হাদিসে জুমআর দিনের মর্যাদা বর্ণনায় বিশ্লেষণধর্মী একটি বর্ণনা করেছেন হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, (কুরআনে) আল-ইয়ামুল মাওউদ বা প্রতিশ্রুতি দিবস হলো কিয়ামাতের দিন। কারণ কিয়ামাত সংঘটিত হওয়ার প্রতিশ্রুতি আল্লাহ তাআলা কুরআনে ঘোষণা করেছেন। মাশহুদ অর্থ হলো যাকে হাজির করা হয়। এ দিবসে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা পালনে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ আরাফাতের ময়দানে হাজির হয়। আর শাহেদ হলো যে হাজির হয়। অর্থাৎ জুমআর দিন প্রতি সাত দিন অন্তর অন্তর একবার মানুষের নিকট উপস্থিত হয়।
হাদিসে এসেছে, এমন কোনো দিনে সূর্য উদয়াস্ত হয় না, যে দিন জুমআর দিন হতে উত্তম। এ দিন এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে; যদি কোনো মুমিন বান্দা তা পেয়ে যায় এবং আল্লাহর নিকট কোনো কল্যাণের প্রার্থনা করে, আল্লাহ তাআলা তা মঞ্জুর করেন।
আর কোনো বান্দা যদি অকল্যাণ থেকে রেহাই চায়, তবে আল্লাহ তাআলা তাকে রেহাই দান করেন। (মুসনাদে আহমদ)
এতো গেলো দুনিয়ার জিন্দেগিতে জমুআর দিনের ফজিলত। যদি কোনো ব্যক্তি জুমআর দিনে মৃত্যুবরণ করে, তার ব্যাপারে হাদিসে এসেছে-
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে কোনো মুসলমান জুমআর দিনে কিংবা জুমআর রাতে মৃত্যুবরণ করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তাকে কবরের ফিতনা হতে নিরাপদ রাখেন। (মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি, বাইহাকি, মিশকাত)
এ হাদিসটির ব্যাখ্যায় এসেছে যে, ফিতনা দ্বারা কবরের মুনকার-নাকিরের জিজ্ঞাসাবাদ অথবা কবরের আজাবকে বুঝানো হয়েছে। হজরত আবু নুআ’ইম তার হিলয়া’ গ্রন্থে হজরত জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন, যাতে কবরের আজাবের কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিশেষে…
যেহেতু জুমআ প্রতি সাতদিনে একবার করে মুসলিম উম্মাহর নিকট উপস্থিত হয়। সুতরাং সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন জুমআর দিনকে যথাযথ মর্যাদার সাথে ইবাদাত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করা। যারা জুমআর দিনের হক আদায় করেন; ইবাদাত-বন্দেগি তথা দোয়া কবুলের সময় দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ কামনা চেষ্টা করেন। আশা করা যায়, আল্লাহ তাআলা সে সকল বান্দাকে দুনিয়া ও পরকালের কামিয়াবী দান করবেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমআর দিনের হক আদায় করার এবং ইবাদাত করার তাওফিক দান করুন। জুমআর দিন ঈমানি মৃত্যু নসিব করুন। আমিন।