ছবি সংগ্রহীত
সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক:: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত খুনিরা ছাড় পাবে না।’
আজ শুক্রবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় সূচনা বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খুনিদের কয়েকজন ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে। অন্যরাও শিগগির গ্রেপ্তার হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি যে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের জঘন্য অপরাধ করতে না পারে।’
তিনি বলেন, ‘কোন কারণ ছাড়া একজন মাদ্রাসা ছাত্রীকে একজন অধ্যক্ষের আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করার মতো জঘন্য ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা আমার নেই।’
নুসরাতের জীবন বাঁচাতে সরকারের প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মেয়েটিকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। এমনকি আমরা মেয়েটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর পাঠাতে সেখানকার চিকিৎসকদের মতামত নিয়েছি কিন্তু আমরা কোনো ইতিবাচক সাড়া পাইনি।’
গত ৬ এপ্রিল ফেনীর একটি মাদ্রাসায় গায়ে আগুন দেয়ার পর নুসরাত ১০ এপ্রিল মৃত্যুর সাথে লড়াইয়ে হেরে যায়।
এসময় প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন যে ২০১৩ ও ২০১৫ সালে জাতীয় নির্বাচন বানচাল এবং নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানোর নামে বিএনপি-জামায়াত জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করার সংস্কৃতি চালু করে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যাকারী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট বাস, ট্রাক, কার ও ট্রেনে আগুন সন্ত্রাস চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে।
প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর বনানীতে এফআর টাওয়ারে অগ্নিকান্ডের ঘটনার উল্লেখ করে আগুনের মতো যে কোন দুযোর্গের সময় যাতে সহজে বেরিয়ে আসতে পারে সেজন্য ভবনে পর্যাপ্ত জায়গা রাখতে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ফায়ারম্যান সোহেল রানাকে বাঁচাতে সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুর পাঠানো হয়েছিল। এফআর টাওয়ারে উদ্ধার অভিযান চালাতে গিয়ে সোহেল রানা মারাত্মকভাবে আহত হয়।’
প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, এ জন্য প্রকৌশলী, পরিকল্পনাবিদ এবং বাড়ি মালিকদের প্রতি সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগুন থেকে রক্ষা পেতে শুধুমাত্র সরকারের ওপর নির্ভর না হয়ে নিজস্ব উদ্যোগও নিতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী ১৮ তলার অনুমতি নিয়ে ২২, ২৩ তলা ভবন নির্মাণ করার উল্লেখ করে বলেন, ‘এ ধরনের কাজ করা হলে সরকার কাউকে ছাড় দেবে না।’
তিনি বলেন, ‘২২ তলা ভবনে আগুন নিভাতে ল্যাডার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় অগ্নি নির্বাপনী যন্ত্রাংশ কেনা হয়েছে। এর আগে আমাদের ফায়ারম্যানরা শুধুমাত্র ৬ তলা ভবনের আগুন নেভাতে পারত। সরকার বর্তমানে প্রতিটি উপজেলায় ফায়ার স্টেশন নির্মাণ করছে।’ তিনি বলেন, ‘জিয়া, এরশাদ ও খালেদার সরকার দেশে আগুন নেভাতে তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়নি।’
প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে ব্যাপক আকারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বছরব্যাপী জন্মশত বার্ষিকী উদযাপনের প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগ ও দলের সকল অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। এই কর্মসূচি সফলভাবে উদযাপনের জন্য ইতোমধ্যেই একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং সাবকমিটিও গঠন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানান। আগামী ১৪ এপ্রিল সারাদেশে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত হবে।