নিজস্ব প্রতিবেদন:আসন্ন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি বিদ্রোহী প্রার্থী ও বিএনপি নেতা বদরুজ্জামান সেলিম বলেছেন, ইতিমধ্যে নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন চলে যাওয়ায় এখন আর তা পত্যাহার করার সময় নেই। তাই আমি জামানত বাবদ নির্বাচন কমিশনে যে ২০ হাজার টাকা জমা দিয়েছিলাম তা ‘কুল্লেখালাস’।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) দুপুরে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর বাসায় এক সংবাদ সম্মেলন মাধ্যমে আরিফকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে নিজে সরে দাঁড়ান সেলিম।
আরিফের বাসায় আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা বদরুজ্জামান সেলিম উপরোক্ত কথাটি বলেন। এসময় সেলিম বলেন, যেহেতু আমি সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন থেকে সরে এসেছি এবং আমার বন্ধু আরিফকে সমর্থন দিচ্ছি। সেহেতু নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া ২০ হাজার টাকা আমি আমার বন্ধুকে উপহার হিসেবে ধরে নিলাম।
এসময় সেলিম বলেন- বিএনপি আমার রক্তে, আমার শিরায় শিরায়। কালকে যখন আমাকে বাসায় এসে অনুরোধ করেছেন সেটি আমি ফেলতে পারিনি। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের প্রতি সম্মান জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।
তবে গত রাত পর্যন্ত প্রার্থীতা প্রত্যাহারের বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের অনুরোধে বরাবরই ‘না’ বলে আসছিলেন বিএনপির (বহিষ্কৃত) বিদ্রোহী প্রার্থী বদরুজ্জামান সেলিম।
এর আগে ৮ জুলাই নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নিজেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, ১৯৭৮ সালে জিয়ার আদর্শে গড়া সংগঠন জাগদলের সদস্য হিসেবে রাজনীতিতে আমার হাতে খড়ি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সিলেট জেলা সভাপতি সহ সংগঠনের বিভিন্ন পদে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে বর্তমানে আমি ২০১৬ সালে নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের গোপন ভোটের মাধ্যমে বিপুল ভোটে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হই। কিন্তু দীর্ঘ এ ৩৯ বছরের রাজনৈতিক জীবনে আজ বিএনপি আমায় ‘কুল্লেখালাস’ করে দিল।
অবশেষে নিজের অবস্থান থেকে সরে এসে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আরিফুল হক চৌধুরীর বাসায় এক সংবাদ সম্মেলন ডেকে আরিফকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে নিজে সরে দাঁড়ান সেলিম।
এসময় বদরুজ্জামান সেলিমকে ফের মহানগর বিএনপির স্বপদে পুনর্বহাল করেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান।
এসময় সদ্য সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, আজ সেলিমের এ সিদ্ধান্তে আবারো এটা প্রমাণিত হলো যে আমরা এক ও অভিন্ন। আমাদের মধ্যে কোন ভুল বুঝাবুঝি নেই।
তিনি আরো বলেন, আমরা আমাদের মধ্যে সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আবার এক হয়েছি। তা দেখে আওয়ামী লীগের মধ্যে জ্বলন তৈরি হয়েছে। তাই আজ তারা আমাদের শান্তিপূর্ণ এই অনুষ্ঠানে পুলিশ পাঠিয়েছে। তিনি প্রশ্ন তোলে বলেন, আমাদের এ অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কেন আওয়ামীলেগের জ্বলে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা কলিম উদ্দিন মিলন, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন, ডা. শাহরিয়ার হোসেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আজমল বখত সাদেক প্রমুখ