November 24, 2024, 2:26 pm

সংবাদ শিরোনাম :
সেইলরের নতুন পূজা কালেকশন সেজে উঠুন আপনিও রুদ্র নিহতের ঘটনায় সিলেটে মামলা, আসামি ৩ শতাধিক বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের পরিচয় আসাদুজ্জামান ও ওবায়দুল কাদেরর নিষেধাজ্ঞা দিতে আহ্বান মার্কিন কংগ্রেসের ৬ সদস্যের নোবেলজয়ী থেকে সরকার প্রধান কে এই ড. ইউনূসের বড়লেখাবাসীকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানালেন সমাজসেবক সাইদুল ইসলাম নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইক্রবাস খাঁদে”পুলিশেরে সাহসী ভূমিকায় বেঁচে গেল ১১ টি প্রান” সিলেটে কমছে বন্যার পানি, বর্ষায় বাড়ছে রোগবালাই আগামীকাল সিলেট ফিরছেন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান বাজেটে বাড়ছে বিড়ি-সিগারেটের দাম প্রধানমন্ত্রী পদে মোদীকে সমর্থন নাইডু ও নীতিশের হুয়াওয়ের ‘উইমেন ইন টেক’ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা সিলেটে অবৈধভাবে আসা ২ কোটি টাকার ভারতীয় চিনি জব্দ সিলেট মহানগর যুবলীগের ৪ নং ওয়ার্ড কমিটি গঠন”সভাপতি পদে শাকিল নির্বাচিত চোরাচালান লাইনম্যান রুবেল আহমদ বেপরোয়া জমির ধান নষ্ট করে দিলো প্রতিপক্ষ: দিশেহারা কৃষক সিলেটে ইট ভাটা নিয়ে নজিরবিহীন কেঙ্ককারী বিশ্ব গাজায় হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করছে, বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না : প্রধানমন্ত্রী সুজানগর ইসলামী সমাজকল্যাণ পরিষদের কমিটি গঠন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে উন্মুক্ত সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত মাওলানা লুৎফুর রহমানের মৃত্যু ”গুজব সংবাদ ফেসবুকে” বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত বিজিবির নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) পদে নিয়োগ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে জোরালো ভূমিকা নিতে হবে সচিবদের :প্রধানমন্ত্রীর সিলেটে বিজয় দিবসে গানের অনুষ্ঠানে সংঘর্ষ:নিহত-১ বইমেলা বাঙালি জাতিসত্তা দাঁড় করাতে সহায়ক : কবি নুরুল হুদা বন্ধুকে বিদেশ পাঠানোর সহযোগীতায় বন্ধু খুন দুর্নীতি-অনিয়ম র অভিযোগে ডৌবাড়ী প্রবাসী কল্যাণ ট্রাস্টের ৪ সদস্য বহিষ্কারের অভিযোগ ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী গোয়াইনঘাটের শীর্ষ কুখ্যাত চোরাকারবারী কালা মিয়া
জোড়াতালির রেললাইনে ‘মৃত্যুফাঁদ’

জোড়াতালির রেললাইনে ‘মৃত্যুফাঁদ’

Please Share This Post in Your Social Media

পুরাতন বগি, জোড়াতালির রেললাইন, আর দীর্ঘ দিনের সংস্কারের অভাবে দিনে দিনে মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে আখাউড়া- সিলেট রেল রুট। বিভিন্ন স্থানে স্লিপারে নেই নাট-বল্টু। এমনকি বাঁশ দিয়েও মেরামত করা হয়েছে রেলসেতু। যার কারণে বিভিন্ন সময় ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই রেল কর্তৃপক্ষের।

ব্রিটিশ আমলে ১৮৯১ সালে এ অঞ্চলে রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। সেই সময়ে নির্মিত লাইনে ভর করেই চলছে পূর্বাঞ্চলের রেলপথ। লক্কড়-ঝক্কড় কোচ আর প্রায় একশ পঁচিশ বছর আগে নির্মিত রেল লাইনের কারণে এই রুটে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয় ট্রেন। তবুও টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের। রেললাইন ও সেতু সংস্কারে নেয়া হয়নি তেমন কোনো উদ্যোগ। ২০১৯ সালে শুধু সিলেট রুটে যত দুর্ঘটনা ঘটেছে, এতো দুর্ঘটনা দেশের অন্য কোনো রুটে ঘটেনি।

