আধুনিক জীবনযাত্রা, পেশাগত চাপ নানা কারণে যে সব রোগের প্রকোপ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, তার মধ্যে অন্যতম‘‘কিডনিতে পাথর জমার ঘটনা গত পাঁচ বছরে অত্যন্ত বেড়েছে। অনিয়ন্ত্রিত জীবন, অনিয়ম ইত্যাদি নানা কারণ এর নেপথ্যে রয়েছে। শুধু তাই-ই নয়, এই সব অসুখ নিয়ে সচেতনতাও কমছে দিনকে দিন। অনেকেই চিকিৎসা করতে আসেন অনেকটা পরের দিকে, তখন আর অস্ত্রোপচার ছাড়া অন্য গতি থাকে না’’— জানাচ্ছেন কিডনি বিশেষজ্ঞ অভিজিৎ তরফদার।
কিডনিতে পাথর জমা হওয়ার সমস্যাকে অনেকেই ততটা গুরুত্ব দেন না, কিন্তু উপযুক্ত সময়ে চিকিৎসা না পেলে এই অসুখ মারণরোগে পরিণত হতে পারে। চিকিৎসকের মতে, স্টোন মূলত দু’ধরনের। সাধারণ কারণে হওয়া পাথর ও অন্য কোনও অসুখজনিত কারণে হওয়া পাথর।জানেন কি, এই দু’ধরনের পাথর রুখে দেওয়ার মূল উপায়গুলো? কিছু কিছু নিয়ম মেনে চললেই কিন্তু এড়াতে পারেন এমন অসুখ। শুধু বদভ্যাসের বশেই নয়, অসুখের নানা কারণ জানা থাকে না বলেও অনেক সময় এর শিকার হই আমরা। দেখে নিন এই পাথর ঠেকাতে চিকিৎসকের পরামর্শ।
শরীরের চাহিদা মেনে জল: কিডনির কাজ শরীরের বর্জ্য ছেঁকে শরীরের ক্ষতিকারক টক্সিনকে সরানো। তাই শরীরের চাহিদা অনুযায়ী জল না খেলে কিডনির পক্ষে সে কাজ করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। ফলে সে সব বর্জ্য জমে পাথর জমার সম্ভাবনাও বাড়ে।
নুন কম: খাবারে অতিরিক্ত নুন, বিশেষ করে কাঁচা নুন খাওয়ার অভ্যাস থাকলে আজই তা বদলান। নুনের সোডিয়ামকে কিডনি সরাতে পারে না। তাই সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের মাত্রা বেড়ে গেলে কিডনিতে পাথর জমে।
বদহজম এড়ান: হজমে সমস্যা আনতে পারে এমন খাবার খাবেন না। হজমের গোলমাল কিডনিতে বিরূপ প্রভাব ফেলে। বর্জ্য নিষ্কাশনে বাধা তৈরি হয় ও পাথর জমার সম্ভাবনা বাড়ে।
ব্যথানাশকে না: অনেকেরই ঘন ঘন ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস থাকে। এই ওষুধের অন্যতম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কিডনিতে সমস্যা তৈরি করা। কাজেই ঘনঘন এমন ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা বদলান।
আরও পড়ুন: ‘ছোটদের চোখ ভাল রাখতে সবুজ মাঠে নিয়ে যান’
প্রস্রাব চেপে না রাখা: কিডনির অসুখের অন্যতম কারণ প্রস্রাব চেপে রাখা। এতে সংক্রমণ হওয়ার ভয়ও থাকে।
অসুখজনিত সমস্যা: সাধারণ স্টোন ছাড়াও অক্সালেট স্টোন, ইউরিক অ্যাসিড স্টোন, মেয়েদের ক্ষেত্রে স্ট্রভাইট স্টোন হয়। এ সব অসুখজনিত কারণে স্টোন এড়াতে অসুখের নিয়মিত চেক আপ, নিয়ম মেনে ওষুধ ও খাদ্যগ্রহণ করুন। বারবার মূত্রনালীতে সংক্রমণ থেকে হওয়া স্ট্রভাইট স্টোন এড়াতে চেষ্টা করুন নিয়ম মেনে সংক্রমণের চিকিৎসা করাতে।