সিলেট ৭১ ডেস্ক:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি প্রশ্ন উত্থাপন করে বলেন, বিমান খালি যায় মানুষ টিকিট পায় না কেন? বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেননকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশে বিমানের স্টেশন ম্যানেজারদের চাপ দিন। বিমানের টিকিট সংগ্রহ করতে যাত্রীরা গেলে তারা বলেন, সিট খালি নেই। আবার দেখা যায়, ওই ফ্লাইট সিট খালি নিয়ে উড়ে যাচ্ছে। তাই ওই স্টেশন ম্যানেজারদের ওপর নজর রাখুন। তারা সব চোর, তাদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনুন। তাদের অপকর্মের খোঁজ-খবর নিন। এরা বিদেশি এয়ারলাইন্সের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশ বিমান ও দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করছে।
মন্ত্রিসভার নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠকের অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ তথ্য জানিয়েছে বৈঠক সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র। এছাড়া বৈঠকে জাতিসংঘ পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তি স্বাক্ষরের একটি প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এম শফিউল আলম সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মাসে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সময় বাংলাদেশের পক্ষে পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন। জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। তিনি জানান, বাংলাদেশসহ জাতিসংঘের ১২২ সদস্য রাষ্ট্র চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করতে সম্মত হয়েছে।
সূত্র জানায়, বৈঠকের শেষ পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেননকে উদ্দেশ করে বলেন, বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটগুলোতে অনেক সিট খালি থাকে অথচ মানুষ টিকিট পায় না। তারা অভিযোগ করেছেন, বিমানের বিভিন্ন সেলস অফিসে খোঁজ নিলে যাত্রীদের বলা হয় টিকিট নেই। একইভাবে বিমান অনুমোদিত ট্রাভেল এজেন্সিগুলোতেও টিকিট পাওয়া যায় না। অথচ দেখা গেছে, পরে সেই বিমানের অনেক সিটই খালি থেকেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমন অভিযোগ আগেও শুনেছি এখনও শুনছি। এভাবে তো চলতে পারে না। শেখ হাসিনা বলেন, আমার কাছে তথ্য আছে এবং খোঁজ নিয়ে জেনেছি, বিমানের বিদেশের স্টেশনগুলোতে ম্যানেজার পর্যায়ের কর্মকর্তারাই টিকিট সংগ্রহ করতে আসা যাত্রীদের নিরুৎসাহিত করেন। তারা বিদেশি এয়ারলাইন্স থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশ বিমানের যাত্রীদের টিকিট সংগ্রহে পরোক্ষভাবে বাধা দিয়ে আসছেন। এতে বিমানের আসন খালি থাকে। এ কারণে বাংলাদেশ বিমান লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
এদিকে মন্ত্রিসভার বৈঠকে জাতিসংঘে পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাব অনুমোদন ছাড়াও বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে বিমান চলাচলের একটি চুক্তির খসড়া অনুমোদন হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এটির মাধ্যমে ১৯৮৮ সালের মার্চে দু’দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চুক্তিটি নবায়ন করা হচ্ছে। এ চুক্তির অধীন দেশ দুটির মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিমান চলাচল করতে পারবে। চুক্তিটি বাংলা ও আরবি ভাষায় হবে। চুক্তির খসড়ায় বলা হয়েছে, নিয়ম মেনে চলতে ব্যর্থ হলে ফ্লাইট চলাচল বাতিল করতে দেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে ক্ষমতা দেয়া হবে। এছাড়া মন্ত্রিসভায় উন্নয়ন টেকসই লক্ষ্য অজর্নে বাংলাদেশের প্রস্তুতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়। সভার শুরুতে প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী আবদুল জব্বারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়।