গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে তাঁকে উদ্ধারের পর চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সোহাগ হাওলাদার বরিশালের বাবুগঞ্জ এলাকার বাদল হাওলাদারের ছেলে ও বাল্কহেডটির শ্রমিক।গত বুধবার সকাল ১১টার দিকে বন্দর উপজেলার ২ নম্বর ঢাকেশ্বরী সোনাচড়া এলাকায় বিআইডাব্লিউটিসির ডুবন্ত জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লেগে বালুবাহী বাল্কহেড এমভি মুছাপুর ডুবে যায়। তখন বাল্কহেডটিতে ছয়জন শ্রমিক ছিলেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও নিখোঁজ ছিলেন সোহাগ হাওলাদার। পরে বন্দর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল তল্লাশি চালালেও সোহাগকে উদ্ধার করতে পারেনি।
নারায়ণগঞ্জ নৌপুলিশ থানার ওসি আবু তাহের খান বলেন, (সোহাগকে) দুই দফা খোঁজাখুঁজির পর যখন পাওয়া যাচ্ছিল না তখন সবাই আশা ছেড়ে দেয় যে সে আর জীবিত নেই। পরে বৃহস্পতিবার বিকেলে লাশ পাওয়ার জন্য খোঁজা হয়। তখন সোহাগকে উদ্ধার করা হয়।
৩০ ফুট পানির নিচে ২৯ ঘণ্টা সে জীবিত ছিল। উদ্ধারকারী ডুবুরি মো. আব্দুল জাহাঙ্গীর শিকদার বলেন, বাল্কহেডের ইঞ্জিন রুমে আটকে ছিল সোহাগ। অর্ধেকটা পানিতে তলিয়ে গেলেও বাকি অর্ধেক জায়গায় অক্সিজেন ছিল। এ জন্য সে বেঁচে ছিল।সোহাগের ভাই সুমন হাওলাদার বলেন, ভাই মারা গেছে শোনে মা কান্না করতে করতে অসুস্থ হয়ে গেছেন। মাকে বাড়িতে রেখে ভাইয়ের লাশ নিতে এসেছিলাম। কিন্তু আল্লাহ আমার ভাইকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। সোহাগের চাচা আলমগীর হোসেন বলেন, বুধবার ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা চেষ্টা করে উদ্ধার করতে না পেরে চলে যান। বৃহস্পতিবার সকালে লাশ উদ্ধারের জন্য স্থানীয় ডুবুরিরা তল্লাশি করে ব্যর্থ হন। পরে বিকেলে আরেকজন ডুবুরি আধাঘণ্টা চেষ্টার পর জানান, ভেতরে মানুষ আছে। সে জীবিত আছে। পরে আরো আধাঘণ্টা চেষ্টা করে বাল্কহেডের দরজা ভেঙে সোহাগকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এরপর হাসপাতালে নিয়ে আসি।
নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাহমিনা নাজনীন বলেন, ‘সোহাগ হাওলাদার সম্পূর্ণ সুস্থ আছে। যেহেতু অনেক সময় পানির নিচে ছিল তাই আগামী দুই থেকে তিন দিন একটা ঝুঁকি আছে। সে জন্য আমরা তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠাব। কারণ এর মধ্যে তাঁর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে যেকোনো ঘটনা ঘটতে পারে।