কক্সবাজারের কুতুপালং ক্যাম্পের পাশের রাস্তাজুড়ে জড়ো হয়েছে শত শত রোহিঙ্গা শরণার্থী। দলে দলে ভাগ হয়ে বসে থাকা এসব শরণার্থীর বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ২০ জনের মতো যে শরণার্থী দলটির সঙ্গে কোনও পুরুষ নেই। প্রায় প্রত্যেক নারীর কোলেই বাচ্চা।
এদের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেল, পরিবারের পুরুষ সদস্যরা তাদের সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে আবার মিয়ানমারে ফিরে গেছে। শিশু কোলে এক রোহিঙ্গা তরুণীর সঙ্গে কথা হচ্ছিল। গ্রামের মানুষ যখন দল বেঁধে পালাচ্ছিল, তখন তাদের সঙ্গে চলে আসেন এই তরুণী। এরপর থেকে স্বামীর সঙ্গে তার আর কোনও যোগাযোগ নেই।
নুরাঙ্কিস নামের এক নারী চারটি ছোট বাচ্চাকে নিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে এসেছেন। পথে তাদের সঙ্গী একজনের বাচ্চা পানিতে ডুবে মারা গেছে।
নুরাঙ্কিসকে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছে দিতে এসেছিলেন তার স্বামী।
পথে তার স্বামীর ওপর হামলা হয়। তার পায়ে দা দিয়ে কোপানো হয়। নুরাঙ্কিস পালিয়ে এসেছেন। কিন্তু স্বামীর কোনও খোঁজ পাননি এখনও। শরণার্থীদের দলগুলোতে যে পুরুষের সংখ্যা এত কম, তার একটি ভিন্ন কারণও রয়েছে।মিয়ানমার সরকারের ভাষ্যমতে, রাখাইন রাজ্যে সাম্প্রতিক সহিংসতার সূত্রপাত হয়েছিল দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর একটি রোহিঙ্গা জঙ্গিগোষ্ঠীর হামলার মধ্য দিয়ে। এই রোহিঙ্গা নারীদের অনেকের কথায়ও বোঝা যাচ্ছে অনেক রোহিঙ্গা পুরুষ এখন এ ধরনের বিভিন্ন দলে যোগ দিয়ে সেনাদের সঙ্গে লড়াই করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
একজন রোহিঙ্গা নারী জানালেন, তার ১৪ বছরের ছেলেকে তিনি বিদায় জানিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, “আমার ছেলেকে আল্লাহর রাস্তায় দিয়ে এসেছি। পাড়ার প্রত্যেকটি ঘর থেকে ছেলেরা গেছে। আমার ছেলেকেও দিয়েছি। ” পরিবারের পুরুষ সদস্যদের সঙ্গে কবে দেখা হবে এসব নারী এবং শিশুদের কিংবা আদৌ দেখা হবে কিনা- সেটিও অনিশ্চিত।