মহান রাব্বুল আলামীন যখন মানবজাতিকে সৃষ্টি করেন তখন তিনি তাদেরকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন অর্থাৎ “আশরাফুল মাখলুকাত” বলেছেন। মানুষ হয়ে জন্ম নিলেই কি মানুষ হওয়া যায় চাই মানবিক মূল্যবোধ এবং মনুষ্যত্ব। তারা এটা মনে করেন যে “আমরা তো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি আমদের আবার বাধা কে দিবে যেকোনো ধরনের কাজ অবৈধ এবং দুর্নীতি দিয়ে করবো, আমরা আমাদের ক্ষমতা এবং টাকা দিয়ে সত্যকে মিথ্যা এবং মিথ্যাকে সত্য বানাতে পারবো এসব কাজ করতে গেলে যারা আমাদের বাধা দিবে তারা তাদের মৃত্যু ডেকে আনবে” মানুষ যখন মানবিক মূল্যবোধ হারিয়ে মনুষ্যত্ববোধ হারিয়ে পশুর রূপ নেয় তখন এরকম কথা বলে। পত্রিকায় খবরাদি পড়াও যেন একধরনের কষ্টকর বিষয় হয়ে উঠেছে। পত্রিকা হাতে নেয়া মাত্রই ধর্ষণ এবং শিশু নির্যাতনের খবর। একটি ছয় বছরের শিশুর লাশ পাওয়া যায়, তার শরীরে কিডনী, ফুসফুস, হৃৎপিন্ড এমনকি যৌনাঙ্গ পর্যন্তও নিখোঁজ থাকে ফরেনসিক রিপোর্ট আসে অনেকদিন যাবৎ শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে, ঠিক পরেরদিন আরেকটি ১২ বছরের শিশুর লাশ উদ্ধার হয়, তার শরীরে রক্তনালী, শ্বাসনালী নেই ফরেনসিক রিপোর্ট আসে শিশুটি ধর্ষিত যখন এসব খবর পত্রিকায় দেখি তখন কষ্টে বুক ফেঁটে যায়। যখন নিউজটি পড়ে দেখি যে একটি ৩ বছরের শিশুও ধর্ষকদের হাত থেকে রেহাই পায় না তখন মানুষ নিজেকে অনেক ধৈর্য্যশীল মনে করে। আপনি তখন মনে করবেন যে আইন আছে প্রশাসন আছে আমরা সুষ্ঠু বিচার পাবো। তখনই এই ধৈর্য্যশীলতা হার মেনে যাবে টাকা এবং ক্ষমতার কাছে। এমনকি আইন এবং প্রশাসনও সেই টাকা এবং ক্ষমতার কাছে হার মেনে নিবে। কারণ যে ধর্ষণ করেছে দেখবেন হয়তো সে কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তি কিংবা মন্ত্রী কিংবা এমপি’দের বেক সাপোর্ট পাচ্ছে। এই বেক সাপোর্টের কারণেই সে এতবড় জঘণ্য কাজে লিপ্ত হয়, তার ভিতর একটুও ভয়ভীতি কাজ করে না। এই বেক সাপোর্ট দিয়েই সে আইন এবং প্রশাসনকে নিজের পকেটে নিয়ে ঘুড়ে বেড়ায়। বর্তমান বাংলাদেশে ধর্ষণ ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে গেছে। মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীরাও তো ধর্ষণ করেছে বেক দিয়েছে তাদের দেশপ্রধান তাহলে আমাদের মন্ত্রী, এমপি এবং মিয়ানমারের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে পার্থক্য কী দাড়ালো। পার্থক্যটা এই যে তারা মনে করে তারা তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে যেকোনো ধরনের দুর্নীতিতে লিপ্ত হতে পারে। আর এই ক্ষমতার ছায়তলে ধাবিত হয় পুলিশ প্রশাসন শুরু করে সর্বোচ্চ প্রশাসিক কর্মকর্তাবৃন্দ। এমপি মন্ত্রীরা সবসময় বলেন ”আইন নিজের হাতে নিবেন না”। আরে আমরা কিভাবে আইন নিজের হাতে নিবো আপনারা তো আগে থেকেই আইন হাতে নিয়ে বসে আছেন। আমরা মন্ত্রী, এমপি, প্রভাবশালী ব্যক্তি আমাদের আবার কিসের ভয়। এমপি মন্ত্রীত্ব বড় নয় কিয়ামত বড় বাংলাদেশের আইন এবং প্রশাসন বাদই দিলাম অন্তত আল্লাহর ভয়তো অন্তরে থাকা উচিত। এদেশে সত্য এবং ন্যায় কলুষিত হয়ে গেছে। সুষ্ঠু গণতন্ত্রের অভাব এর প্রকৃত উদাহরণ। ধর্ষণ নামক এই ভাইরালটি দূর করতে হলে সুষ্ঠু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই।
মো.নাঈমুল ইসলাম
ছাত্র ব্যক্তিত্ব লেখক, কলামিস্ট ও সংগঠক।