আসমা জান্নাত মনি:বাংলায় প্রতিষ্ঠানগুলোর নামকরণের দাবিতে জনরায় এবং গণস্বাক্ষর সংগ্রহের ভিন্নধর্মী কার্যক্রম চালাচ্ছে বানানভিত্তিক সামাজিক সংগঠন ‘বাশু।’ স্বাক্ষর করলেন ৫২’র ভাষা সংগ্রামী আহমদ রফিক।
‘ঠিক বানানের পদযাত্রা’ এবং ‘জনরায় সংগ্রহ’ দুইটি ভিন্নধর্মী আয়োজনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০১৮ পালন করল বানানভিত্তিক সামাজিক সংগঠন বাশু (বানান শুদ্ধকারী)।
বাশু’র এবারের দাবি ছিলো, “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে প্রতিষ্ঠানগুলোর বাংলাতে নামকরণ চাই”।
তারই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে গণস্বাক্ষর এবং জনরায় সংগ্রহ শুরু হয়। আগত দর্শনার্থীরা তাদের এই দাবিকে সাধুবাদ জানিয়ে “একমত” লিখে নিজেদের নাম, মন্তব্য, রক্তের গ্রুপ এবং স্বাক্ষর প্রদান করেন।
২১ ফেব্রুয়ারিতে শহিদ মিনারেই গণসাক্ষর প্রদান করেন কোলকাতা থেকে আগত রূপালী মিত্র, মিলি গোস্বামী, সুতিপা চক্রবর্তী। সহমত প্রকাশ করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এর প্রতিনিধি মোহাম্মদ সোলেমান, তরুণ লেখক জাহিদ হাসান রাতুল, টিম ডিএসই বর্ণ নিয়ে প্রতিনিধিরা, বিডি ক্লিনের সদস্য, ফেসবুক গ্রুপ এনাউন্স ইউর ক্রাশ এর এডমিন এবং সদস্য, চিত্রগ্রাহক শোভন রায়, পাওয়ার অফ ইউথ অর্গানাইজেশন (পিও) এর কলাকুশলী, স্টামফোর্ড সাহিত্য ফোরামের প্রতিনিধিসহ অনেকেই।
২২ ফেব্রুয়ারিতে স্বাক্ষর করেন ১৯৫২ সালের ভাষা সংগ্রামী আহমদ রফিক, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি মোহাম্মদ মাহবুবসহ আরো অনেকেই।
জনরায়ে আরো যুক্ত হয়েছেন সংগীত শিল্পী সভ্যতা, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি মশিউর মালেক, কেন্দ্রীয় কমিটির উত্তম কুমার দাস, রাশেদা হক কণিকা।
গণশিক্ষা সম্পাদক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ আনিসুল হক জুয়েল, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম ঠান্ডুসহ অন্যান্য।
বাশু’র প্রতিষ্ঠাতা ইসফাক আহমদ( জেনন জিহান) দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, “বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যা বাংলাকে আপন করে পাবার জন্য ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ করে বাংলাকে অর্জন করে কিন্তু এখনও দেশের নামটাই শুধু বাংলাযুক্ত বাংলাদেশ! বাকিসব পাশ্চাত্যে ভরপুর। আপনি অন্য যেকোনো দেশভ্রমণে গেলে দেখতে পাবেন তাদের ভাষাটাই আগে স্থান পায় পরে ইংরেজি এবং কিছু স্থানে বাংলাকেও পাওয়া যায়। অথচ আমাদের দেশে বড় বড় বাংলানামধারী প্রতিষ্ঠানগুলোতেও আগে ইংরেজি সাইনবোর্ড বা ব্যানারে নামকরণটাই চোখে ভাসে। অথচ বাংলাদেশে তো বাংলাকেই ১ম স্থানে রাখা উচিত ছিলো। ‘৩০ দিনে বাংলা’ শেখাতে না পারলেও বাংলা আগে দেখুন এই বিষয়টাকে তো সবার সামনে আনতে পারবো আমরা বাংলাদেশের নাগরিকগণ। বাংলাদেশের প্রতিটা প্রতিষ্ঠানের নামকরণ বাংলাতেই মানায়। তার সাথে ইংরেজিও নিচে থাকুক কারণ ইংরেজি আন্তর্জাতিক ভাষা এবং একটি মাধ্যম যা সব দেশের মানুষ জানে ও বোঝে।”
দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর রায় এবং স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হবে বলেও জানিয়েছেন বাশু’র বিভিন্ন অঞ্চলের প্রতিনিধিরা।
শুধু সাক্ষর সংগ্রহ নয় একই সাথে রক্তের গ্রুপ সংগ্রহে অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাশু’র প্রতিনিধিরা।
তাদের এই কার্যক্রম চলবে ৭ মার্চ ২০১৮ তারিখ পর্যন্ত।