পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে গতকাল শনিবার (০৯ নভেম্বর) আধ্যাত্মিক রাজধানী পুণ্যভূমি সিলেট নগরীতে হাজার হাজার মানুষের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘মুবারক র্যালি’। সুন্নী ছাত্র কাফেলা বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এ ‘মুবারক র্যালি’তে অংশগ্রহণের জন্য প্রতিকুল আবহাওয়া উপেক্ষা করে সকাল থেকেই সোবহানীঘাটস্থ হযরত শাহজালাল দারুচ্ছুন্নাহ্ ইয়াকুবিয়া কামিল মাদরাসা ময়দানে সিলেট বিভাগের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা জমায়েত হন। সকাল ১০টা থেকে যুহরের পূর্ব পর্যন্ত প্রিয়নবী (সা.)-এর জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী ও অতিথিবৃন্দ। বাদ যুহর শুরু হয় র্যালি। প্রিয়নবীর শানে রচিত কালজয়ী নানা কবিতার শ্লোক অঙ্কিত রঙবেরঙের ফেস্টুন ও প্লেকার্ড র্যালিতে শোভাবর্ধন করে। আশিকে রাসূল ছাত্র-জনতার সুরে সুরে ধ্বনিত হয় প্রিয়নবীর প্রশংসাগীতি। সালাম সালাম নবী সালাম সালাম, মাওলা ইয়া সাল্লি ওয়া সাল্লিম, বালাগাল উলা-বি কামালিহি, শামছুদ্দুহা আস্সালাম, … এ রকম অগণিত নাত-এর সুমধুর সুর লহরি নগরীর আকাশ বাতাস মুখরিত করে। বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী (সা.) র্যালি বাস্তবায়ন কমিটি সিলেট এর উদ্যোগে আয়োজিত এ র্যালীতে নেতৃত্ব দেন শামসুল উলামা হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)’র সুযোগ্য ছাহেবজাদা অধ্যক্ষ মাওলানা কমরুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী, আনজুমানে আল ইসলাহর মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা একেএম মনোওর আলী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি এডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিব, আনজুমানে আল ইসলাহর সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা ছরওয়ারে জাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মঈনুল ইসলাম পারভেজ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মাহমুদ হাসান চৌধুরী, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা নজমুল হুদা খান, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি আখতার হোসাইন জাহেদ, সহ সভাপতি দুলাল আহমদ, মুহাম্মদ মুহিবুর রহমান, মাছুম আহমদ, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূনুর রহমান লেখন ও সিলেট জেলা ব্যবসায়ী ঐক্যকল্যাণ পরিষদের সভাপতি আলহাজ্ব শেখ মকন মিয়া প্রমুখ। র্যালি বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক মোজতবা হাসান চৌধুরী নোমান’র সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব জাহেদুর রহমান ও সিলেট পশ্চিম জেলা সভাপতি শেখ আলী হায়দার এর যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত র্যালিপূর্ব আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)’র সুযোগ্য ছাহেবজাদা অধ্যক্ষ মাওলানা কমরুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী। প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি আখতার হোসাইন জাহেদ। সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন আনজুমানে আল ইসলাহর মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা একেএম মনোওর আলী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি এডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিব, আনজুমানে আল ইসলাহর সাংগঠনিক সম্পাদক ও মাহফিলে মীলাদুন্নবী (সা.) বাস্তবায়ন কমিটির আহŸায়ক মাওলানা মঈনুল ইসলাম পারভেজ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মাহমুদ হাসান চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলানা আবু জাফর মো. নুমান, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা নজমুল হুদা খান, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক এবং মাহফিলে মীলাদুন্নবী (সা.) বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মাওলানা আজির উদ্দিন পাশা, পাঠাগার সম্পাদক হাফিয মাওলানা নজীর আহমদ হেলাল, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাওলানা বেলাল আহমদ, তালামীযে ইসলামিয়ার সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলান মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, মাওলানা রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী, সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা হাসান চৌধুরী গিলমান, কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি দুলাল আহমদ, মুহাম্মদ মুহিবুর রহমান, মাছুম আহমদ, সহ সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ উসমান গণি, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ালীউর রহমান সানী ও । র্যালি বাস্তবায়ন কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ও তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আহমদ আল জামিল এর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে সূচিত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বিশ্বমানবতার এক ক্রান্তিলগ্নে দুনিয়ার বুকে তাশরীফ এনেছিলেন। তখন মানুষে মানুষে ছিল হানাহানি। চারিদিকে ছিল অসত্য আর অন্যায়ের জয়জয়কার। দুঃশাসনের যাতাকলে নিষ্পেষিত ছিল মানব সমাজ। বিশেষ করে নারীরা ছিল সকল দিক থেকে নির্যাতিত-নিপীড়িত। মানুষ হিসেবে তাদের কোনো মূল্য ছিল না। কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দেওয়া হতো। মযলুমের স্ফুট-অ¯ফুট চিৎকারে ভারী হয়ে গিয়েছিল দুনিয়ার আকাশ বাতাস। তখন মানুষকে প্রকৃত মানবিক মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে দুনিয়ার বুকে তাশরীফ এনেছিলেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। তিনি ছিলেন বিশ্বমানবতার জন্য আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ করুণা ও অনুগ্রহ। তিনি সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় তথা সার্বিক দিক থেকে অধঃপতনের চরম সীমায় নিমজ্জিত সমাজকে খোদায়ী নির্দেশনার আলোকে সম্পূর্ণরূপে বদলে দিয়েছিলেন। তাঁর জীবনদর্শনে ব্যক্তি ও সমাজ জীবনের সর্বোত্তম ও পরিপূর্ণ আদর্শ নিহিত রয়েছে। সে আদর্শ অনুসরণে সমাজে শান্তি, স¤প্রীতি, সৌহার্দ্য, ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। প্রিয়নবীর প্রতি যেমন সর্বোচ্চ ভালোবাসা লালন করতে হবে তেমনি তাঁর সুমহান আদর্শ অনুসরণ, চর্চা ও প্রচার-প্রসারে আমাদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। র্যালি ও র্যালিপূর্ব আলোচনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আনজুমানে আল ইসলাহ’র অর্থ সম্পাদক মাওঃ আবু ছালেহ মোঃ কুতবুল আলম, অফিস সম্পাদক মাওলানা আতাউর রহমান, সিলেট মহানগর আল ইসলাহর সভাপতি আলহাজ্ব শাহজাহান মিয়া, সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আলমগীর হোসাইন, আন্জুমানে আল ইসলাহর কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম খান, কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফজলুল হক খান সাহেদ, জকিগনজ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুস সবুর, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান,তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সহ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জায়েদ আহমদ চৌধুরী, অর্থ সম্পাদক খন্দকার অজিউর রহমান আসাদ, অফিস সম্পাদক আব্দুল মুহিত রাসেল, সহ-অফিস সম্পাদক তৌরিছ আলী, মুজিবুর রহমান, প্রশিক্ষণ সম্পাদক সুলতান আহমদ, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান ফরহাদ, সহ-শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম তালুকদার, শাবিপ্রবি সভাপতি মনজুরুল করিম মহসিন, মৌলভী বাজার জেলা আহবায়ক আব্দুল জলিল, পূর্ব জেলা সভাপতি কামাল উদ্দিন, হবিগন্জ জেলা সভাপতি নাসির উদ্দিন খান ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় জোন সিলেট শাখার সভাপতি মাসরুর হাসান জাফরী, মহানগরী সাধারণ সম্পাদক এসএম মনোয়ার হোসেন, সিলেট পশ্চিম জেলা সাধারণ সম্পাদক কবির আহমদ, সুনামগনজ জেলা সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গণি সোহাগ, পূর্ব জেলা সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আহমদ বাবু, হবিগনজ জেলা সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম ও মৌলভীবাজার জেলা সদস্য সচিব জিল্লুর রহমান প্রমূখ। সিলেটবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা: তালামীযে ইসলামিয়া আয়োজিত পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী (সা.) র্যালীকে সফল ও সার্থক করে তোলাসহ সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য সর্বস্তরের সিলেটবাসী, প্রশাসন, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া কর্মীদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন র্যালি বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক মোজতবা হাসান চৌধুরী নোমান ও সদস্য জাহেদুর রহমান চৌধুরী। তারা র্যালির কারণে নগরবাসীর যাতায়াতে সাময়িক বিঘœ ঘটায় আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি