সিরাজগঞ্জের তাড়াশে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে চলন্ত বাসে এক তরুণী গণধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনেরা। তরুণীর কর্মস্থল ময়মনসিংহ জেলা সদরে যাবার পথে টাঙ্গাইলের মধুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
গণধর্ষনের পর হত্যাকান্ডের ৩দিন পর স্বজনরা নিহতের ছবি দেখে লাশ শনাক্ত করেন। পরে পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বাসের ৫ জন স্টাফকে গ্রেপ্তার করেছে। এদিকে, প্রথমে পরিচয় না পেয়ে ঘটনার একদিন পর গত শনিবার (২৬শে আগস্ট) নিহতের লাশ অজ্ঞাতনামা হিসেবে দাফন করেছে মধুপুর থানা পুলিশ।
নিহতের স্বজনেরা ও ভাই হাফিজুর রহমান জানান, রূপা খাতুন নামে ওই তরুণী অনার্স শেষ করে ঢাকার আইডিয়াল ল’ কলেজে এলএলবি বিষয়ে অধ্যায়নরত ছিল। পাশাপাশি সে ময়মনসিংহ জেলা সদরে অবস্থিত ইউনিলিভার বাংলাদেশের প্রোমশনাল ডিভিশনে কমর্রত ছিলেন এবং সেখানেই থাকতেন। গত শুক্রবার শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নিতে রূপা বগুড়ায় যায়। পরীক্ষা শেষে বগুড়া থেকে ময়মনসিংহগামী ছোয়া পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব-১৪-৩৯৬৩) নামক একটি বাসে তার এক সহকর্মীর সাথে উঠে।
সহকর্মীর কর্মস্থল ঢাকায় হওয়ায় সে এলেঙ্গাতে নেমে যায় এবং রূপা ওই বাসেই ময়মনসিংহ যাচ্ছিল। কিন্তু সঠিক সময়ে সে ময়মনসিংহ না পৌছালে তার সহকর্মীরা মোবাইলে ফোন যোগাযোগ করলে এক যুবক ফোনটি রিসিভ করে এবং রূপা ভুল করে ফোনটি ফেলে রেখে গেছে জানিয়ে সংযোগ কেটে দেয়। এরপর থেকে ফোনটি আর খোলা পাওয়া যায়নি। রূপা শনিবার সকালেও কর্মস্থলে না পৌঁছালে ইউনিলিভার বাংলাদেশের অফিস থেকে স্বজনদের বিষয়টি অবগত করা হয়। পরবর্তীতে পরিবার থেকে রূপার নিখোঁজের বিষয়ে ময়মনসিংহ কোতয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, সোমবার রাতে স্বজনেরা থানায় এসে ছবি দেখে খুন হওয়া তরুণীর পরিচয় শনাক্ত এবং মামলা দায়ের করেন। রাতেই অভিযান চালিয়ে ময়মনসিংহ থেকে ছোয়া পরিবহন বাসের চালক, সুপারভাইজার, সহকারীসহ ৫জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সেই সময় ওই তরুনীর ব্যবহৃত মোবাইল উদ্ধার এবং বাসটি জব্দ করা হয়েছে। তারা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে এবং আদালতে জবানবন্দি দিতে রাজী হয়েছে।
শুক্রবার (২৫শে আগস্ট) রাত ১১ টার দিকে টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ আঞ্চলিক সড়কের মধুপুর উপজেলার পঁচিশ মাইল এলাকার বনাঞ্চলের রাস্তার পাশে ওই তরুনী রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা থানায় সংবাদ দেয়। ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধারের পর পরিচয় না পাওয়ায় অজ্ঞাতনামা আসামী দিয়ে মামলা দায়ের করে ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার বিকেলে বেওয়ারিশ হিসাবে লাশটি টাঙ্গাইলের কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করে পুলিশ।