কোম্পানীগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা শামীম আহমদকে বিতর্কিত করার জন্য প্রশাসনকে দুষলেন স্থানীয়রা। তারা বলেছেন, ‘শামীম আহমদ আগামী নির্বাচনে উপজেলা নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঠিক ওই মূহুর্তে পাথরখেকো দুষ্টচক্রের ইন্ধনে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলার মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে শামীমকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা।’ গতকাল মঙ্গলবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এমন দাবি করেন কোম্পানীগঞ্জ শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম। সাংবাদিক সম্মেলনে তার সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘কোম্পানীগঞ্জের পাথর গোটা দেশের উন্নয়ন কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন যান্ত্রিক পদ্ধতিতে উত্তোলিত পাথর থেকে রয়্যালিটি আদায় করছে। যদি পাথর উত্তোলন অবৈধ হয়, তাহলে প্রশাসন কেন রয়্যালিটি আদায় করছে।’ এতে কৌশলে প্রশাসনই বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলনে ‘সহায়তা করছে’ বলে দাবি করেন তিনি। নুরুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে রাজনীতির দিক থেকে কোম্পানীঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা হাজী শামীম আহমদ বড় ফ্যক্টর। তার পরিবারে দুইজন জনপ্রতিনিধি। তার পিতা আলহাজ¦ আব্দুল বাছির কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান। আর বড় ভাই জয়নাল আবেদীন সিলেট জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান। সামনে জাতীয় নির্বাচনসহ উপজেলা নির্বাচনও। উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে শামীম আহমদ প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তার নামে কোথাও কোনো বোমা মেশিন কিংবা কোনো ধরনের পাথর লুটপাট হচ্ছে না। এটা কোম্পানীগঞ্জের অনেকেই জানেন। এরপরও হাজী শামীম আহমদ ও তার পরিবারের সদস্যদে একের পর এক মামলা দিয়ে বিপর্যস্ত করা হচ্ছে। যার উদ্দেশ্যে হচ্ছে আগামী উপজেলা নির্বাচনে শামীমকে আটকানো। শামীম আহমদের বড় ভাই বিলাল আহমদের উপর যখন মামলা হয় তার আগে তিনি প্রায় ১০ দিন সিলেটের আল হারমাইন হাসপাতালে হার্টস্ট্রোক করে ভর্তি হয়েছিলেন। এখন তিনি ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।’ শামীম আহমদসহ অন্যদের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের ‘সাজানো মামলার পেছনে বিএনপি ও জামায়াতের পাথরখেকোদের হাত রয়েছে’ বলে দাবি করেন শ্রমিকলীগ নেতা নুরুল ইসলাম।
কোম্পানীগঞ্জে ওই চক্র মামলার পর কৌশলে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে দাবি করে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘যারা পাথর লুটপাট করছে তারাই এখন কোম্পানীগঞ্জে শামীমের প্রতিপক্ষ। তারা পাথর লুটপাট করে সবকিছুইতেই জড়িয়ে ফেলে শামীমের নাম। আর এটি অত্যন্ত সুকৌশলে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য করা হচ্ছে। যারা এ কাজ করছে প্রশাসনের সঙ্গে রয়েছে তাদের আর্থিক সর্ম্পক। লুটপাটে তারাই জড়িত।’ শামীম আহমদের বিরুদ্ধে কতিপয় গণমাধ্যম ‘ব্যক্তি আক্রোশে’ সংবাদ প্রচার করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ‘মিথ্যা অপপ্রচার থেকে কোম্পানীগঞ্জবাসীকে রক্ষার জন্য’ সাংবাদিক সম্মেলনে সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি ও জেলা শ্রমিকলীগের সহ-সভাপতি আলহাজ¦ আব্দুল ওয়াদুদ, উত্তর রনিখাই আওয়ামী লীগের সভাপতি কালা মিয়া, সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ ধন সিংহ, পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুল্লুক হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান, ইছাকল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আশিক মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আসাব আলী, উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আবদুর রহমান, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম, পশ্চিম ইসলামপুর ইউপি শ্রমিকলীগের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম চাঁন মিয়া, উপজেলা যুবলীগের সদস্য সোহেল আহমদ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা নজমুল হক হেলাল, যুবলীগ নেতা সফাত উল্লা, আনোয়ার হোসেন, আবদুস সহিদ, হানিফ আলী, শ্রমিক নেতা তেরা মিয়া, বিশ্বজিৎ প্রমুখ।