চলতি বছরের ২৩ জুন রাতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল এলাকায় ট্রেন দুর্ঘটনায় চার যাত্রী নিহত ও শতাধিক আহতের ঘটনার মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে ১১ নভেম্বর দিবাগত রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলস্টেশনে উদয়ন এক্সপ্রেস ও তূর্ণা নিশীথার দুর্ঘটনায় ১৭ জনের মৃত্যু এই রুট নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগকে আবারও সামনে এনেছে। শুধু লাইন নয়, এ রুটের সেতুগুলোও মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।

খোদ রেল বিভাগের মতে সিলেট-আখাউড়া রেলপথের ১৭৯ কিলোমিটারের মধ্যে ১৩টি সেতু মরণফাঁদ। যদিও সচেতন মহলের মতে এই সেকশনের সবগুলা সেতুই ঝুঁকিপূর্ণ৷

এর আগে গত ৯ মার্চ সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারা রেলসেতুর দক্ষিণে রেললাইন এক ফুট জায়গা ভেঙে যায়। সেদিন জয়ন্তিকা ট্রেন ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পায়। বেঁচে যান কয়েকশ মানুষ।

সেদিন রাতেই আবার কুলাউড়ার মাইজগাঁও স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় সার বহনকারী বিসি স্পেশাল ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হয়।

এছাড়া গত ৫ এপ্রিল দুপুরে সিলেট-মাইজগাঁও রেলস্টেশনের মধ্যবর্তী মোগলাবাজার এলাকায় কুশিয়ায়া এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনে অগ্নিকাণ্ড ঘটে।

গত ১৬ মে বেলা ১১টার দিকে ফেঞ্চুগঞ্জ কুশিয়ারা সেতু পার হয়ে মল্লিকপুর এলাকায় একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়।

আর গত ২৩ জুন রাতে উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন মৌলভীবাজারের কুলাউড়া স্টেশনে যাওয়ার আগে বরমচাল অতিক্রম করে মনছড়া রেলসেতু পার হওয়ার সময় ৬টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে চারজন নিহত ও দুই শতাধিক মানুষ আহত হন।

গত ১৯ জুলাই আন্তঃনগর জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া জংশনে ঢোকার সময় লাইনচ্যুত হয়। পরের দিন সেখানে লাইনচ্যুত হয় আন্তঃনগর কালনী এক্সপ্রেসের একটি বগি। গত ১৬ আগস্ট ফেঞ্চুগঞ্জের মাইজগাঁও রেলস্টেশনে ঢাকাগামী আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়। ৪ সেপ্টেম্বর একই উপজেলার মল্লিকপুরে লাইনচ্যুত হয় আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেস আর ১৭ সেপ্টম্বর দুপুরে জালালাবাদ ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। গত ৪ অক্টোবর একই ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় সিলেট থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার পথে লাইনচ্যুত হয়।

পরিসংখ্যান বলছে, শুধু ২০১৯ সালে সিলেট রুটে যত দুর্ঘটনা ঘটেছে, এতো দুর্ঘটনা দেশের অন্য কোনো রুটে ঘটেনি। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় জোনের তথ্য মতে, আখাউড়া-সিলেট রেলপথে পারাবত, জয়ন্তিকা, পাহাড়িকা, উদয়ন, উপবন ও কালনী এক্সপ্রেস নামের ৬টি আন্তঃনগর ট্রেন প্রতিদিন গড়ে ১২ বার চলাচল করে। এসব যাত্রায় প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫ হাজার যাত্রী সিলেট-ঢাকা এবং সিলেট-চট্টগ্রাম পথে ভ্রমণ করেন। ভ্রমণকারীদের বেশির

ভাগই নিরাপদ যাত্রার মাধ্যম মনে করে রেলকে বেছে নেন। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটি ও দুর্ঘটনার কারণে এই রেলপথে চলাচল দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয় ট্রেন। তবুও টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের। রেললাইন ও সেতু সংস্কারে নেয়া হয়নি তেমন কোনো উদ্যোগ।

রেলওয়ের প্রকৌশল শাখা সূত্রে জানা গেছে, সিলেট-আখাউড়া সেকশনের ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলোর মধ্যে রয়েছে শমসেরনগর-টিলাগাঁও সেকশনের ২০০ নম্বর সেতু, মোগলাবাজার-মাইজগাঁও সেকশনের ৪৩, ৪৫ ও ৪৭ নম্বর সেতু, কুলাউড়া-বরমচাল

সেকশনের ৫ ও ৭ নম্বর সেতু, সাতগাঁও-শ্রীমঙ্গল সেকশনের ১৪১ নম্বর সেতু, শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ সেকশনের ১৫৭ নম্বর সেতু, মাইজগাঁও-ভাটেরাবাজার সেকশনের ২৯নং সেতু এবং মনতোলা-ইটাখোলা সেকশনের ৫৬ নম্বর সেতু।

সেতু সংস্কারের কোনো প্রকল্প না থাকায় এগুলোর সংস্কার সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের
কর্মকর্তারা।

সরেজমিনে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল স্টেশনের ১ কিলোমিটার দূরে আউট সিগনাল এলাকায় খালের উপর একটি ব্রিজে গিয়ে দেখা যায়, ৮টি স্লিপারে ৬৪টি নাট থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ৩৫টা। এর পাশেই দুটি পাতের সংযোগস্থলে একটিতে নেই কোনো নাট-বল্টু। অন্য দুটি যেন খুলে না যায় তাই
আটকানো আছে দড়ি দিয়ে।

অপরদিকে এই ব্রিজের পাশে একটানা ৩০টি স্লিপারের কোনোটাতেই নাট-বল্টু খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রতিটি স্লিপারের দুইপাশে দুটি করে পেরেক মেরে রাখা হয়েছে। ফলে যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে সেখানে।

এছাড়া নড়বড়ে বগি দিয়ে সিলেট রুটে সবকটি ট্রেন চলাচল করছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। এর বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ করেছেন সিলেটবাসী। তবে বগি পুরাতন মানতে রাজি নয় রেল কর্তৃপক্ষ।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (কারখানা) কাজী মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, বগিগুলো পুরোনো বলা যাবে না। বিভিন্ন সময় বগিগুলো যুক্ত করা হয়েছে। তার ওপর যাত্রীদের চাপ থাকলেও এই এলাকায় নেই রেলের পর্যাপ্ত কোচ। উল্টো দিনে দিনে কমিয়ে দেয়া হচ্ছে কোচ।

উদয়ন ও পাহাড়িকার যাত্রা শুরু করেছিল ১৪টি বগি নিয়ে। কিন্তু বর্তমানে এ সংখ্যা কমিয়ে আছে ৯টি। ২০১৪ সালে সিলেট-ঢাকা রুটে ১৪টি বগি নিয়ে যাত্রা শুরু করে কালনি এক্সপ্রেস। পরের বগির সংখ্যা কমিয়ে আনা হয় চারটিতে। ২০১৭ সাল পর্যন্ত ওই চারটি বগি নিয়েই যাত্রী পরিবহন করে ট্রেনটি। এরপর ২০১৮ সালের শুরুর দিক থেকে আটটি বগি করা হয়েছিল। তবে পরে একটি বগি কমিয়ে দেয়া হয়। জয়ন্তিকা ও উদয়ন এক্সপ্রেস মাঝখানে কমে ১২টি বগি নিয়ে চলাচল করে। পরে অবশ্য আরও চারটি বগি যুক্ত করা হয়। পারাবত এক্সপ্রেসে ১৫টি থেকে তিনটি কমানো হলেও এখন ১৬টি বগি নিয়ে চলছে।

১৮৯১ সালে আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ের বাংলার পূর্ব দিকে রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয় আসামে চা রোপণকারীদের দাবির প্রেক্ষিতে। ধীরে ধীরে এই অঞ্চলে রেল যোগাযোগ বাড়ে। ১৯১২-১৫ সালে কুলাউড়া-সিলেট রুট নির্মিত হলে চালু হয় সিলেট রেলওয়ে স্টেশন। এই রুটে মিটার গেজে চলাচল করছে ট্রেন। ডাবল লাইনের দাবি এলাকার মানুষের অনেক দিনের।

এ বিষয়ে সিলেট বিভাগীয় নাগরিক আন্দোলনের নেতা আব্দুল করিম কিম জানান, দেশের অন্যসব জায়গায় রেললাইন উন্নত করা হলেও সিলেট রুট অদৃশ্য কারণে সেই ছোঁয়া পায়নি। রেললাইন, বগিসহ সবকিছুই মান্ধাতা আমলের। যার কারণে কিছুদিন পরপর ঘটছে দুর্ঘটনা।





Calendar

November 2024
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  



  1. © সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2017 sylhet71news.com
Design BY Sylhet Hosting
sylhet71newsbd