ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের মেমোরিয়াল স্লোন ক্যাটারিং ক্যান্সার সেন্টারে চিকিৎসাধীন খোকার শারীরিক অবস্থা পরিবর্তনের আশা ছেড়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তারা খোকার সব ধরনের চিকিৎসা বন্ধ করে দিয়েছেন বলে বিএনপির এক নেতা জানিয়েছেন।
ওই হাসপাতাল থেকে শুক্রবার দুপুরে তিনি বলেন, ‘তার শরীর ওষুধ গ্রহণ করছে না। এমনকি গতকাল থেকে কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাসেও ভীষণ কষ্ট পাচ্ছেন খোকা। মাঝেমধ্যে চোখের পাতা মেলেন, আবার কখনও ঘুমিয়ে পড়ছেন।’
খোকার জীবনের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী অন্তিম সময়ে তাকে দেশে নেওয়াও পরিবারের পক্ষে সম্ভব হয়নি। পাসপোর্ট না থাকায় দেশে ফিরতে পারেননি তিনি। পরবর্তী সময়ে কী হবে, এ নিয়ে স্বজনরা দুশ্চিন্তায় আছেন।
ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য ২০১৪ সালের ১৪ মে সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রে যান খোকা। এরপর থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সে থাকছেন তিনি। ভিজিট ভিসার নিয়ম অনুযায়ী, ছয় মাস পরপর যাওয়া-আসা করে আমেরিকার ভিসা বৈধ রাখতে হয়। ২০১৭ সালে খোকা ও তার স্ত্রী ইসমত হোসেনের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তারা নিউইয়র্ক কনস্যুলেটে নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নতুন পাসপোর্ট পাওয়ার ব্যাপারে কনস্যুলেট থেকে কোনো সদুত্তর দেওয়া হয়নি।
হাসপাতালে খোকার পাশে আগে থেকেই আছেন তার স্ত্রী ইসমত হোসেন, মেয়ে সারিকা সাদেক, ছেলে ইশফাক হোসেন। বাবার সংকটাপন্ন অবস্থার খবর পেয়ে ঢাকা থেকে তার বড় ছেলে ইশরাক হোসেনও নিউইয়র্কে ছুটে যান।
উল্লেখ্য, রাজধানীর বনানী সুপার মার্কেটের কার পার্কিংয়ের ইজারা দুর্নীতির মামলায় ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকাসহ ৪ জনের ১০ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড হয়। গত বছরের ২৮ নভেম্বর ঢাকা বিভাগীয় স্পেশাল জজ মিজানুর রহমান খান এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার অনেক আগে ২০১৪ সাল থেকে চিকিৎসার জন্য সাদেক হোসেন খোকা সপরিবারে নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন। প্রথম দিকে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিলেও অসুস্থতার কারণে রাজনীতি থেকে দূরে রয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম এই সংগঠক।