সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে বিআরটিসির বাস চলাচল বন্ধসহ ৫ দফা দাবিতে আগামী ২ সেপ্টেম্বর থেকে সিলেটসহ ৫ জেলায় অনির্দিষ্টকালের পরিবহণ ধর্মঘট পালনের ডাক দিয়েছে সিলেট বিভাগ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সড়ক পরিবহণ মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। গত বুধবার দক্ষিণ সুরমার বাবনা পয়েন্টে সংগঠনের প্রধান কার্যালয়ে এক সভায় এ ঘোষণা দেন নেতৃবৃন্দ। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আগামী ২ সেপ্টেম্বর থেকে সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অনির্দিষ্টকাল পরিবহণ ধর্মঘট পালনের জন্য নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
এদিকে সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে গত সোমবার থেকে সিলেটসহ ৫ জেলায় পরিবহন ধর্মঘটের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন ও জেলা ট্রাক কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতি।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা ট্রাক পিকআপ কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের প্রধান কার্যালয়ে এক জরুরী সভার মাধ্যমে শ্রমিক ইউনিয়নের জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ ও সংগঠনের ১৩টি আঞ্চলিক কমিটির নেতৃবৃন্দ এবং সিলেট জেলা ট্রাক কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের উপস্থিতে এ সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।
একটি সূত্র জানায়, সিলেট বিভাগ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সড়ক পরিবহণ মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের এই ধর্মঘট ডাকার মূল লক্ষ সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে বিআরটিসির বাস চলাচল বন্ধ করা। তাদের উদ্দেশ্য বিআরটিসির বাস বন্ধ করে সরকারকে তার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করা।
অপর একটি সূত্র জানায়, এই অনির্দিষ্টকালের পরিবহণ ধর্মঘটের কারণে দিনভর দুর্ভোগ পোহাতে হবে সিলেটের সাধারণ মানুষকে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সিলেট থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস চলাচল করবে না। এমনকি অভ্যন্তরীণ সড়কে বাস, মাইক্রোবাস, অটোরিকশাসহ কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল করতে দেও হবে না। এর ফলে প্রয়োজনীয় কাজে ঘর থেকে বেরিয়ে ভোগান্তিতে পড়বেন সাধারণ মানুষ।
সিলেট বিভাগ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযুদ্ধা সেলিম আহমদ ফলিক জানান, ‘সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে চালুকৃত বিআরটিসি বাস সার্ভিস প্রত্যাহার করার দাবি জানালেও কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। মহাসড়কে চেকিং এর নামে পরিবহণ শ্রমিকদের উপর পুলিশী নির্যাতন বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। সুনামগঞ্জ-সিলেট রোডে চালুকৃত বিআরটিসি বাস সার্ভিস বন্ধসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বিভিন্ন সময় স্মারকলিপি ও সমঝোতা বৈঠক করেও ফল পাওয়া যায়নি। তাই আমাদের এই দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত দাবি আদায়ের লক্ষে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু সরকার জানান, সাধারণ মানুষের কল্যাণে পরিবহন সেক্টর কাজ করে আসছে। ধর্মঘটের নামে জন-হয়রানী কোনো ভাবেই মেনে নেয়া যায়না। সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ৫ দফা দাবির মধ্যে বিআরটিসি বাস সার্ভিস বন্ধের দাবিটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, যা সাধারণ যাত্রীদের জন্য শুভনীয় নয়, আমরা এসব জন-হয়রানীমূলক ধর্মঘটের বিপক্ষে আছি। ধর্মঘটের দিন আমাদের ট্রাক রাস্তায় চলবে, কোনো সহিংষতা হলে তার দায়ভার সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের উপর পড়বে।