অতিথি প্রতিবেদক: সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৭নং ওয়ার্ডে বইছে নির্বাচনী ঝড়ো হাওয়া। এ ওয়ার্ডে মাত্র দুজন প্রার্থীই নির্বাচনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ। একজন হচ্ছেন জামায়াত অনুসারী ও জামায়াত পরিবারের সাঈদ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। তিনি লাঠিম মার্কা নিয়ে দলের হয়ে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। অপরদিকে তার শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন স্বাধীনতা পক্ষের বর্তমান কাউন্সিলর ও বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগ সিলেট মহানগর সভাপতি আফতাব হোসেন খান। তিনি তার নির্বাচনী প্রতীক ঘুড়ি নিয়ে আবারো ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন। আগামী সোমবার ৩০ জুলাই ওই ওয়ার্ডে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
আওয়ামী পরিবারের প্রার্থী আফতাব হোসেন খান আজ থেকে প্রায় আড়াই বছর আগে উপ-নির্বাচনে বিপুল ভোটে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে বর্তমানেও ওই পদে বহাল রয়েছেন। ভোট গ্রহণের তারিখ যতই ঘনিয়ে আসছে ভোট ও ভোটারদের নিয়ে চলছে চুলচেরা হিসেব নিকেশ ও মেরুকরণ। কাউন্সিলর পদে মাত্র দু’জন প্রার্থী হওয়ায় ভোটারদের মধ্যে মেরুকরণ অনেকটা সহজ হয়ে ওঠেছে।
একসময় নগরীর ৭ নং ওয়ার্ড এলাকাটি ছিল জরাজ্বির্ণ উন্নয়ন বঞ্চিত, ছিল জামায়াত ও সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের শক্ত ঘাটি। কিন্তু দিনবদল ও পরিবর্তনের হাওয়া বইতে থাকায় এই ওয়ার্ডের উন্নয়ন ও রাজনৈতিক অবস্থারও অনেকটা পরিবর্তন হয়ে গেছে। ওয়ার্ডের গত উপ-নির্বাচনে বিএনপির শক্তিশালী প্রয়াত কাউন্সিলরের স্থলাভিষিক্ত হন নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি প্রার্থী আফতাব হোসেন খান।
উপনির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াত থেকে যারা কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছিলেন তারা সকলেই হার মেনেছেন আফতাব হোসেন খানের কাছে।
কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে আফতাব হোসেন খান দল ও মতের ঊর্ধ্বে থেকে ওয়ার্ড এলাকার উন্নয়ন ও সমস্যার সমাধানে ব্রতী হয়ে কাজ শুরু করেন। আত্মনিয়োগ করেন এলাকাবাসীর ভালবাসা ও সম্মান কুড়াতে এবং তাতে অনেকটা এগিয়েও গেছেন তিনি। মাত্র আড়াই বছরের ব্যবধানে আফতাব হোসেন খান ওয়ার্ডের রাস্তাঘাটের প্রভূত উন্নয়ন এবং সাধনে ও ওয়ার্ডবাসীর মন জয় করতে সক্ষম হয়েছেন।
ওয়ার্ড এলাকাধীন জালাবাদ-পশ্চিম পীর মহল্লা ও বনকলাপড়া রাস্তা ৮ ফুট থেকে ১২ ফুটে প্রশস্ত করণ, ওয়ার্ডের সব এলাকায় পয়ঃনিষ্কাশনে ৪ফুট করে আরসিসি ড্রেন নির্মান, পরিচ্ছন্নতায় ভ্যানগাড়ি ব্যবস্থা, প্রয়োজনীয় কালভার্ট-ব্রীজ নির্মাণ, অবহেলিত হাজীপাড়া রাস্তার কাজ, রাতের আঁধারে এলাকাকে ঝলমলে করে তুলতে প্রতিটি রাস্তায় এলইডি ও এনার্জি লাইট স্থাপন, বিদ্যুৎ সমস্যা দূরীকরণে চলমান ট্রান্সফরমার সংস্থাপনের কাজ, চুরিডাকাতি ও সন্ত্রাস দমনে চলমান সিসি ক্যামেরা স্থাপন, নির্দলীয় কমিউনিটি পুলিশিং, নুছাইছড়া ও মালনীছড়া উদ্ধার এবং সর্বোপরি এলাকাকে সন্ত্রাসমুক্ত করণ তার সময়েই সম্পন্ন হয়েছে। তা ছাড়া ব্যক্তিগত উদ্যোগে মসজিদ মন্দির নির্মাণে সহায়তা, রমজান ও ঈদ-সহ বিভিন্ন পূজা-পার্বণে খাদ্য ও অর্থ অনুদান, প্রতিবন্ধীদের জন্য হুইল চেয়ার ও অসহায় গরীবদের জন্য ফ্রি চিকিৎসা সহায়তা প্রভৃতি মানবিক কাজে এলাকার মানুষের আস্তা কুড়াতে মন জয় করতে অনেকটা সক্ষম হয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খান।
নির্বাচনে ওই ওয়ার্ডে সাবেক কোন কাউন্সিলর কিংবা বিএনপি দলীয় প্রার্থী না থাকায় এবং একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াত প্রার্থী হওয়ায় নির্বাচনে আফতাব হোসেন খানের অবস্থান আরও শক্ত হয়ে ওঠেছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। তবে স্বাধীনতা ও সরকার বিরোধী জামায়াত সমর্থিত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাঈদ মোহাম্মদকে বিজয়ী করতেও চেষ্টার কোন ত্রুটি করছেন না। তাই সর্বশেষ দেখা যাক সিলেট সিটি করের্পারেশন নির্বচনে ৭নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে কে হাসছেন বিজয়ের শেষ হাসি।