বিয়ানীবাজারে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা) নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে কওমীপন্থি আলেম ও আল্লামা ফুলতলীর অনুসারীরা। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে দু’পক্ষের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা দমাতে হিমশিম খাচ্ছেন প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা। এ নিয়ে থানা পুলিশের কাছেও অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বিয়ানীবাজার উপজেলার চারখাই বাগবাড়ী এলাকায় আল-হারামাইন হাফিজিয়া মাদ্রাসায় বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। রাত ৯টার দিকে ওয়াজ মাহফিলের প্রধান অতিথি বিশিষ্ট মুফাসসীরে কোরআন এবং কওমীপন্থী আলেমদের অন্যতম মুফতি মুজিবুর রহমান বয়ান শুরু করেন। মুসলমানদের আমল কবুল হওয়ার উপায় শীর্ষক বয়ানের একপর্যায়ে মুফতি মুজিবুর রহমান ঈদে মিলাদুন্নবী নিয়ে আলোচনা শুরু করেন। তিনি তখন মিলাদুন্নবী পালনকারীদের ‘বিদআ’তি’ বলে আখ্যায়িত করেন। এ সময় প্রয়াত আল্লামা ফুলতলীর অনুসারীরা দলবদ্ধ হয়ে এ ধরণের বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবী তুললে দু’পক্ষে উত্তেজনা শুরু হয়। একপর্যায়ে মৃদু সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।
এ বিষয়ে মুফতি মুজিবুর রহমান জানান, ‘প্রায় ঘন্টাখানেক আমার বয়ানের পর আমি মিলাদুন্নবী পালনকারীদের বিদআ’তী বলেছি। ইসলামের কোথাও মিলাদুন্নবী পালনের কথা উল্লেখ নেই।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি বয়ানের শেষের দিকে মিলাদুন্নবী সমর্থনকারীদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেছি ১লাখ টাকা আমানত রেখে তারা আমার সাথে বাহাসে বসুক। পরে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আরো ১০লাখ টাকা করে আমানত রেখে ওই বিদআ’তীদের বাহাসে বসার চ্যালেঞ্জ করেন। পরদিন শুক্রবার সকাল ১০টায় তাদের থানায় আসার কথা থাকলেও বিদআ’তীরা আসেনি।’
অবশ্য আল্লামা ফুলতলী অনুসারী আনজুমানে আল্ ইসলাহ্ চারখাই শাখার সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমদ চৌধুরী জানান, ‘একজন মুসলমান হয়েও মুফতি মুজিব আমাদের মত মুসলমানকে কাফের বলে গালি দেয়। ঈদে মিলাদুন্নবী নিয়ে মুফতি মুজিবের ধারাবাহিক অপপ্রচারের ফলে সুন্নী মুসলমানরা কিছুটা বিরক্ত ছিলেন। তাই বৃহস্পতিবারের মাহফিলে এলাকার কিছু ছেলে তার ভূল এবং ব্ভ্রিম বয়ান থেকে সরে গিয়ে দ্বীনি বিষয়ে আলোচনার অনুরোধ করেন। তখন পরিকল্পিতভাবে মাহফিল আয়োজনকারীরা এক প্রতিবাদী ছেলের উপর হামলা চালায়। এ সময় কিছুটা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’
চারখাই ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ আলী জানান, একটি স্পর্ষকাতর বিষয় নিয়ে দু’পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানে আমরা বিব্রত। আমি বিষয়টি সামাজিক সমাধানের চেষ্টা করছি। কিন্তু কওমীপন্থী আলেমরা তাতে সাড়া দিচ্ছেনা। বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহজালাল মুন্সী বলেন, পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে। ওয়াজ মাহফিল আয়োজক কমিটির পক্ষে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
সুত্র: agamiprojonmo