যশোরের চৌগাছা উপজেলার জগদীশপুর গ্রামের মিয়া বাড়ির সামনে রয়েছে দৃষ্টি নন্দন তেতুল গাছ। বিশাল আকারের চারটি তেঁতুল গাছ দেশের সব থেকে বয়স্ক তেঁতুল গাছ বলে জনশ্রুতি রয়েছে। এলাকার বয়স্ক মানুষদের ধারণা গাছগুলির বয়স সাড়ে ৬ শ’ বছরের উপরে।
হাজারও রহস্যঘেরা এই তেঁতুল গাছ কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে উপজেলার পল্লী গাঁয়ে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, প্রায় সাড়ে ৭’শ থেকে ৮’শ বছর আগে প্রমত্তা ভৈরব নদী কালের বিবর্তনে চর পড়ে স্রোতধারা বন্ধ হয়ে যায়। চরে সৃষ্টি হয় গ্রামের পর গ্রাম। তারই একটি গ্রাম জগদীশপুর। যেখানে সাড়ে ৩ শ’ বছর পূর্বে জগদীশ ঘোষ নামে এক বৃদ্ধ প্রথম বসতি গড়ে তোলে। আর জগদীশ ঘোষের নামানুসারে চরের নাম হয় জগদীশপুর। গ্রামের মিয়া বাড়ির সামনে পাশাপাশি এ চারটি গাছের জন্ম।
গাছ চারটির জন্মকাল ও বয়স নিয়ে এলাকায় রয়েছে নানা রকম জনশ্রুতি। কয়েকজন বয়স্কদের সাথে কথা হলে তারা জানান, এ গ্রামের পুটি মোহাম্মদ বিশ্বাস ১শ’ ১৪ বছর বেঁচে ছিলেন। তিনি ৯০/৯৫ বছর আগে মারা যান। তিনি বলতেন, তার জ্ঞান বুদ্ধি হবার পর থেকে তেঁতুল গাছগুলি একই রকম সবুজ দেখেছেন।
গ্রামবাসিরা জানান, এ গ্রামের কৃতি সন্তান ত্রাণ ও পুর্নবাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব, রাষ্টদূত এম মনিরুজ্জামানের সাথে প্রায় ৩০/৩৫ বছর আগে ইটালিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞ বেড়াতে এসেছিলেন। কৌতুহলবশত তিনি এই তেঁতুল গাছের বয়স জানতে চাইলে কেউ সে সময় সঠিক বয়স বলতে পারেনি। পরবর্তীতে কয়েক বছর পর ওই বিশেষজ্ঞ আবারও জগদীশপুর গ্রামে আসেন এবং গাছের (কাঠের) মধ্যে এক ধরনের যন্ত্র প্রবেশ করিয়ে এবং ছাল পরীক্ষা করে জানান ওই গাছের বয়স ৬ শ’ ৩০ বছর। সে হিসেবে গাছের বর্তমান বয়স ৬ শ’ ৬৫ বছর।
এত বড় এবং বয়স্ক গাছ হলেও গাছের কোনো ডাল বা শাখা প্রশাখা শুকিয়ে যায়নি। আজও রয়েছে সবুজ শ্যামল। প্রতি বছর প্রচুর পরিমানে ফল ধরে গাছগুলোতে।