Please Share This Post in Your Social Media
নিজের মালিকানাধীন জমির দখলকারদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা তুলে না নেওয়ায় সমাজচ্যুত করার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দক্ষিণ সুরমার লালাবাজারের খাজাখালু গ্রামের মৃত হাজী মো. আনফর আলীর স্ত্রী রিনা বেগম। তিনি বলেন, গ্রামের বাড়ির সীমানা নিয়ে স্থানীয় রিপন গংদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে তার বিরোধ চলে আসছিল, এ নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতও কোন সুরাহা করতে পারেনি। সম্প্রতি ওই পক্ষের লোকেরা জমি দখল করতে এসে তাদের মারধর করে গুরুতর আহত করে। এ ঘটনার পর তিনি তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এরপর রিপন গংদের দ্বারা প্রভাবিত এলাকার মুরব্বিরা এক জোট হয়ে থানায় উপস্থিত হয়ে বিষয়টি ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন, এবং তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করেন। একপর্যায়ে মামলা না তুলে নিলে তাদের সমাজচ্যুত (একঘরে) করে রাখার হুমকিও দেন মুরব্বিরা। এরই প্রেক্ষিতে গত সোমবার তাদের একঘরে করা হয় বলে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন তিনি। রিনা বেগমের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নাজিম উদ্দিন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘খাজাখালু গ্রামের সিকন্দর আলীর ছেলে রিপন আহমদ(৩০), ফরমুজ আলীর ছেলে ফয়জুল(৩৫), তছলু(৩৩) ও মজলু(৩২), মান্নান মিয়ার ছেলে খলিল(৩৩), জলিল(২৭), ফলিক(৩২), ইয়াবুর আলীর ছেলে ইসলাম(২০), হাছন মিয়ার ছেলে আলী আহমদ(২২), মালিক মিয়ার ছেলে আলমগীর(২০), চমক আলীর ছেলে লায়েক (২৩) আমাদের প্রতিবেশী হন। তাদের সাথে আমার বাড়ীর পূর্ব প্রান্তের সীমানা নিয়া দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। উক্ত বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ইতিপূর্বে বার বার স্থানীয় বিচার পঞ্চায়েত বসেও কোন সুরাহা করতে পারেন নাই। বিরোধীয় ভূমির সীমানা নির্ধারণের জন্য একজন বিজ্ঞ সার্ভেয়ার চেয়ে আমি ইতিপূর্বে আমি জেলা প্রশাসকের বরাবরে আবেদন করলে তিনি তা আমলে নেন। পরবর্তীতে সহকারী কমিশনার (ভূমি), দক্ষিণ সুরমা অফিস থেকে কাজল নামের একজন বিজ্ঞ সার্ভেয়ার প্রেরণ করেন। বিজ্ঞ সার্ভেয়ার কাজল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয় মুরব্বিয়ান ও সালিশানগণ সামিলে বিরোধীয় ভূমির সীমানা নির্ধারণ করেন। এমনকি ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে পাকার পীলার স্থাপনও করেন। কিন্তু অভিযুক্তরা এই জরিপে সন্তোষ্ট না হয়ে আমাকে আমার বাড়ী থেকে উচ্ছেদ কিংবা প্রাণনাশের চেষ্টায় বার বার আমার ও আমার পরিবারের প্রতি আক্রোশান্বিত হয়ে নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, গত ১১ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টায় বর্ণিত রিপন আহমদ গং আমার স্বত্ব দখলীয় ভূমিতে অস্ত্রে-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অনাধিকার প্রবেশ করে। দেওয়ালের ভিতরে থাকা বিভিন্ন প্রজাতীর প্রায় লক্ষাধিক টাকা মূল্যের গাছ-গাছালি কর্তন করে। তাদের এমন কাজে বাধা দিলে তারা আমাকে ও আমার পরিবারকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। এসময় আমি ও আমার পরিবারের নারী-শিশুসহ ৫জন গুরুতর আহত হই।’
এ ঘটনার পর দক্ষিণ সুরমা থানায় গেলে পুলিশ তার মামলা নিতে চায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুলিশ স্থানীয়ভাবে বিষয়টি সমাধান করতে বলে। এর উত্তরে আমি জানাই, এর আগেও আমি কয়েকবার রিপনদের দ্বারা নির্যাতিত হয়ে বিচার পঞ্চায়েতের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। কেউ আমার বিচারে এগিয়ে আসে নি। কয়েক বার এমন ঘটনার শিকার হয়েও আমি স্থানীয়ভাবে বিচার পাই নি। আজ যারা আমাকে বিচার মানতে বলছেন, সেইদিন আমি তাদের কাছেই গিয়েছিলাম। কিন্তু কেউ আমার বিচার করেননি। আমি স্থানীয় বিচার চাই না। থানা পুলিশ মামলা না নিলে আমি উপর মহলে যাবো। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হবো। পরে প্রায় ৪ দিন পর থানা পুলিশ আমার মামলাটি রেকর্ড করেন। যার মামলা নং- ১৮/২০১৯। তবে এখনও আসামীরা ধরাছোয়ার বাইরে।’
সর্বশেষ সোমবার তার পরিবারকে একঘরি করা হয়েছে মর্মে বিচার পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এমতাবস্থায় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন। তার জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণে তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
Related