গোলাপগঞ্জ উপজেলার চন্দরপুরের যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী কমিউনিটি নেতা ফলিক উদ্দিন খান প্রতিবেশী ও গোলাপগঞ্জ থানা ওসি ফজলুল হক শিবলীর প্রতিহিংসার বলি হয়ে আজ কারাগারে বন্দি রয়েছেন। বুধবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমন অভিযোগ করেন ফলিক উদ্দিন খানের আত্মীয় মকবুল হোসেন।
তিনি লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিত প্রাণ ভক্ত ও সমর্থক হিসেবে দেশে বিদেশে নানাবিধ উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অবিচল থেকে স্থানীয পর্যায়ে সামাজিক উন্নয়ন কর্মকান্ডে তিনি নিয়োজিত রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে এসে নিজ এলাকায় আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি উজ্জল করতে বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, আওয়ামী লীগ ঘরনার সমাজকর্মী ও প্রবাসী এই ব্যক্তিকে অরাজকতার মামলায় জড়িয়ে গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ ও তার প্রতিপক্ষরা হয়রানী করে যাচ্ছে। প্রতিবেশী নিজাম উদ্দিন ও সেলিমরা ১৯৯৯ সালেও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ফলিক উদ্দিন খানকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসাতে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তা তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এসময় তারা ফলিক খানকে পুলিশ দিয়ে হয়রানী করে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ফলিক খান তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। যে কারনে এখন প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে তারা নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, চন্দরপুর এলাকার সেলিম, নিজাম, আজাদ, তাজ উদ্দিন, জুনেদ,জিলাল, ফরিদ, বিলাল, আনোয়ার, আব্দুল হক গংরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ছবি ব্যঙ্গ করে লাইক শেয়ারের মাধ্যমে ফেইসবুকে প্রচার করলে তা ফলিক খানের দৃষ্টিগোচর হয়। তাই তিনি সিলেটে সিনিয়র ১ম আদালতে তথ্য প্রযুক্তি আইনে তিনটি মামলা দায়ের করেন। আদালত সাথে সাথে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) বরাবর আদেশ প্রদান করেন। কিন্তু আজ প্রায় ৯/১০ মাস হয়ে গেছে মামলািট এখনও থানায় ঝুলে আছে। কোন প্রকার ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বরং উল্টো ওসি ফজলুল হক শিবলী একটি মামলা মিথ্যে বলে ইতোমধ্যে চূড়ান্ত রিপোর্ট আদালতে প্রেরণ করেছে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, মামলাগুলি তুলে নোর জন্য ওসি শিবলী, তদন্ত অফিসার দেলওয়ার, এ.এস.আই মঞ্জুরুল, ইউনুস, ও সেদিনকার ডিউটি অফিসার সহ অন্যান্য এস.এস.আই গণ বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দিয়ে আসছিলো যে, মামলাগুলি গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হবে। যাহা আজ গোলাপগঞ্জের পুলিশরা বাস্তবায়ন করে দেখিয়ে দিয়েছে। কয়েক পুর্বে প্রতিবেশী অস্ত্রবাজ সেলিম, নিজামদের সাথে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে ফলিক খানের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে ফলিক খান বিষয়টিও নিষ্পত্তি করেছেন। পল্লী বিদ্যুতের মেইন লাইন টেনে নিজামদের বাড়ীতে বৈদ্যুতিক লাইনের সংযোগ করে দেন ফলিক উদ্দিন খান। তারপরও সেলিম নিজামরা তাদের হীন প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে নানা অপতৎপরতা শুরু করে। তারা ফলিক উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে গোপনে সেই ৯৯ সালের মতো একটি মিথ্যে সাজানো চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করে। বিগত ২৭ নভেম্বর ওসি শিবলী ও তদন্ত ওসি দেলওয়ারের নেতৃত্বে পুলিশ গোলাপগঞ্জ চৌমুহনী থেকে ফলিক উদ্দিন খানকে গ্রেফতার করে জেলে প্রেরন করে। যার মামলা নং- ১২৬/১৮। এসময় তার গাড়িতে থাকা দেড় লক্ষ টাকা ও অন্যান্য মূলবান জিনিসপত্র পাওয়া যায়নি। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, এই অকৃতজ্ঞ ওসি শিবলী মাত্র ২ বছর আগে কিশোরগঞ্জে একটি পুলিশ পরিবারের অসহায়ত্ব দেখিয়ে সে নিজে ফলিক খানের কাছ থেকে নগদ ১ লাখ টাকা অনুদান নিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, গোলাপগঞ্জ থানার ওসি ফজলুল হক শিবলীকে ম্যানেজ করে ফলিক উদ্দিন খানকে হেনস্তা করতে আরও কিছু ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয় সেলিম-নিজামরা। তারা ওসি শিবলীকে প্রভাবিত করে ফলিক উদ্দিন খানকে দুটি চলমান মামলায় আসামী করেন। যার একটি হচ্ছে- ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩) ও ২৫ ডি ধারায় সংঘঠিত একটি ঘটনা।
সংবাদ সম্মেলনে এ ব্যাপারে প্রশাসন সহ সরকারের উর্ধ্বতন মহলের সহযোগিতা কামনা করেছেন ফলিক উদ্দিন খানের পরিবারের সদস্যরা।