সিলেটের দক্ষিণ সুরমার দক্ষিণ কুশিঘাট এলাকায় সুরমা নদী থেকে অবৈধ ভাবে নিষিদ্ধ ড্রেজার ও টমট মেশিন দ্বারা বালু উত্তোলন করছে একটি প্রভাবশালী মহল। সুরমা নদীর দক্ষিণ সুরমার দক্ষিণ কুশিঘাট স্থান থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু উত্তোলন বন্ধের দাবীতে এলাকাবাসী দক্ষিণ সুরমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা ভ‚মি ও মোগলাবাজার থানা সহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রশাসনের লোকজন গত ২৬ অক্টোবর সরেজমিনে গিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ রাখার নির্দেশন দেন। প্রশাসনের নিষেধের পর বালু উত্তোলন কয়েকদিন বন্ধ হলেও গত ৩ নভেম্বর থেকে আবারো প্রভাবশালী মহল বালু উত্তোলন শুরু করেছে। এতে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের রক্তাক্ত সংঘর্ষের মত ঘটনা।
আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে বালু উত্তোলন বন্ধ করা না হলে এলাকাবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে সিলেট জকিগঞ্জ সড়ক অবরোধ করার ঘোষণা দিয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, বালু উত্তোলনের ফলে নদীর পাড়ে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ড্রেজারের শব্দে রাতে এলাকার লোকজন ঘুমাতে পারছেন না। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটছে। শব্দের কারণে রোগীদের অসুস্থতা আরো বাড়ছে। এছাড়াও এলাকার মসজিদ, মাদরাসার, স্কুল সহ অসংখ্য বাড়ীঘর ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে। নদী তীরবর্তী গ্রাম নদী গর্ভে হারিয়ে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
যে স্থান থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে সেখান দিয়ে জালালাবাদ গ্যাস লিমিটেডের মূল লাইন ও সিসিকের পানি উত্তোলনের লাইন রয়েছে। বালু উত্তোলনকালে যে কোন সময় গ্যাস লাইন ছিদ্র হয়ে বিষ্ফোরণের মত ঘটনা ঘটতে পারে। বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙ্গনের ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়েছে এলাকার কয়েক হাজার পরিবার।
জানা যায়, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২৭নং ওয়ার্ডের সুরমা নদীর তীরবর্তী দক্ষিণ কুশিঘাট, পালপুর, হবিনন্দী, কুইটুক মৌজার সুরমা নদীতে গত ২৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার থেকে একটি প্রভাবশালী মহল ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে।
দিনের বেলা নদীর মধ্যভাগে মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করলেও রাতের আধাঁরে নদীর একেবারে তীরে চলে আসে। এতে এলাকার লোকজনের মাঝে ড্রেজার আতঙ্ক বিরাজ করছে। জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তোজনা সৃষ্টি হচ্ছে।
এলাকাবাসীর পক্ষে মুরব্বী সাইস্তা মিয়া বলেন, নদী ভাঙ্গন রোধে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান।
আলাপকালে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিন্টু চৌধুরী বলেন, এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাথে সাথে তহশীলদার ও সার্ভেয়ার সরেজমিনে গিয়েছেন। তারা দক্ষিণ সুরমার সীমানায় বালু উত্তোরন করতে নিষেধ করেছেন। আবারো যদি আমাদের দক্ষিণ সুরমার সীমানায় বালু উত্তোলন করা হয় উপজেলা প্রশাসেনর পক্ষ থেকে সব ধরনের আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, যে স্থান থেকে বালু উত্তোলন হচ্ছে সে স্থানটি সিলেট সদর উপজেলার অধীনে। আমি বিষয়টি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।