সিলেট:: আওয়ামী লীগ মনোনীত মহাজোটপ্রার্থী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, প্রবাসীরা দেশের সম্পদ। ১ কোটি ১৬ লক্ষ মানুষ বিদেশে থাকেন। প্রতি পরিবারে গড়ে ৬ জন মানুষ একজন প্রবাসীর উপর নির্ভর থাকলে ৭ কোটি মানুষকে প্রবাসীদের উপর নির্ভরশীল। সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ৭ কোটি মানুষ প্রবাসী নির্ভর। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স দেশের বড় চালিকাশক্তি। কিন্তু এই প্রবাসীদের উন্নয়নে কেউ কাজ করে না। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ব্যতিক্রম। প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, উন্নয়নের মহাসড়কে প্রবাসীদের সম্পৃক্ত করতে না পারলে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এ জন্য সরকার ৩০ ডিসেম্বর প্রবাসী দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই দিবস পালনের মধ্য দিয়ে উন্নয়নের মহাসড়কে যেমন তাদের সম্পৃক্ত করা যাবে, তেমনি প্রবাসীদের অর্জন, তাদের যে অভিজ্ঞতা তা আমরা কাজে লাগাতে পারবো। এ জন্য একটি ইনভেস্টমেন্ট সেলও করা হয়েছে। দেশে ১০০টি ইকোনোমিক জোন করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে জনগনের কর্মস্থান নিশ্চিত হবে। প্রবাসীদের বিনিয়োগের ক্ষেত্র আরো সম্প্রসারিত হবে।
তিনি গতকাল রোববার নগরের লা-রোজ হোটেলের কনফারেন্স হলে ড. মোমেন সমর্থক ফোরাম, যুক্তরাষ্ট্র এর উদ্যোগে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।
ড. মোমেন যুক্তরাষ্ট্র ফোরামের উদ্যোক্তা রানা ফেরদৌস চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও ইফজাল চৌধুরী এবং শেখ জামাল হোসেনের পরিচালনায় সভায় তিনি আরো জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি প্রবাসীদের সমর্থনের প্রধান কারণ হলো, দেশ এখন সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ মুক্ত। টেরোরিজম বন্ধ হওয়ায় দেশে এখন শান্তি বিরাজ করছে। নির্বিঘেœ মানুষ জীবন-যাপন করতে পারছেন। সন্তানদের ঘরে ফেরা নিয়ে পরিবার উদ্বিগ্ন থাকে না। তাছাড়া প্রবাসে বসে দুর্নীতির জন্য তাদের এখন আর অপবাদ সইতে হয় না। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি হলে তারা ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েন। দেশের প্রতি প্রবাসীদের মমত্ববোধ কতোটা প্রবল, তা বিদেশে না গেলে কেউ অনুধাবন করতে পারবে না। তারা সবসময় চান, দেশ এগিয়ে যাক, বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হোক। দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হলে বিদেশেও তাদের মুখ উজ্জ্বল হয়। তারা মাথা উঁচু করে চলতে পারেন। তাই প্রবাসীরা মনেপ্রাণে চান, দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার প্রতীক নৌকা মার্কার দল আবার ক্ষমতায় আসুক।
নৌকার পক্ষে কাজ করতে নিজ উদ্যোগ এবং খরচে কয়েকশ’ প্রবাসী সিলেটে এসে নির্বাচনী প্রচারণায় যুক্ত হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি কল্পনাও করতে পারিনি, এতো প্রবাসী আমাকে ভালোবেসে স্বেচ্ছাশ্রম দিবেন। তারা আমাকে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ করেছেন। আমি কোনদিন তাদের ভুলবো। আমি নির্বাচিত হলে, আমার বড় দায়িত্ব থাকবে, প্রবাসীদের দেশের উন্নয়নে সম্পৃক্ত করা। তাদের জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে কিভাবে দেশকে আরো এগিয়ে নিতে পারি, তার প্রচেষ্টা চালানো। প্রধানমন্ত্রীর সাথে আমার কথা হয়েছে, তিনি প্রবাসীদের জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
তিনি ঢাকা-সিলেট ফোরলেন, সিলেট-ঢাকা-চট্টগ্রাম উন্নত রেললাইন ও ডেমু ট্রেন চালুর ব্যাপারে কাজ করছেন জানিয়ে বলেন, এর মাধ্যমে সিলেটের সাথে ঢাকা-চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো উন্নত হবে। সিলেটের বিনিয়োগ সম্প্রসারিত হবে। প্রবাসীদের দুর্ভোগ কমাতে প্রবাসী সেল গঠনসহ নানা পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে পুর্নাঙ্গ আর্ন্তজাতিক বিমানন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে সিলেট থেকে সরাসরি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফ্লাইট চালু হবে। প্রবাসী দুর্ভোগ তখন অনেকাংশে হ্রাস পাবে। দৃষ্টিনন্দন সিলেট হবে। তবে এ সবকিছুর মূলে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতায় থাকা না থাকার উপর নির্ভর করবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে প্রবাসীদের সম্মান যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনি দেশে তারা বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ পাবে। এজন্য ৩০ তারিখ নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করতে হবে বলেও তিনি জানান। অন্যথায় সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যাবে।
সভায় বক্তব্য রাখেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আইরিন পারভীন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমদ, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম, মেসবাহ আহমেদ, সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম, মহানগর আওয়ামী লীগ নেত্রী মারিয়াম চৌধুরী মাম্মী, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান, রাশিদা হক কনিকা, মিসবাহ আহমেদ, মিশিগান আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি খালেদ আহমদ, আমেরিকা প্রবাসী জাহাঙ্গির আলম, জেসমিন বুখারী, আবু হানিফ, যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আমিনুল হক রাদু, সুমন আহমদ, সৌদিআরব প্রবাসী নেতা আব্দুস সালাম, মেহেরুল ইসলাম প্রমুখ।