সিলেট৭১নিউজ:সিলেটের ওসমানীনগরে ঘাতকদের হাতে নির্মমভাবে খুন হওয়া নারীর পরিচয় মিলেছে। মাটি খুঁড়ে লাশ উদ্ধারের ছয় দিন পর থানা পুলিশ লাশটির পরিচয় সনাক্ত করতে সক্ষম হন।
ঘাতকদের হাতে খুন হওয়া নারী নাম সুমি আক্তার তিশা (৩০)। তিনি লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার নয়নপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের কন্যা। তিশার পকেটে পাওয়া একটি মেমোরি কার্ডের সূত্র ধরে পরিচয় সনাক্তের জন্য অনুসন্ধানে নামে পুলিশ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিশার বোন নাজমা ছবি দেখে লাশ সনাক্ত করেন।
তিশার পরিচয় সনাক্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসমানীনগর থানার এসআই মুমিনুল ইসলাম। তিনি জানান, তিশার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তার পরিবারের সদস্যরা থানায় আসার জন্য রওয়ানা হয়েছেন।
এদিকে, হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৬ নভেম্বর ওসমানীনগর থানার এসআই সাইফুল মোল্লা বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং- ৩)।
এদিকে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে পুলিশ তাৎক্ষনিক ৮জনকে আটক করে। আটককৃতরা হলেন-উপজেলার দয়ামীর ইউপির খালপাড় গ্রামের মৃত হরমুজ আলীর ছেলে আব্দুল বারিক, বারিকের কথিত স্ত্রী জামালপুর জেলার ভাটি গজারিয়া এলাকার ওয়াহিদ আলীর মেয়ে নাসরিন বেগম পাখি, বারিকের ভাগ্নে একই গ্রামের মইন উদ্দিনের ছেলে মাসুম মিয়া, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার মৃত জুনার আলীর পুত্র সেলিম মিয়া। এছাড়া একই আদালতে হত্যাকান্ডের মূল হোতা ও মামলার প্রধান আসামি আবুল বারীকের মেয়ে ময়না বেগম, মোনালিসা, আব্দুল বারিকের বোন নেহার বেগম ও দয়ামীর বাজারের পাহারাদার আব্দুল গনি। আটককৃতরা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।
তবে আটককৃতরা হত্যার দায় স্বীকার করলেও খুন হওয়া তিশার পরিচয় সংক্রান্ত বিষয়ে তাদের কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ওসমানীনগর থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আদালতে স্বীকারোক্তিতে অভিযুক্তরা জানিয়েছে ৪নভেম্বর রাত ৮টার দিকে সেলিম তিশা বেগমকে দয়ামীরের খালপাড় গ্রামের আব্দুল বারিকের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর রাতে সেলিম ও বারিক দুজন মদ পান করেন। এসময় সেলিম তিশাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু তিশা রাজি না হওয়ায় তাদের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে রাত আনুমানিক ৩টার দিকে বারিকের শোবার ঘরে সেলিম তিশার গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে। সেলিম ও বারিক তিশার মৃত্যু নিশ্চিত করেন। রাতেই বারিকের কথিত স্ত্রী নাসরিন বেগম পাখি, তার ভাগ্নে মাসুম এবং আরও ৩-৪ জন মিলে একজন রিকশা চালকের সহায়তায় দয়ামীর বাজারের কনাইশা (র.) মাজারের পশ্চিমে একটি খালি জায়গায় লাশ মাটিচাপা দেয়া হয়। ৫ নভেম্বর সকালের দিকে পুলিশের হাতে আটককৃতদের মধ্যে কেউ একজন থানায় ফোন করে লাশটি মাটি চাপা দেয়ার খবর জানায়। সকাল ১১টার দিকে দয়ামীর বাজারের কনাইশা (র.) মাজারের পশ্চিমে একটি খালি জায়গা থেকে মাটিচাপা দেয়া এক অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার করে ওসমানীনগর থানা পুলিশ। ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৮ জনকে আটক করে পুলিশ।
ওসমানীনগর থানার ওসি এসএম আল মামুন বলেন, লাশের পরিচয় সনাক্ত হয়েছে। তার স্বজনদের নিকট লাশ হস্তান্তরের ব্যবস্থা করা হবে।