সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক:: রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (আরডিসি) বলছে, ভোটের মাসের শুরুতে ৯ থেকে ১৬ ডিসেম্বর দেশের ৫১টি সংসদীয় আসনে সোয়া দুই হাজার ভোটারের ওপর জরিপ চালিয়ে তারা এ পূর্বাভাস পেয়েছে।
তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ৪৯টি আসনে জয় পেতে পারে। বাকি তিনটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জয় দেখছে আরডিসি।
আরডিসির হয়ে এই জরিপ পরিচালনায় যুক্ত মার্কিন পরামর্শক ফরেস্ট ই কুকসান বুধবার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে এক অনুষ্ঠানে জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন।
কুকসানের বিজনেস কার্ডে বলা হয়েছে, তিনি ডেভেলপমেন্ট ইন ডেমোক্রেসি নামে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি গবেষণা সংস্থার অর্থনীতিবিদ।
বাংলাদেশে বিভিন্ন গবেষণা ও জরিপ সংস্থার পাশাপাশি পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) বিভিন্ন জরিপেও পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন বলে অনুষ্ঠানে জানান তিনি।
এক প্রশ্নের উত্তরে কুকসান বলেন, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের অর্থায়নে আরডিসি বাংলাদেশের নির্বাচন সামনে রেখে এই মতামত পরিচালনা করেছে।
এর আগে গত অগাস্ট মাসে করা আরডিসির আরেকটি জরিপের বরাতে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ডিসেম্বরের মাঝামাঝি এক ফেইসবুক পোস্টে বলেছিলেন, নির্বাচনে তাদের দল আওয়ামী লীগ সর্বোচ্চ ২২০ আসনে জয় পেতে পারে বলে তারা আভাস পেয়েছেন।
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর বর্জনে ২০১৪ বাংলাদেশে ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন একক প্রার্থীরা।
এ নির্বাচনে সব মিলিয়ে ২৩২টি আসনে জয় পেয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মত সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টি ৩৩টি, ওয়াকার্স পার্টি ছয়টি, জাসদ পাঁচটি, জেপি একটি, তরিকত ফেডারেশন একটি, বিএনএফ একটি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১৩টি আসনে জয় পান।
এর আগে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠাতা পেয়েছিল৷ দুই বছর জরুরি অবস্থার পর ২০০৮ সালের ডিসেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৩০, বিএনপি ২৯, জাতীয় পার্টি ২৭, জাসদ তিনটি, ওয়ার্কার্স পার্টি দুটি, জামায়াতে ইসলামী দুটি, এলডিপি একটি, বিজেপি একটি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা চারটি আসনে জয়ী হন।
আরডিসি বলছে, এবারের নির্বাচন সামনে রেখে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে গ্রাম ও শহরের ২ হাজার ২৪৯ জন ভোটারের ওপর মতামত জরিপ চালিয়েছে তারা।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৬০ শতাংশ উত্তরদাতা মহাজোট, ২২ শতাংশ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং ৪ শতাংশ জাতীয় পার্টিকে সমর্থন জানিয়েছেন।
আর ১০ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তারা এখনও নিশ্চিত নন। ৩ শতাংশ ভোটার উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। আর এক শতাংশের কম ভোটার বলেছেন, তাদের ভোট দেওয়ারই আগ্রহ নেই।
ফরেস্ট ই কুকসান বলেন, একটি মডেল ব্যবহার করে ভোটারদের মতামতের সঙ্গে আগের নির্বাচনের ভোটের রেকর্ড বিশ্লেষণের মাধ্যমে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বাভাস তৈরি করেছেন তারা।
আরডিসির প্রতিবেদন বলছে, জরিপে অংশগ্রহণকরী পুরুষের মধ্যে ৫৮ দশমিক ৬ শতাংশ মহাজোটের পক্ষে, ২২ দশমিক ৬ শতাংশ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে এবং ৪ দশমিক ২ শতাংশ জাতীয় পার্টির পক্ষে নিজের অবস্থানের কথা বলেছেন।
আর নারী উত্তরদাতাদের মধ্যে ৬২ দশমিক ২ শতাংশ মহাজোটের পক্ষে, ২২ শতাংশ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে এবং ৩ দশমিক ১ শতাংশ জাতীয় পার্টির পক্ষে কথা বলেছেন।