সিলেট৭১নিউজডেস্ক :ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ বর্তমান সময়ে প্রতিটি উৎসব সকলের সে যে ধর্মেরই লোক হোক না কেন। প্রতিটি উৎসবে সবাই একই আনন্দ উপভোগ করে থাকে। বিশেষ করে বাংলাদেশে প্রেক্ষাপটে সকল ধর্মের উৎসবে একে অপরের সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে থাকে।
আপনি যদি বলেন, ধর্ম যারা যার উৎসব সবার! তাহলে একথার ভিত্তি কোথায়। এ কথাটি নাস্তিকদের শিখানো কথা, আপনি যদি মুসলিম হোন তাহলে আপনি কি কোরআন হাদিসকে অস্বীকার করবেন? আর কোরআন হাদীস অস্বীকার কারী কিভাবে মুসলমান হয়?
ধর্ম যার উৎসব হবে তার এটাই সথ্য
সনাতন ধর্মালম্বি (হিন্দু) সম্প্রদায়ের কোন লোক এ কথা গুলো কোন দিন বলতে শুনিনি, যারাই বলেছে সবাই মুসলমান একজন মুসলিম হয়ে এ কথা গুলো বলার রহস্যজনক??
আমাদের সমাজে এমন কিছু কথা প্রচলিত আছে য়া যে কোন ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য কথা গুুলো বলা হয়।
আমাদের অনেক মুসলিম ভাই-বোনদের দেখা যায় যে সনাতন ধর্মালম্বি (হিন্দু) সম্প্রদায়ের বিভিন্ন পূজা এবং অনুষ্ঠানে গিয়ে রোমান্স করতে। কিন্তু এইটা কি মুসলিমদের জন্য বৈধ? আপনি বলবেন শুধুমাত্র দেখতে যাচ্ছি। কিন্তু কেন??
কোন হিন্দু সম্প্রদায় লোক কি আপনার মসজিদে গিয়ে দেখতে যায়, যে আপনি মসজিদে গিয়ে কি করেন। সে তো আর নামায পড়বে না, তবু কি দেখতে আসে?
ইসলাম ধর্মের অনুসারী মুসলিমদের ধর্মিয় যে সব উৎসব পালন করা হয় তার মোধ্যে ঈদুল আযহা হচ্ছে একটি বড় উৎসব,সে উৎসবে মুসলিম জাতি হালাল চর্তুস্পদ জন্তুু কোরবানি করে থাকে, আর হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক তাদের উৎসবে মুর্তি পূজা করে থাকে।
ধরুন, কুরবানি ঈদে কোন হিন্দু সম্প্রদায়ের কাউকে দাওয়াত দিয়ে বলেন, আজ আমাদের কোরবানি ঈদের উৎসব আপনি আসবেন, ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ আসবেন, নিশ্চয়ই লোকটি বলবে আপনারা ঐ দিন গরু কোরবানি দিবেন আমিতো সেখানে যেতে পারিনা, ‘গো হত্যা আমার ধর্মে মহাপাপ’ অন্যদিন আসব।
ঠিক তেমনি কিছু কিছু জিনিস আমাদের জন্যও ধর্মমতে খাওয়া নিষিদ্ধ (হারাম)। যেমন- মদ, শুকুরের গোশত, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে জবেহ করা গোশত, অন্য ধর্মের ধর্মীয় উৎসবের খাবার ইত্যাদি। সব ধর্মেরই নিষিদ্ধ কিছু বিষয় থাকে যা মানতে হয়।
টিক তেমনি, অন্য ধর্মের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জায়গায় যাওয়া আমাদের জন্যও নিষেধ।
কারো ধর্মিয় উৎসবে যোগদান করার আগে জানতে হবে আমি কি আমার ধর্মের আদেশ নিষেধ কি মেনে চলছি।
হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দূর্গা পূজা সহ সকল পূজা উপলক্ষে সকল কার্যক্রম সম্পাদন করতে হলে সেখানে মহিলাদের প্রয়োজন হয়, সেখানে যদি মুসলিম ধর্মের লোক জরুরী প্রয়োজন ব্যতিরেকে যায়, আর অল্প সময়ের জন্য হলেও মহিলাদের চলমান প্রক্রিয়াদিতে বিগ্নতা সৃষ্টি হয়, আর মুসলমানদের প্রতি তাদের অবজ্ঞার সৃষ্টি হয় তাহলে দায়ি কে?
যেখানে আমার যাবার কোন প্রয়োজন নেই, সেখানে গিয়ে কেনো আমার ধর্মের প্রতি অবজ্ঞা, আর অবহেলিত করব।
আর ইসলাম ধর্ম এটাও শিক্ষা দেয়, অন্যদেরকে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে কোন প্রকার বাধা না দিতে। আপনার আমার(মুসলিমদের) কর্তব্য হলো, প্রয়োজনে তাদের নিরাপত্তা দেয়া, পাহারা দেয়া, কেউ বিপদগ্রস্থ হলে তাকে সাহায্য করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়া, অসুস্থ হলে চিকিৎসা ব্যবস্হা করা। এতে সমাজে শান্তি প্রতিষ্টা হবে, ইসলাম মানেই শান্তি।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি মানে এটা নয় যে আপনি আমার মসজিদে গিয়ে আমাদের নামাজ পরা দেখবেন, আর আমি আপনার পুজো মণ্ডপে গিয়ে পুজো করা দেখব। এটা অসাম্প্রদায়িকতা নয়, এটা অধার্মিকতা। এতে আপনার ধর্মও থাকবে না, আমার ধর্মও থাকবে না।
আমি আপনাকে সম্মান করি, আপনি আমাকে করেন, অথচ দুজন দু’ধর্মের। আমি আপনার কাছে নিরাপদ, আপনি আমার কাছে নিরাপদ। আপনার বিপদে আমি এগিয়ে আসব, আমার বিপদে আপনি এগিয়ে আসবেন। দেশের যেকোনো আপদ বিপদে একসাথে কাঁধে কাঁধ মিলে কাজ করব।
একজন মানুষ হিসেবে, একজন বাংলাদেশী হিসেবে একে অন্যের প্রতি এই যে সম্মান, এটাই হল প্রকৃত অসাম্প্রদায়িকতা।
লেখক,সাংবাদিক / মস্তফা উদ্দিন।