শরীফ আহমদ:
রাত পোহালেই সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের কাঙ্খিত সম্মেলন। কারা হচ্ছেন সিলেট আওয়ামী লীগের কাণ্ডারি? এ নিয়ে সবার মাঝে জিজ্ঞাসা যেমন, তেমনি ভেতরে ভেতরে এক ধরণের উত্তেজনা বিরাজ করেছে কর্মী আর সমর্থকদের মাঝে। তবে পদ প্রত্যাশী নেতারা সবাই থাকিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার দিকে।
নাম প্রকাশে এক পদ প্রত্যাশী নেতা বলেন, বর্তমানে সারা দেশের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্বয়ং সভানেত্রী শেখ হাসিনা দেখাশোনা করছেন। গোয়েন্দা প্রতিবেদনে যার নাম ‘গুড বুকে’ লিখা হচ্ছে তিনিই নেতৃতে আসার সম্ভাবনা বেশি। তবে এখানে কারো হাত নেই। নেই কোনো সুপারিসের সুযোগ। নেত্রী যাকে যোগ্য মনে করছেন তাকেই নেতৃত্বের দায়িত্ব প্রধান করছেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে হলে পদ প্রত্যাশী নেতারা নেত্রীর উপর ভরসা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নাই।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমান রাজনীতির প্রেক্ষাপটে নেতাদের দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে নেত্রী স্বয়ং সাংগঠনিক বিষয়গুলো দেখাশোনা করছেন। এতে করে বহিরাগত, দুর্নীতিবাজ, টেন্ডারবাজ, সন্ত্রাসী, জনগণের সম্পদ লুণ্ঠনকারি ও রাজনৈতিক পদ ব্যবহার করে সুবিধাভোগীরা ক্ষমতায় আসতে পারছে না, আর পারবেও না।
সম্মেলনকে নিয়ে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক জগলু চৌধুরী বলেন, মনে যদি বড় স্বপ্ন থাকে, তাহলে তো উত্তেজনা আর উৎকণ্ঠায় থাকবেই। তবে আমরা সুশৃঙ্খলভাবে সম্মেলন সফল করতে বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন- ছাত্রলীগ দিয়ে আমার রাজনীতি শুরু। দীর্ঘকাল ধরে দলের জন্য কাজ করছি। নেত্রী (শেখ হাসিনা) চাইলে আমি দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত আছি। নেত্রী যাকেই মনোনীত করবেন তাকেই সাদরে গ্রহণ করবো।
সিলেট আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব পর্যায়ে পদ পাওয়া নিয়ে বর্তমান সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, নেতাকর্মীদের আশা সম্মেলনে মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়াবে সিলেট আওয়ামী লীগ। গতিশীল হবে দলীয় কার্যক্রম। কমিটিতে স্থান পাবেন ত্যাগী ও যোগ্য নেতারা।
তিনি বলেন, আমি সভাপতি প্রার্থী। তবে সবকিছু নির্ভর করে নেত্রীর ওপর। তিনি যে সিদ্ধান্ত দিবেন তা মেনে চলবো। যদি কোন পদ না পাই তাহলেও নেত্রী যাকে মনোনীত করবেন তাকেই হাসি মুখে মেনে নিব।
এদিকে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘সম্মেলনের জন্য পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা বেড়েছে।
নিজের রাজনৈতিক জীবনের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন- ‘আমি দীর্ঘদিনে ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত। বিগত দিনে নেত্রী যেভাবে বলছেন তা মেনে নিয়েছি। এখনও সিলেট জেলা ও মহানগরে নেত্রী যাকেই মনোনীত করবেন তাকেই সাদরে গ্রহণ করবো।’
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) সাবেক মেয়র ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন কামরান বলেন, সিলেট মহানগর সম্মেলনও উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হবে বলে আশা করছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার কোনো কিছু বলার নাই। তবে নেত্রী যাকেই মনোনীত করবেন তার নেতৃত্বই মেনে নিবো। নেতা নির্বাচনে নেত্রী কখনই ভুল করবেন না এমনটাই আমার বিশ্বাস। দলকে এগিয়ে নিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে। পদ পদবী অনেকই প্রত্যাশা করতে পারে তবে সবাই তো আর এক সাথে পদ পাবে না। নেত্রী যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকেই নেতৃত্ব দিবেন। এখানে নেত্রীই একমাত্র ভরসা।
এদিকে বর্তমানে সিলেট নগরজুড়ে চলছে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের প্রস্তুতি। দলীয় সূত্রে জানা যায়, ৫ ডিসেম্বর সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে বেলা ১১টায় মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন শুরু হবে। সম্মেলন শেষে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। ত্রি-বার্ষিক এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।