স্টাফ রিপোর্টার: সিলেট জেলাধীন বিশ্বনাথ উপজেলার শেষ সীমান্তবর্তী কামালবাজার এলাকার বিভিন্ন গ্রামের মোবাইল অপারেটর গুলোর দুর্বল নেটওয়ার্কের কারণে গ্রাহক ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন।
বিশেষ করে কামাল বাজার এলাকার লালটেক, হইধর পুর, হায়াতর গাঁও, পেশকার গাঁও সহ অন্যান্য কামাল বাজার অনেক গ্রামের গ্রাহক দুর্বল নেটওয়ার্কের কারণে কথা বলা সহ ইন্টারনেট ব্যবহারে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে প্রযুক্তি এখন মানুষের নিত্যসঙ্গী কিন্তু এসব এলাকার মোবাইল, ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করা দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। সর্বাধিক গ্রাহক দাবীদার জনপ্রিয় মোবাইল কোম্পানী গ্রামীণ ফোন, বাংলালিংক, এয়ারটেল, রবি ফোনসহ দেশের ছয়টি মোবাইল অপারেটরের মধ্যে কোনটিরই শক্তিশালী নেটওর্য়াক অধিকাংশ এলাকায় নেই।
বিশেষ করে কামালবাজার এলাকার লালটেক গ্রামের নেটওয়ার্ক নেই বললেই চলে। শুধু বাজারে মধ্যে নেটওয়ার্ক ভাল থাকে।
লালটেক গ্রামের প্রায় পাচ হাজার গ্রাহক মোবাইল নেটওয়ার্ক খুবই দুর্বল। মোবাইল অপারেটর গুলো গ্রাহকদের সুবিধার্থে থ্রী জি সেবা চালু করলেও স্বাভাবিক নেটওয়ার্কের সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন এ অঞ্চলের মোবাইল গ্রাহকরা। এছাড়াও দুর্বল নেটওয়ার্কের কারণে ইউনিয়ন তথ্য সেবাকেন্দ্রগুলো হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। কারণ তারা কাঙ্খিত গ্রাহক সেবা দিতে পারছেন না।
মোবাইল কোম্পানী গুলো উন্নত সেবা দেয়ার মানসে নানা প্রতিশ্র“তি ও প্রচার মাধ্যমে চটকদার বিজ্ঞাপন প্রচার করে গ্রাহকদের সাথে রীতিমত প্রতারণা করছে বলে গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন। প্রায় দ্বিগুণ কল চার্জ আদায় করছে, এরপরও গ্রাহকদের এত ভোগান্তি তা মেনে নেয়া যায়না। কামাল বাজার এলাকার সিমান্ত লালটেক, তালিবপুর, ধরগাও সহ অর্ধেকেরও বেশী এলাকা এখনো শক্তিশালী নেটওয়ার্কের আওতার বাহিরে রয়েছে সব গুলু অপারেটর।
আলাপকালে লালটেক এলাকার বাসিন্দা মুহাম্মদ আলাউদ্দিন পাশা বলেন, দুর্বল নেটেওয়ার্কের কারণে মোবাইলে ভাল করে কথা বলতে পারিনা আর ইন্টারনেট ব্যবহার করার কথাতো কল্পনাই করা যায়না।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগি গ্রাহকরা নিকটস্থ কাস্টমার কেয়ার গ্রাহক সেবা সার্ভিসের নাম্বারে বার-বার ফোন করে অভিযোগ দেয়ার পরও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। স্বাচ্ছন্দে কথা বলতে না পারায় গ্রাহকদের আর্থিক লোকসানও গুনতে হচ্ছে। বিশেষ করে এই এলাকায় তুলনামুলক ভাবে গ্রামীন ফোন, বাংলালিংক, এয়ারটেল, রবি ফোনের গ্রাহক সংখ্যাই বেশী কিন্তু দুর্বল নেটের কারণে গ্রাহকরা অতি মাত্রায় ভোগান্তি পোহাচ্ছন। আবার অনেক গ্রাহক বাধ্য হয়ে মোবাইল নিয়ে ঘরের বাইরে গিয়ে ফোনে প্রয়োজনীয় কথা ও ইন্টারনেট ব্যাবহার করতে দেখা যায়।
এ ব্যাপারে এলাকার সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীসহ প্রধানন্ত্রীর নিকট লিখিত অভিযোগ দেয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি এলাকায় গ্রামীণ, বাংলালিংক, এয়ারটেল, রবি মোবাইল কোম্পানী থ্রী জি সেবা করেছে। তাছাড়া অন্যান্য মোবাইল অপারেটর গুলোর নেটওয়ার্ক নাম মাত্র থাকলেও কামাল বাজার বাজার থেকে থেকে প্রায় দেড় থেকে দুই কিলোমিটার দুরে অবস্থানকারী মোবাইল গ্রাহকরা তাদের মোবাইল ফোনে একটানা কথা বলতে পারছেন না বলে গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন। আউট গোয়িং কিংবা ইনকামিং কলের সময় বার-বার সংযোগ বিচ্ছন্ন হয়ে লাইন কেটে যাচ্ছ। দেশের বাহির থেকে প্রবাসীরা ফোন করলে দুর্বল নেটওর্য়াকের কারনে স্পষ্ট ভাবে কথা বুঝা যায়না। এতে করে বিদেশে অস্থানরত প্রবাসীরা খুই বিব্রতবোধ করছেন। মোবাইল ফোনে কথার বলার সময় ঘর থেকে বের হয়ে নেটওয়ার্কের কভারেজ নিশ্চিত হয়ে ফোনে কথা বলতে হচ্ছে। রাতের বেলায় ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ থাকাবস্থায় একেবারেই কথা বলা সম্ভব হচ্ছেনা। নেটওয়ার্ক সুবিধা পাওয়ার জন্য একেকজন গ্রাহক বিভিন্ন ফোন কোম্পানীর একাধিক সীম মোবাইলে ব্যবহার করেও কাঙ্কিত নেটওয়ার্ক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের কথা বিবেচনা করে যেসব এলাকায় নেটওয়ার্ক দুর্বল সেসব এলাকায় শক্তিশালী স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট অপারেটরগুলোর প্রতি সুদৃষ্টি কামনা করছেন এলাকাবাসী।