সিলেটের গোয়াইনঘাটে যৌতুকের বলি হয়েছেন এক সন্তানের জননী গৃহবধূ সেলিনা বেগম। যৌতুক না পেয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার (৫সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় থানার সুলতানপুর গ্রামে এ হত্যাকান্ড ঘটে। এ ঘটনায় সেলিনার বড়ভাই মো. আব্দুল হামিদ বাদি হয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার আদালতে হত্যামামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামীরা হচ্ছেনÑসিলেটের গোয়াইনঘাট থানার সুলতানপুর গ্রামের মুহিবুর রহমানের পুত্র ও সেলিনার স্বামী আল আমিন, সেলিনার শশুর মুহিবুর রহমান ও শাশুড়ী খয়রুন নেছা, সেলিনার ননদ সামিয়া বেগম। অন্য আসামীরা হচ্ছে একই থানার হাতিরখালের হারিছ উদ্দিনের স্ত্রী বেদেনা বেগম, রাজনগরের বাহার উদ্দিনের স্ত্রী রুবেনা বেগম ও রুবেনার স্বামী বাহার উদ্দিন।
মামলা সূত্র জানায়, সিলেটের গোয়াইনঘাট থানার পান্তমাই গ্রামের মৃত আব্দুল মালিকের মেয়ে সেলিনা বেগম (২২)। গত ২০১৫ সালের ৪মার্চ একই থানার সুলতানপুর গ্রামের মুহিবুর রহমানের পুত্র আল-আমিনের সাথে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাঁর কোল জুড়ে আসে এক পুত্রসন্তান, যার বর্তমান বয়স ২বছর। বিয়ের পর থেকে স্বামী ও শশুর পরিবার সেলিনার কাছে ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিল। মাঝে মধ্যে পিত্রালয় হতে কিছু টাকাও এনে দিয়েছিল সেলিনা। কিন্তু স্বামী ও শশুর পক্ষ নাছোড় বান্দা । তারা ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবিতে সেলিনাকে প্রায়ই মারপিট করতো। একপর্যায়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকালে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন যৌতুক দাবিতে গৃহবধূ সেলিনাকে গলাটিপে হত্যা করেন। হত্যার পর ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্ঠা করেন এবং পুলিশকে ম্যানেজ করে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা নম্বর ১৯/১৭ রেকর্ড করিয়ে নেন তারা। কিন্তু সেলিনার পিতৃ পরিবার তা মেনে নিতে না পারায় তারা থানায় গিয়ে হত্যা মামলা করতে চাইলে মামলা নিতে অপারগতা প্রকাশ করে থানাপুলিশ। এর ফলে বাধ্য হয়ে সেলিনার ভাই আব্দুল হামিদ বৃহস্পতিবার (৭সেপ্টেম্বর) সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ১ম আদালতে ৮জনকে আসামি করে একটি নালিশা হত্যা মামলা (নং-১২৬/১৭) দায়ের করেন। গ্রহণযোগ্যতা শুনানী শেষে আদালত নালিশা মামলাটি নিয়মিত হত্যামামলায় ‘এফআইআর’ করার নির্দেশ দিলে গত ৯ সেপ্টেম্বর মামলাটি রুজু হয়।