক্রাশিং জোন করার জন্য ১০০ একর জমি ও অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ নিয়ে কিছুটা জটিলতা থাকায় কাজটি শুরু করতে বিলম্ব হচ্ছে। তিনি সিলেট চেম্বারকে এ ব্যাপারে নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার আহবান জানান। তিনি বলেন, আয়কর সংক্রান্ত ব্যবসায়ীদের যেকোন সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ৩৩৩ হটলাইন চালু করা হয়েছে। এ নম্বরে ডায়াল করে ব্যবসায়ীরা আয়কর সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। বিভাগীয় কমিশনার আরো বলেন, সিলেট হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগের লক্ষ্যে প্রকৃত বিনিয়োগকারীদের নিয়ে সিলেট চেম্বারের সাথে একটি সভা আয়োজন করা হবে। তিনি জানান, সিলেটের পর্যটন খাতকে প্রমোট করার জন্য বিভাগীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোবাইল এপ্স তৈরী করা হচ্ছে। এছাড়াও সিলেট-চট্টগ্রাম রেললাইন সংস্কারে তিনি উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলে জানান। তিনি সিলেটের ব্যবসায়ীদের সমস্যাবলী সমাধানে পরিবেশ অধিদপ্তর, ভোক্তা অধিকার, বিএসটিআই ও ভ্যাট-ট্যাক্স বিভাগের সাথে সমন্বয় করে একটি যৌথসভা আয়োজন করবেন বলে জানান।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি জনাব আবু তাহের মোঃ শোয়েব বলেন, সিলেট চেম্বার অব কমার্স ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংরক্ষণের পাশাপাশি সরকারী উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ ও ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নে সরকারকে সহযোগিতা করে থাকে। আইটি খাতে সিলেটকে এগিয়ে নিতে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্ক স্থাপনের জন্য তিনি বর্তমান সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং সিলেটে বিনিয়োগকে ত্বরান্বিত করতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা জরুরী বলে মন্তব্য করেন। তিনি উল্লেখ করেন, সিলেট-আখাউড়া রেলপথে উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে দূর্ঘটনা। ১৭৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এ রেললাইনে নেই পর্যাপ্ত হুক, ফ্রিশ প্লেট এবং ক্লিপ। অধিকাংশ কাঠের স্লিপারই নষ্ট। যার জন্য ট্রেইন লাইনচ্যুতি ও দূর্ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। তিনি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি সিলেটের ট্যুরিস্ট স্পটগুলোতে কৃত্রিম বিনোদনের ব্যবস্থা গ্রহণ, নিরাপত্তা জোরদারকরণ, স্পটগুলোতে মেডিকেল সেন্টার স্থাপন, রিমোট এলাকার পর্যটকদের জন্য পর্যাপ্ত পরিবহন ব্যবস্থা করা সহ বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন। তিনি পরিবেশ অধিদপ্তর, কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, ভোক্তা অধিকার সহ বিভিন্ন সরকারী সংস্থার সাথে ব্যবসায়ীদের জটিলতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এ ব্যাপারে বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়ের সহযোগিতা কামনা করেন।
সভায় বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি চন্দন সাহা, সহ সভাপতি তাহমিন আহমদ, মোঃ এমদাদ হোসেন, মোঃ সাহিদুর রহমান, পিন্টু চক্রবর্তী, আব্দুর রহমান, ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, মোঃ আতিক হোসেন, ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী, আমিনুজ্জামান জোয়াহির, বিভাগীয় কমিশনারের একান্ত সচিব গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।