সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক:: দুই বছর আগেও আমার পাঁচটা দোকান পুড়ে গেছিল, ১২ লাখ টাকা ঋণ করে আবার পাঁচটা দোকান নেই। আজকে এগুলোও পুড়ে ছাই হয়ে গেল। আমার কিছুই বাকি নেই।’
কথাগুলো বিলাপ করতে করতে বলছিলেন গুলশানের ডিএনসিসি মার্কেটের ব্যবসায়ী সৈয়দা রাবেয়ার সুলতানা। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে তিনিও একজন।
রাবেয়া বলেন, ‘আমরা ঋণ করে ব্যবসা করি। কীভাবে টাকা পরিশোধ করবো বুঝতে পারছি না। সব দোকানতো পুড়ে ছাই। প্রতিবছর এখানে আগুন কেন? আমরা বুঝলাম না।’
রাবেয়ার চার মেয়ে। বড় মেয়ে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। অন্য তিন মেয়েও স্কুলে পড়ালেখা করে। কীভাবে সংসার চালাবেন, সন্তানদের লেখা পড়ার খরচ কীভাবে চালাবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় তিনি।
তিনি বলেন, ‘গ্রামে চলে যেতে হবে। কীভাবে ১২ লাখ টাকা পরিশোধ করবো? আমাদের সব শেষ হয়ে গেলো’
শনিবার ভোর পৌনে ৬টার আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট কাজ শুরু করে। পরে ধাপে ধাপে আরো কয়েকটি ইউনিট যোগ দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর যৌথ প্রচেষ্টায় সাড়ে তিন ঘন্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
বাজারটিতে গৃহসামগ্রী, মুদি জিনিসপত্র, সবজির বাজার, কসমেটিক্স দোকান, পারফিউমের দোকানসহ প্রায় ৩ শ’র মতো দোকান ছিল। এসব দোকান মালিকদের দাবি, সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
এর আগে ২০১৭ সালের ৩ জানুয়ারি ভোরবেলা একই মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। সেসময় মার্কেটটির বহু দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। এরপর অস্থায়ীভাবে দোকান তৈরি করে মার্কেটটি চালু করা হয়। ২০১৭ সালে আগুনের ঘটনার পর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়নি মার্কেট কর্তৃপক্ষ। এমন অভিযোগ করেন আশপাশের লোকজন। তবে আজ ভোরবেলা আগুন লাগার খবর পেয়ে দুই মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট চলে আসে। শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ার কারণে রাস্তা ফাঁকা ছিল। তাই দ্রুত আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়েছে। এ জন্য ডিএনসিসির সুপার মার্কেট অংশে আগুন ছড়ায়নি।